জঙ্গি কার্যকলাপের অভিযোগে অসমের বরপেটা থেকে ধৃত ছ’জনের মধ্যে তিন জনই জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) বড় চাঁই। গোয়েন্দাদের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ থেকে অসম অবধি জামাতের কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে দেওয়া, ‘স্লিপার সেল’ গঠন, নতুন সদস্য নিয়োগ এবং অস্ত্র-ভাণ্ডার মজবুত করাই ছিল এদের দায়িত্ব।
পুলিশ সূত্রের খবর, জামাতের এই তিন পান্ডার নাম রফিকুল, সাইখুল ইসলাম ওরফে আবদুল্লা এবং গোলাম ওসমানি। খাগড়াগড়ে ধৃত রাজিয়া ও আলিমাকে জেরা করেই এদের কথা জানা গিয়েছে। সাইখুলের বাবা সিরাজ আলি খান, ওসমানির বাবা জহুরুদ্দিন এবং সরবেশ আলি নামে এক মাদুর শিল্পীও জঙ্গি ষড়যন্ত্রে জড়িত সন্দেহে ধৃত। ছ’জনের বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্র, দেশদ্রোহিতা, দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধের চেষ্টা, অস্ত্র আইন ও ইউএপিএ আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। কামরূপ সিজেএম আদালত তাদের ১৪ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। গুয়াহাটির এনআইএ অফিসাররা তাদের জেরা করছেন। তাদের কাছ থেকে মেলা ৫টি মোবাইল ও ৫টি সিমকার্ডও পরীক্ষা করা হচ্ছে।
এসবি সূত্রের খবর, সাইখুলের প্রাথমিক পাঠ ঝাড়খণ্ডে। পরে বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদে সে ‘জিহাদ’-এর প্রশিক্ষণ নেয়। রফিকুলের সূত্র ধরেই শাকিলের সঙ্গে তার আলাপ। শাকিল ওরফে শামিন প্রায়ই কাপড়ের ব্যবসার অছিলায় বরপেটায় আসত। শাকিলের কাজ ছিল অস্ত্র ও বিস্ফোরক সংক্রান্ত। সইখুলকে দেওয়া হয়েছিল জেলা তথা নামনি অসমে জিহাদের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হতে পারে এমন যুবকদের খুঁজে বের করে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ভার। কাহিকুচি গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় শিক্ষক সিরাজ আলি খানও এতে জড়িত ছিলেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সাইখুল-রফিকুলরা কাদের দলে টেনেছিল, সে ব্যাপারেও পুলিশ তথ্য সংগ্রহ করছে।
প্রত্যন্ত গ্রাম রৌমারির বাসিন্দা গোলাম ওসমানির লেখাপড়া আবার মূলত পশ্চিমবঙ্গেই। তার ভাই এখনও মুর্শিদাবাদে পড়াশোনা করে। বরপেটার দৌলাশালে গোলামের একটি স্টুডিও রয়েছে, তার বাবা জহুরুদ্দিনের দোকান আছে। গোয়েন্দাদের দাবি, দুই রাজ্যেই জামাতের মতাদর্শ প্রচারের ভার ছিল তার উপরে। খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরেই সে এবং সইখুল বরপেটায় ফেরে। পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসা জামাত সদস্যদের আশ্রয় দেওয়ার কাজে জহুরুদ্দিনও ছেলেকে সাহায্য করতেন বলে পুলিশের দাবি।
কয়াকুচির মাদুর শিল্পের সঙ্গে যুক্ত, তিন সন্তানের পিতা সরবেশ আলিকে পুলিশ জঙ্গি সন্দেহে গ্রামের বাসিন্দারা অবাক। পুলিশ সূত্রের খবর, সরবেশের সঙ্গে বর্ধমানের কালনার এক চিকিৎসকের ঘনিষ্ঠতা ছিল। এলাকার রোগীদের নিয়ে সে প্রায়ই বর্ধমানে যেত। ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, সেখানকার বা ক্ষুদ্রকুচির বহু ছেলেই কলকাতার আশপাশে নদিয়া ও মুর্শিদাবাদে পড়াশোনা করতে যায়। যেমন যায় রৌমারির ছাত্রেরাও। তবে পশ্চিমবঙ্গ থেকে কেউ এসে ওই সব বাড়িতে থাকত কি না, জবাব মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy