বিচারপতি অমৃতা সিংহ। — ফাইল চিত্র।
বেআইনি নির্মাণ নিয়ে আবারও কঠোর নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ। বিধাননগরের একটি বেআইনি আবাসনের জল এবং বিদ্যুৎ পরিষেবা অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশ দিলেন তিনি। সেই সঙ্গে ওই আবাসন খালি করার জন্য বাসিন্দাদের ৩০ দিন সময়ও বেঁধে দেন বিচারপতি।
অভিযোগ, বিধাননগরের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে একটি আবাসন বেআইনি ভাবে তৈরি হয়েছিল। ওই নির্মাণ শুরু করার আগে পুরসভার অনুমতি নেওয়া হয়নি। সেই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হয়। বুধবার সেই মামলা শুনানিতে পুরসভার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। তবে বিচারপতি বিধাননগর পুরসভাকে ওই আবাসন ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। তবে তার আগে আবাসনের জল এবং বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ করতে হবে বলেও জানান তিনি।
বুধবারের শুনানিতে দুই নির্মাণকারীর আইনজীবী স্বীকার করে নেন যে, ওই আবাসন নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি নেওয়া হয়নি। অনুমতি ছাড়াই পাঁচতলা ভবন কী ভাবে নির্মাণ হল সেই প্রশ্ন তোলে হাই কোর্ট। নির্মাণকারীদের আইনজীবী জানান, নির্মাণ শুরুর সময় পুরসভার অনুমতি নেওয়া না হলেও পরে অনুমতি নেওয়া হয়।
নির্মাণকারীদের আইনজীবীর কথা শুনে বিচারপতি সিংহ মন্তব্য কবেন, ‘‘নির্মাণ যদি অবৈধ ভাবে শুরু হয় তবে তা ধুলোয় মিশিয়ে দিতেই হবে। গার্ডেনরিচের দুর্ঘটনার পরে বেআইনি নির্মাণের ক্ষেত্রে আরও কড়া হতে হবে।’’ নির্মাণকারীদের জেলে পাঠানোর হুঁশিয়ারি দেন বিচারপতি। হাই কোর্ট জানায়, দুই নির্মাণকারীর সম্পত্তির খতিয়ান হলফনামা আকারে জমা দিতে হবে আদালতে। আদালতের অনুমতি ছাড়া দুই নির্মাতা কোনও সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারবেন না।
বেআইনি নির্মাণ নিয়ে মামালাকারীর আইনজীবী বুধবার আদালতে সওয়াল করা সময় বলেন, ‘‘পুরসভা এবং পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা উচিত। দুর্নীতি দমন আইনে মামলা হওয়া উচিত পুরসভার আধিকারিকদের বিরুদ্ধে।’’ পুরসভার আইনজীবীর বক্তব্য, ‘‘বিধাননগরের ৩৫ এবং ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৩০টি সন্দেহজনক নির্মাণের খবর পেয়েছিলাম। তার ভিত্তিতে সমস্ত নির্মাতাদের কাছ থেকে নথি চাওয়া হয়েছিল। বেশিরভাগ নির্মাতার কাছেই কোনও বৈধ নথি নেই। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ পুরসভার তরফে দেওয়া হয়েছে। সন্দেহজনক নির্মাণের নির্মাণকারীদের বক্তব্য প্রায় প্রতি দিন পুরসভা শুনছে।’’
মঙ্গলবারের শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন ওই বেআইনি নির্মাণের কয়েক জন বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে এক বাসিন্দা জানান, ওই আবাসনের অধিকাংশ বাসিন্দা গরিব। এখন তাঁরা কোথায় যাবেন? যা শুনে বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘খুব গরিব লোকেদের মরে যাওয়া উচিত? এটাই বলতে চান? তাঁরা কোথায় যাবেন মানে? তাঁদের উচিত ছিল বৈধ অনুমোদন রয়েছে কি না তা যাচাই করে ওই আবাসনে বিনিয়োগ করা। আগে নিজের জীবন বাঁচান, যদি এই বাড়ি ভেঙে পড়ে তবে কী হবে? গরিব মানুষ কি মরার জন্য জন্মেছেন? জীবনের মূল্য অনেক বেশি।’’
ওই আবাসন ৩০ দিনের মধ্যে খাতি করার নির্দেশ দেন বিচারপতি সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘আপাতত ওই আবাসনে জল ও বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ থাকবে। ১২ এপ্রিলের মধ্যে হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে এক কোটি টাকা জমা দিতে হবে ওই আবাসনের দুই নির্মাতাকে। তাঁরা বিধাননগর এলাকায় কোনও নির্মাণ করতে পারবেন না। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে পুরসভা।’’ পাশাপাশি, পুরসভাকে ওই বাড়ি ভাঙার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করারও নির্দেশ দেন বিচারপতি।। আগামী ১৬ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে হাই কোর্টে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy