Advertisement
E-Paper

রঙিন দিনেও আঁধারে ওঁরা

উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক পদে ১০ হাজারের উপর নিয়োগ হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি উচ্চ প্রাথমিকের প্রচুর চাকরিপ্রার্থী রয়েছেন যাঁরা ন্যায্য ইন্টারভিউ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ।

—ফাইল চিত্র।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫ ০৭:২১
Share
Save

দশ-দশটি বসন্ত পেরিয়ে গেল। কিন্তু চাকরির অপেক্ষায় থেকে ভবিষ্যৎ কার্যত অন্ধকারে ওঁদের। জীবন যেন বর্ণহীন হয়ে গিয়েছে। তাই রাজ্যে বসন্তোৎসব এলেও জীবনের ছবি বদলায় না উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক পদের ইন্টারভিউ থেকে বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের। শুক্রবার দোলের দিনেও চাকরির দাবি নিয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে ওঁরা বসে ছিলেন ধর্মতলায় মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে। এই মূর্তির তলাতেই বিক্ষোভ অবস্থানে কেটে গেল ৯৯২ দিন। রঙিন উৎসবের দিনেও তাই ওঁদের প্রশ্ন, চাকরি পেতে আর কত অপেক্ষা করতে হবে?

উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক পদে ১০ হাজারের উপর নিয়োগ হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি উচ্চ প্রাথমিকের প্রচুর চাকরিপ্রার্থী রয়েছেন যাঁরা ন্যায্য ইন্টারভিউ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁদের বক্তব্য, ২০২২ সালে উচ্চ প্রাথমিকের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সময়ে নিয়ম অনুযায়ী শূন্যপদের সংখ্যা নতুন ভাবে হিসাব না করে (সিট আপডেট) ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছিল। তাই শূন্যপদের ঠিক হিসাব না হওয়ায় তাঁরা ইন্টারভিউয়ের সুযোগ পাননি। তখনই এই বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী মঞ্চ তৈরি হয়।

এই সংগঠনের অভিযোগ, ২০১৫ সালে যখন টেট হয়েছিল তখন উচ্চ প্রাথমিকে যে শূন্য পদ ছিল ২০২২ সালে ইন্টারভিউ শুরু হওয়ার সময়ে তা অনেক বেড়ে যাওয়ার কথা।
কারণ, সাত বছরে প্রচুর শিক্ষক অবসর নিয়েছেন। অনেকে অন্য চাকরিতে চলে গিয়েছেন। এই মঞ্চের এক চাকরিপ্রার্থী আজহার শেখ জানান, ২০১৫ সালে টেট দিয়েছিলেন তাঁরা। ২০১৬ সালে ফল বেরোয়। ২০১৯ সালে ইন্টারভিউ হলেও দুর্নীতির অভিযোগে তা বাতিল হয়। আজহার বলেন, ‘‘২০২২ সালে নতুন করে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শুরু হল। কিন্তু সেই ইন্টারভিউয়ে আমরা ডাক পেলাম না। তখনই দাবি করেছিলাম, কলকাতা গেজেটের নিয়ম অনুযায়ী ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার এক সপ্তাহ আগে সিট আপডেট করতে হবে। তা করা হয়নি। সিট আপডেট করে ইন্টারভিউ হলে আমরা অনেকেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে পারতাম।’’ মঞ্চের সদস্যেরা জানান, এই মঞ্চে এমন প্রার্থীও আছে যারা ২০১১ সালের টেট পাশ করেছিলেন। তারপর থেকে কোনও ইন্টারভিউয়ে বসার সুযোগ পাননি। তাঁদের অনেকের বয়স ৪০ পেরিয়ে গেছে। কারও বয়স পঞ্চাশের কাছে।

দোলের দিন মাতঙ্গিনী মূর্তির নীচে প্রতিদিনের মতোই প্ল্যাকার্ড হাতে বসেছিলেন চন্দন দে, সোমা নস্করের মতো চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের কয়েক জনের বক্তব্য, প্রাথমিকে যাঁরা টেট পাশ করেছেন তাঁদের কিন্তু ২০১৫ সালের পর থেকে কয়েক বার নিয়োগ হয়েছে। তাহলে উচ্চ প্রাথমিকে চাকরিপ্রার্থীরা কেন বঞ্চিত থেকে যাবেন? শিক্ষা দফতর সূত্রের দাবি, আদালতের নির্দেশ মেনে উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ চলছে। আদালতের নির্দেশে পরবর্তীকালে যা পদক্ষেপ করা হবে। যদিও আজহার জানানস, ২২ মার্চ মাতঙ্গিনী মূর্তির নীচে অবস্থান-বিক্ষোভের ১০০০ দিন পূর্ণ হবে। সে দিন থেকেই আরও তীব্র আন্দোলনের পথে যাবেন তাঁরা। প্রয়োজনে অনশনে বসবেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Teachers Recruitment SSC protests Holi 2025

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}