পিতলের পাঁচন হাতে অনুব্রত। নিজস্ব চিত্র
নদিয়ায় পা দেওয়া ইস্তক তিনি পাঁচনবাড়ির ধুয়ো তুলে আসছেন।
রবিবার কৃষ্ণনগরের জনসভায় সেই অনুব্রত ওরফে কেষ্ট মণ্ডলের হাতে পিতলের পাঁচন তুলে দিলেন কালীগঞ্জ ব্লকের তৃণমূল কর্মীরা। হাসির রোল উঠল সভা জুড়ে। প্রায় এক কিলোগ্রামের ওই পাঁচন অনুব্রতের হাতে তুলে দেন কালীগঞ্জ ব্লক যুব সভাপতি জিয়াউর রহমান। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল যে লোকসভা নির্বাচনে সন্ত্রাসের ছক কষছে, এ আসলে তারই ইঙ্গিত।
নদিয়ায় সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব পাওয়া দরকারে ‘পাঁচনবাড়ি’ দেওয়ার নিদান দিয়ে আসছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। নদিয়া জেলায় বিরোধীদের মোকাবিলা করার জন্য পাঁচনবাড়ির কতটা প্রয়োজন, তা নিয়ে শাসক দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যেই বিতর্ক আছে। কিন্তু অনুব্রত কর্মিসভা থেকে জনসভায় সেই নিদান দিয়েই চলেছেন।
এত জিনিস থাকতে শেষ পর্যন্ত পাঁচন উপহার কেন?
জিয়াউর যুক্তি, “উনি তো পাঁচনের জন্যই বিখ্যাত। আর পাঁচনের দরকার তো আছেই!” তা হলে কি লোকসভা ভোটে কালীগঞ্জে পাঁচনের ব্যবহার হবে দেদার? জিয়ায়ুর বলছেন, “সে ভাবে প্রয়োজন নেই। তবে কেউ যদি কোথাও সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়ানোর চেষ্টা করে, তখন পাঁচনের ব্যবহার তো করতেই হবে।”
বিজেপি বলছে, এই উপহারই বুঝিয়ে দিচ্ছে তৃণমূল কিসের দিকে এগোতে চাইছে। শনিবার নরেন্দ্র মোদীর সভায় যাওয়ার পথে বাসে যে হামলা চালানো হয়, তা এই পাঁচন সংস্কৃতিরই পরীক্ষামূলক প্রয়োগ মাত্র। আগামী দিনে কোন মাত্রায় তা ব্যবহার করা হবে, তা মেপে নেওয়া হচ্ছে। এই নিয়ে চর্চা চলছে তৃণমূলের ভিতরেও। সভা শেষে দলের এক বর্ষীয়ান বিধায়ক বলছেন, “এই পাঁচন হজম করতে হজমোলা লাগবে!”
নদিয়ার দুটো আসন রক্ষার জন্যই অনুব্রতকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে অনুব্রত যে যত দূর যেতে হয় যাবেন, তা তিনি নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন। নদিয়ার তৃণমূল কর্মীরাও তা বুঝে গিয়েছেন। কালীগঞ্জের এক নেতার কথায়, “আমরাও যে পাঁচন ব্যবহারের জন্য তৈরি আছি, তা জানাতেই পিতলের পাঁচন উপহার দেওয়া হল।”
উপহার পেয়ে কেমন লাগল?
জনসভার পরে অনুব্রত বলেন, “ভাল, খুব ভাল। ঘরে রেখে দেব, যত্ন করে।” তার পরেই তিনি যোগ করেন, “পাঁচনের দরকার আছে, বুঝলেন!”
বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক সভাপতি মহাদেব সরকার বলেন, ‘‘তৃণমূলের এমনই অবস্থা যে সন্ত্রাসের সংস্কৃতি প্রকাশ্য মঞ্চে তুলে ধরতেও লজ্জা পাচ্ছে না। লোকসভা নির্বাচনে ওরা কী করতে চাইছে, তা তো স্পষ্ট!’’
তবে জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের ব্যাখ্যা, “পাঁচন এই দেশের কৃষিভিত্তিক সভ্যতার ঐতিহ্য। সেটা দিলে দোষের কী আছে? একটা সময়ে অবাধ্য ছাত্রদের শাসন করতে শিক্ষকেরা পাঁচন ব্যবহার করতেন।”
আপনি কি সন্ত্রাসের রাজনীতি আমদানি করতে চাইছেন নদিয়ায়?
রাতে অনুব্রত বলেন, ‘‘এর সঙ্গে সন্ত্রাসের কোনও সম্পর্ক নেই। পাঁচন চাষের কাজে লাগে। রাজনৈতিক জমি কী করে চাষ করতে হয়, পাঁচন সেটা বোঝানোরই প্রতীক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy