Advertisement
E-Paper

‘ক্ষমা করে দিয়ো বন্ধু’! বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় কোর্টে ‘মানভঞ্জন’ করলেন অ্যাডভোকেট জেনারেলের

তিনি যে সে দিন রাগের মাথাতেই এ সব বলেছিলেন, তা-ও জানিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। পাল্টা এজি কিশোর দত্ত জানিয়েছেন, সে দিন তিনি যে সব কথা বলেছিলেন, তা-ও বলা উচিত হয়নি।

image of Justice Abhijit Gangopadhyay

(বাঁ দিকে) এজি কিশোর দত্ত, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৪:৪৮
Share
Save

ভরা এজলাসে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্তের কাছে ক্ষমা চাইলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মেডিক্যালে ভর্তি মামলায় সম্প্রতি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এজির সঙ্গে তাঁর ‘তির্যক কথোপকথন’ হয়। তার প্রেক্ষিতেই এ বার কিশোরের কাছে ক্ষমা চাইলেন বিচারপতি। মঙ্গলবার নিজের এজলাসে কিশোরকে ডেকে বিচারপতি তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। কিশোরের সঙ্গে তাঁর বহু পুরনো সম্পর্ক, সেই কথার উল্লেখ করে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সে দিন এজলাসে তিনি রাগের মাথায় অনেক কথা বলেছেন। ও সব কথা যে বলা উচিত হয়নি, তা-ও জানিয়েছেন বিচারপতি।

মঙ্গলবার নিজের এজলাসে এজিকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘সে দিন আমি রাগের মাথায় অনেক কিছু বলেছি। বারের (বার অ্যাসোসিয়েশন) আইনজীবীদের সকলের তা জানা উচিত। আমি আমার বন্ধুর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।’’ প্রসঙ্গত, বিচারপতির ওই মন্তব্যের পর সরব হয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবীদের একাংশ। তাঁরা দাবি জানিয়েছিলেন, এজির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে বিচারপতিকে। সেই মর্মে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমকে চিঠিও দিয়েছিলেন তাঁরা। এজির উদ্দেশে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য ‘কলকাতা হাই কোর্টের অবমাননা’ বলেও চিঠিতে অভিযোগ করেছিলেন আইনজীবীদের ওই অংশ। মঙ্গলবার বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীদের উদ্দেশে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আপনারা জানেন না কিশোর আমার কত উপকার করেছে। এমনও হয়েছে কিশোর এবং আমার আর এক বন্ধু না থাকলে আমি মরেই যেতাম!’’ মঙ্গলবার এজলাসে বসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার বন্ধু কিশোরের কাছে আমাকে ক্ষমা চাইতে হবে। আমার কথায় তিনি আঘাত পেয়ে থাকতে পারেন।’’

বিচারপতির এই মন্তব্যের পরেই তাঁর এজলাসে আসেন এজি। তাঁর উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে আমি আপনাকে অনেক কিছু বলেছি। আমি আপনাকে বহু বছর ধরে চিনি। প্রায় ৩৭ বছর হবে আমাদের পরিচয়। আমি আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমি খুবই দুঃখিত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সে দিন আমি যা বলেছিলাম, আপনি পাল্টা তার বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছিলেন। তবে আমার কথাগুলো ছিল ক্রোধের বশে। আপনার উদ্দেশে কিছু বলার মানসিকতা আমার ছিল না।’’

বিচারপতি ক্ষমা চাইতেই এজি বলেন, ‘‘আমিও তো ওই দিন অনেক কিছু বলেছিলাম। না বলাই উচিত ছিল।’’ বিচারপতি বলেন, ‘‘কিশোর, আমি, জয়মাল্য (বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী)-সহ আরও কয়েক জন একসঙ্গে ঘুরে বেড়াতাম। আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক।’’

রাজ্যের সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ভর্তির অনিয়ম সংক্রান্ত মামলায় গত ২৪ জানুয়ারি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সে দিনই ওই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সৌমেন সেন। পরের দিন অর্থাৎ ২৫ জানুয়ারি সকালে সিবিআইয়ের করা এফআইআরও খারিজ করে দেয় বিচারপতি সেন এবং বিচারপতি উদয়কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ।

এর পরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় পাল্টা নির্দেশ দেন বিচারপতি সেনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ করেন, বিচারপতি সেন ‘রাজনৈতিক স্বার্থ জড়িত থাকা’ ব্যক্তির মতো আচরণ করছেন। যা করছেন, তা ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য’ নিয়ে করছেন। ভরা এজলাসেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, কেন বিচারপতি সেনের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে না? সে সময় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এজি কিশোর দত্তের উদ্দেশে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ।

Justice Abhijit Gangopadhyay

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}