কারও হাতে ভাতের শূন্য হাঁড়ি, কারও হাতে থালা। বৈশাখী দুপুরের তীব্র গরমে এক হাতে হাঁড়ি বা থালা নিয়ে দণ্ডি কাটতে কাটতে এগোচ্ছেন কেউ কেউ। সেই বৃত্তিশিক্ষকদের গন্তব্য নিউ টাউনের কারিগরি ভবন। আবার সল্টলেকের করুণাময়ী মোড়ে এসএসসি-র সদর দফতর অভিযানে পুলিশ পথ আটকে দেওয়ায় তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় পশ্চিমবঙ্গ আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের। সোমবার শিক্ষকপদ প্রার্থী এবং কারিগরি শিক্ষকদের জোড়া অভিযানে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজপথ।
বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষকপদ প্রার্থীদের একাংশ মেট্রোয় করুণাময়ীতে পৌঁছন। অন্য দল সেক্টর ফাইভ মেট্রো স্টেশনে নেমে কমিশনের দফতর অভিমুখে হাঁটতে শুরু করে। করুণাময়ীতে ধস্তাধস্তির পরে কয়েক জনকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। রাস্তায় বসে পড়েন অন্যেরা। চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, আট বছর ধরে তাঁদের নিয়োগ আটকে আছে। বার বার প্রতিশ্রুতি দিয়েও মেধা-তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। তাঁদের দাবি, মেধা-তালিকা প্রকাশ করলেই হবে না, দ্রুত নিয়োগ চাই। অনেক উচ্চ প্রাথমিক স্কুলই শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছে, বন্ধও হয়ে যাচ্ছে কিছু কিছু স্কুল। প্রার্থীরা রাস্তায় আন্দোলন করছেন, তবু নিয়োগ হচ্ছে না।
এ দিনেই হাঁড়ি ও থালা নিয়ে নিউ টাউনে কারিগরি ভবন অভিযান করেন নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সরকার পোষিত ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত বৃত্তি শিক্ষকেরা। ছিলেন তাঁদের পরিবারের লোকজনও। ওই অস্থায়ী শিক্ষকদের অভিযোগ, কয়েক মাস ধরে অনেক শিক্ষক বেতন পাচ্ছেন না। বেতন-কাঠামোই নেই। স্থায়ীকরণ হচ্ছে না। ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্টদের ছাঁটাই করা হচ্ছে। বৃত্তি শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক শুভদীপ ভৌমিক বলেন, ‘‘ইনফর্মেশন টেকনোলজি বা তথ্যপ্রযুক্তি, হেল্থ কেয়ার, এগ্রিকালচার, টুরিজ়ম অ্যান্ড হসপিটালিটির মতো বৃত্তিশিক্ষার উপরে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে জাতীয় শিক্ষানীতিতে। কিন্তু বঙ্গে সব থেকে বঞ্চিত এই বিভাগের শিক্ষকেরাই।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)