প্রতীকী ছবি।
নির্ভয়ার চেয়ে কম ভয়ানক ছিল না কামদুনি-কাণ্ড। তা হলে আমরা কেন বিচার পাব না? প্রশ্ন তুললেন বছর সাতেক আগে কামদুনির ঘটনার নির্যাতিতার পরিবার।
শুধু ওই পরিবারই নয়, শুক্রবার নির্ভয়া-কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসির পরে একই দাবি জানিয়েছেন কামদুনির আন্দোলনকারীরাও। ওই ঘটনায় সাজার ক্ষেত্রে সরকারের উদাসীনতা রয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
নির্ভয়া-কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসি সংক্রান্ত খবর পেতে এ দিন সকাল থেকেই টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রেখেছিল কামদুনির নির্যাতিতার পরিবার। বিচারের অপেক্ষায় থেকে থেকে ওই তরুণীর বাবা-মা দু’জনেই কার্যত শয্যাশায়ী। নির্ভয়া-কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসি হয়েছে জেনে কিছুটা স্বস্তি পেলেও মেয়ের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন তাঁরা। মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত বাবা-মাকে সামলাচ্ছিলেন তাঁদের দুই ছেলে। মৃতার এক দাদার কথায়, ‘‘অনেক লড়াইয়ের পরে নির্ভয়ার মা-বাবা আজ শান্তি পেলেন। আমাদের মা-বাবা কবে শান্তি পাবেন? ওঁদের শরীরের যা অবস্থা, আদৌ মেয়ের দোষীদের সাজা দেখে যেতে পারবেন কি না, তা-ও জানা নেই!’’
২০১৩ সালের ৭ জুন পরীক্ষা দিয়ে ফেরার সময়ে কামদুনির ওই কলেজ ছাত্রীকে একটি পরিত্যক্ত কারখানায় টেনে নিয়ে গণধর্ষণ করে নির্মম ভাবে খুন করা হয়েছিল। পরদিন সকালে জলে ডোবা ধানখেতের মধ্যে থেকে ছিন্নভিন্ন দেহটি মেলে। সেই ঘটনা নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা দেশ। প্রতিবাদে পথে নামেন মানুষ। ওই ঘটনায় কয়েক জনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। ২০১৬ সালে বিচার শেষে তিন জনের ফাঁসি এবং তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনায় নগর দায়রা আদালত। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আসামীরা। হাইকোর্টে সেই মামলা এখনও চলছে।
সে দিনের ঘটনার পর থেকে বারবার থানা, আদালত এমনকি রাষ্ট্রপতির কাছে ছুটতে ছুটতে ক্লান্ত মৃতার পরিবার। দিনের পর দিন বারাসত থেকে নগর দায়রা আদালত, সেখান থেকে হাইকোর্টে চলতে থাকা এই মামলা নিয়ে এ দিন ক্ষোভ জানান মৃতার মা-বাবা। দাদা বলেন, ‘‘এখন হাইকোর্টে মামলা চলছে। ইতিমধ্যেই চার বার বিচারক বদল হয়েছে। আমরা আর পারছি না। আমাদের আবেদন, মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করে এই মামলায় এক জন ভাল সরকারি কৌঁসুলির ব্যবস্থা করুন।’’
কামদুনি আন্দোলনে প্রতিবাদের মুখ হয়ে উঠেছিলেন এলাকারই মেয়ে টুম্পা কয়াল, মৌসুমী কয়াল। এ দিন মৌসুমী বলেন, ‘‘হায়দরাবাদের মতো ধর্ষকদের গুলি করে মারার ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাই না। চাই, নির্ভয়া-কাণ্ডে দোষীদের মতো কামদুনির অপরাধীদেরও ফাঁসি হোক। বিশেষ আদালতে ধর্ষণের মামলার বিচার শেষ করে অপরাধীদের দ্রুত সাজা হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy