এসইউসি ও বিএসপি।
হয়তো ব্যাঙের আধুলি। কিন্তু ভোট যদি দড়ি টানাটানির পর্যায়ে যায়, তবে তাতেও টান পড়ে বইকি।
প্রতি ভোটেই বড় দলগুলির পাশে ছোট দলের প্রার্থীরা যেমন থাকেন, তেমন থাকেন নির্দলেরাও। এক কথায় যাঁদের বলা হয় ‘অন্যান্য’। প্রদত্ত ভোটের খানিকটা তাঁরা শুষে নেন। তা কম বলে এমনিতে কারও গায়ে লাগে না, কিন্তু লড়াই দু’চার হাজার ভোটের ব্যবধানে নেমে এলে তখনও সে সব নিয়েও চুলচেরা হিসেব হবে।
করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে এ বার ‘অন্যান্য’ মাত্র এক জন। এসইউসি বা বিএসপি-র মতো যে দলগুলি সাধারণত প্রার্থী দেয়, তারা দেয়নি। ফলে ‘অন্যান্য’ যে ভোট টানত, তা এ বার কার ঝুলিতে যাবে, সেই প্রশ্নও উঠছে।
২০১১ সালের নির্বাচনে করিমপুর কেন্দ্রে প্রার্থী ছিলেন নয় জন, ২০১৬ সালে ১০। ২০১৪ ও ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে (করিমপুর এই কেন্দ্রের মধ্যেই পড়ে) প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ১২। সেখানে এই উপ-নির্বাচনে প্রার্থী মোটে চার জন। তৃণমূলের বিমলেন্দু সিংহ রায়, বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী গোলাম রাব্বি, বিজেপির জয়প্রকাশ মজুমদার তো আছেনই। তেহট্ট মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক সুবীর সরকার জানান, ‘ভারতীয় ন্যায় অধিকার রক্ষা পার্টি’ নামে একটি নথিভুক্ত রাজনৈতিক দলের তরফে দাঁড়িয়েছেন দোলা সাহা রায়।
আগের নির্বাচনগুলিতে ‘অন্যান্য’ প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোটের যোগফল ছিল প্রায় দশ হাজার। ২০১১ সালের নির্বাচনে সিপিএম, কংগ্রেস-তৃণমূল জোট ও বিজেপি ছাড়াও ছ’জন প্রার্থী ছিলেন। সিপিএমের সমরেন্দ্রনাথ ঘোষ ৫০৮৫ ভোটে তৃণমূলের রমেন্দ্রনাথ সরকারকে হারান। অথচ শুধু এসইউসি এবং বিএসপি-র মিলিত ভোট ছিল প্রায় পাঁচ হাজার। সব মিলিয়ে ‘অন্যান্য’ পেয়েছিল প্রায় দশ হাজার ভোট।
২০১৬ সালে তৃণমূল, সিপিএম এবং বিজেপির প্রার্থী ছাড়াও ছ’জন দাঁড়িয়েছিলেন। তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র ১৫৯৯৮ ভোটে সমরেন্দ্রনাথ ঘোষকে পরাজিত করেন। সে বার এসইউসি এবং বিএসপি-র মিলিত ভোটে কমে হয়েছিল প্রায় তিন হাজার। ‘অন্যান্য’ সব মিলিয়ে প্রায় ১২ হাজার ভোট। তার মধ্যে শিবসেনা পেয়েছিল প্রায় সাড়ে চার হাজার ভোট। এ বার তারাও প্রার্থী দেয়নি।
প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে এসইউসি এবং বিএসপি এ বার ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। কেন?
এসইউসি-র করিমপুর ১ লোকাল কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক এবং দু’বার বিধানসভার নির্বাচনের প্রার্থী আজাদ রহমান বলেন, ‘‘এটা দলের সিদ্ধান্ত। দলের সর্বভারতীয় ট্রেড ইউনিয়নের জেলা সম্মেলন সদ্য শেষ হল। ডিসেম্বরে রাজ্য এবং আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সম্মেলন হবে। তার প্রস্তুতি চলছে। তাই এ বার ভোটে আমরা যোগ দিচ্ছি না।’’ তাঁদের ভোট তবে কার বাক্সে যাবে? আজাদ বলেন, ‘‘দলের নেতাকর্মীরা এ বার ভোটদান থেকে বিরত থাকবেন। সমর্থকরা কী করবেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার।’’
বিএসপি-র নদিয়া জেলা উত্তর সংগঠনের সভাপতি জিতেন হালদার জানান, এ বার রাজ্যের তিন কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে কোথাওই তাঁরা লড়ছেন না। মাত্র কয়েক মাসের জন্য বিধায়ক নির্বাচন। তাই রাজ্য নেতৃত্ব এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁরা প্রার্থী দেবেন। তাঁদের ভোট কার বাক্সে যাবে, সে সম্পর্কে অবশ্য তাঁর কোনও আন্দাজ নেই। আর, শিবসেনার কোনও স্থানীয় নেতার খোঁজই মেলেনি।
বড় তিন দলের কোনওটি যদি বড় ব্যবধানে জেতে, এ সব হিসেব নিয়ে কারও মাথাব্যথা থাকবে না। জল নাকের কাছে চলে এলে কিন্তু পচা শামুকে পা কাটতে পারে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy