কালীপুজোর সন্ধ্যায় ভিড় দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে। ফাইল চিত্র
অমাবস্যার রাতে রামপ্রসাদী গানের সুরে ভাসতে ভাসতে মন্দির চত্বরে বসে পুজো দেখার সুযোগ এ বার মিলবে না। তবে করোনা আবহের কালীপুজোয় সব ধরনের বিধি মেনে সারা রাত পুজো দেওয়া যাবে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে।
অতিমারির কথা মাথায় রেখে আসন্ন কালীপুজো উপলক্ষে প্রাথমিক ভাবে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দক্ষিণেশ্বর মন্দির কর্তৃপক্ষ। করোনার কারণে দুর্গাপুজোয় বেলুড় মঠে সাধারণের প্রবেশ বন্ধ ছিল। তাই আগামী ১৪ নভেম্বর কালীপুজোর দিন দক্ষিণেশ্বর মন্দির কর্তৃপক্ষ কাউকে ঢুকতে দেবেন কি না, তা নিয়েই সংশয়ে ছিলেন অধিকাংশ ভক্ত ও দর্শনার্থী। মন্দিরের অছি ও সম্পাদক কুশল চৌধুরী বললেন, ‘‘দূরত্ব-বিধি থেকে শুরু করে সব ধরনের নিয়ম আরও কড়া ভাবে বলবৎ করা হবে। যাতে কোনও ভাবেই মন্দির চত্বরের কোথাও ভিড় না হয়।’’
প্রতি বছরই কালীপুজোর দিন ভোর থেকে ভক্ত ও দর্শনার্থীরা ভিড় করেন দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে। সন্ধ্যা থেকে সেই ভিড় আরও বাড়ে। মন্দির চত্বরে লাগানো বড় পর্দায় ভবতারিণীর পুজো সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। পুজো দেওয়ার পরে নাটমন্দির এবং মন্দির সংলগ্ন চাতালে বসে তা দেখতেও ভিড় করে থাকেন কয়েক হাজার মানুষ। চতুর্থ প্রহরে ভবতারিণীর পুজো শেষ হওয়ার পরে সকালে প্রসাদ নিয়েই মন্দির থেকে বাড়ি ফেরেন ভক্ত ও দর্শনার্থীরা। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সাত-আট হাজার মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হত প্রসাদ। কিন্তু করোনা-কালে এ বার সব কিছুতেই বদল আনা হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, এ বছর মন্দিরের চাতালে কোনও ভাবেই ভিড় করা যাবে না। তাই সেখানে কোথাও কোনও বড় পর্দা লাগানো হবে না। বদলে মন্দিরের বাইরের খোলামেলা চত্বরে লাগানো হবে পর্দা। পুজো দেওয়া হয়ে গেলেই মন্দিরের চাতাল ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হবে। নাটমন্দির-সহ কোথাও কেউ বসে থাকতে পারবেন না। বন্ধ থাকবে প্রসাদ বিতরণও।
করোনার কারণে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে প্রবেশের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম চালু করা হয়েছে। প্রথমে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হয় প্রত্যেক দর্শনার্থীর। তার পরে স্যানিটাইজ়েশন টানেল পেরিয়ে মন্দির চত্বরে প্রবেশ করতে হয়। সেখানেও নিয়ন্ত্রণ করা হয় ভক্ত ও দর্শনার্থীদের সংখ্যা। একসঙ্গে মাত্র ১০ জন করে মূল মন্দিরে পুজো দিতে ঢুকতে পারেন। পুজো দিতে হয় ফুল ও সিঁদুর ছাড়া। ভক্ত ও দর্শনার্থীরা একটি নির্দিষ্ট পাত্রে পুজোর সামগ্রী রেখে দেওয়ার পরে সেগুলি তুলে নেন পিপিই পরা পুরোহিতেরা। পুজোর পরে ফের তা ওই পাত্রে ফিরিয়ে দেন তাঁরা। কালীপুজোয় এই নিয়ম আরও কড়া ভাবে বলবৎ করা হবে বলেই জানাচ্ছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। ওই দিন সারা রাত ধরে যে পুজো নেওয়া হবে, তার জন্য গর্ভগৃহে থাকা পুরোহিতেরা পিপিই পরে থাকবেন।
কালীপুজোর রাতে মন্দিরের চাতালে দূরত্ব-বিধি মেনে একসঙ্গে প্রায় ২০০ জন দাঁড়াতে পারবেন। স্নানের পরিকল্পনা না থাকলে গঙ্গার ঘাটে দাঁড়ানো বা বসা যাবে না। কুশল বললেন, ‘‘ভক্ত ও দর্শনার্থীদের আবেগের কথা ভেবে আনলক-১ পর্বে সমস্ত নিয়ম মেনে মন্দির খোলা হয়েছিল। কালীপুজোর রাতেও পুজো দেওয়া থেকে ভক্তদের বঞ্চিত করা হচ্ছে না। কিন্তু কোভিড-বিধি মেনেই সব কিছু করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy