দোষীদের শাস্তির দাবিতে মিছিল কামদুনিতে। বুধবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
অপরাধীদের যদি কঠিন সাজা না হয়, তা হলে হাথরসের মতো ঘটনা কি বন্ধ হবে?
বুধবার এই প্রশ্ন তুলেই ফের পথে নামলেন কামদুনির বাসিন্দারা। হাতে মোমবাতি, মুখে কালো মাস্ক, যে কোনও মূল্যে নারী নির্যাতন রোখার শপথ নিয়ে চলল মিছিল। এক সময়ে যে প্রতিবাদী মঞ্চ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল কামদুনির নির্যাতিতার পরিবার, এ দিন যোগ দিয়েছিলেন তাঁরাও। এ দিন দুপুরে কামদুনি মোড়ে নির্যাতিতার মূর্তিতে মাল্যদানের পরে শুরু হয় মিছিল। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন কলকাতা ও আশপাশের বুদ্ধিজীবীরাও।
২০১৩ সালের ৭ জুন কলেজ থেকে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে কামদুনির ওই তরুণীকে টেনে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয়। খুন করে ছিন্নভিন্ন দেহ জলাজমিতে ফেলে আসে দুষ্কৃতীরা। ঘটনার প্রতিবাদে পথে নামে কামদুনি। মাসের পর মাস ধরে চলা সেই আন্দোলনে তোলপাড় পড়ে যায় গোটা দেশে। ধরা পড়ে দুষ্কৃতীরা। ২০১৬ সালে তিন জনকে ফাঁসি ও তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় শোনায় নগর দায়রা আদালত। তবে বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে আপিল হয়। সেই মামলা এখনও চলছে।
আরও পড়ুন: মণীশ-হত্যা: ১ মাস অকুস্থলের কাছেই লুকিয়ে ছিল আততায়ীরা
নির্যাতিতার পরিবার এবং প্রতিবাদীরা এ দিন জানান, ঘটনার পরে পেরিয়ে গিয়েছে সাত বছর। এ দিকে দেশ জুড়েই বেড়ে চলেছে নারী নির্যাতনের ঘটনা। দ্রুত বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করে দোষীদের সাজা কার্যকর করার দাবি ওঠে মিছিল থেকে। নির্যাতিতার দাদা বলেন, ‘‘এই চার বছরে হাইকোর্টে ছ’বার বিচারপতি বদল হয়েছে। কতবার যে আমাদের আদালতে ছুটতে হয়েছে। কিন্তু এখনও শুনানিই শুরু হল না।’’ মেয়ের জন্য বিচার চেয়ে ছেলেরা ফের মিছিলে হাঁটতে যাচ্ছেন শুনে এ দিন সকাল থেকে খাবার মুখে দেননি মা-বাবা, জানালেন নির্যাতিতার ভাই। প্রতিবাদী মঞ্চ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার পরে ফের মিছিলে কেন? উত্তরে নির্যাতিতার ভাই বলেন, ‘‘বিচার ব্যবস্থার উপর থেকে আস্থা হারিয়ে যাচ্ছে। অন্য কোনও বোনের উপরে যাতে আর নির্যাতন না হয়, তাই ফের পথে নামা।’’
আরও পড়ুন: উন্নাও ‘গণধর্ষিতা’র ভাইপো নিখোঁজ, ভয় দেখাতে অপহরণ?
এ দিনের মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন মৌসুমী কয়াল, প্রদীপ মুখোপাধ্যায়েরা। নবদ্বীপ থেকে মিছিলে যোগ দিতে আসেন প্রতিবাদী মঞ্চের অন্যতম মুখ টুম্পা কয়ালও। তিনি বলেন, ‘‘কামদুনির পরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণের খবর পেয়ে ছুটে গিয়েছি। তবুও অপরাধ বন্ধ তো হয়ইনি, সাজাও পায়নি কেউ।’’ মিছিল শেষে পৌঁছন সত্যরঞ্জন দাশগুপ্ত নামে ৭৪ বছরের এক বৃদ্ধ। বললেন, ‘‘খবর পেয়ে মিছিলে হাঁটব বলে বারাসতের নবপল্লি থেকে আসছি। বাস, অটো বদলে বদলে আসতে গিয়ে দেরি হয়ে গেল।’’ তাঁকে প্রণাম করে মৌসুমী বলেন, ‘‘জানি না সুবিচারের দাবিতে এই বয়সে আপনাদের আরও কতবার ছুটে আসতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy