Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
State News

শাহের কাছে ধনখড়, নালিশ আইনশৃঙ্খলার

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যপালের প্রায় আধঘণ্টা কথা হয়।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২০ ০৩:০৬
Share: Save:

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ ও অভিযোগ জানালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। আগে বিভিন্ন সময় প্রকাশ্যেই আইনশৃঙ্খলা নিয়ে নানা মন্তব্য করে সুষ্ঠু ও অবাধ ভোট নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি। রাজ্যে পুরভোটের মুখে শুক্রবার শাহের সঙ্গে বৈঠকে তাঁর এই আলোচনাকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

সংসদ ভবনে এ দিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যপালের প্রায় আধঘণ্টা কথা হয়। ধনখড়ের দাবি, তিনি রাজ্যের পরিস্থিতি জানাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সময় চেয়েছিলেন। বৈঠক সেরে চাণক্যপুরীর ‘বাংলা ভবনে’ সাংবাদিক সম্মেলন করেন ধনখড়। রাজধানীতে এ ভাবে বাংলার কোনও রাজ্যপাল সাংবাদিক সম্মেলন করছেন, তা-ও সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি। সেখানেই রাজ্যপাল বলেন, ‘‘কৌশলগত কিছু বিষয় নিয়ে অমিত শাহের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিষয়গুলি স্পর্শকাতর। তাই প্রকাশ্যে এ নিয়ে কিছু বলব না।’’ রাজ্যপালের অভিযোগকে গুরুত্ব না দিয়ে শাসক তৃণমূলের নেতৃত্ব অবশ্য তাঁর আচরণ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। রাজ্যপালকে কটাক্ষ করেছেন ‘প্রচারপাল’ বলেও।

রাজ্যপালের বক্তব্য, ‘‘পুলিশ ও প্রশাসনের একাংশ শাসক দলের হয়ে কাজ করছেন। প্রশাসনের রাজনীতিকরণ হয়েছে। অপরাধ ও অপরাধীর রাজনৈতিক রং দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন। সন্ত্রাসের বাতাবরণ রয়েছে রাজ্যে। বিরোধীদের মাদক পাচারের অভিযোগে ফাঁসানো হচ্ছে।’’ বাংলায় এই মুহূর্তে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার সম্ভাবনা অবশ্য খারিজ করে দিয়েছেন রাজ্যপাল। এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সরাসরি জবাব এড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘এখনই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর সময় আসেনি। সংঘাত নয়। পরিস্থিতির যাতে উন্নতি হয়, সে দিকেই জোর দেওয়া প্রয়োজন।’’

আরও পড়ুন: আজ শুরু ‘বাংলার গর্ব’ কর্মসূচি, তুঙ্গে তরজাও

তবে তিনি শাহকে এ-ও জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, রাজ্যপাল তাঁর সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরেছেন যাদবপুর ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রসঙ্গ। অতীতে ২০১৩ ও ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের নজির তুলে শাহের কাছে পুরভোটে হিংসার আশঙ্কা প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘‘যাতে সুষ্ঠু ভাবে ভোট হয়, তার জন্য রাজ্যের নির্বাচন কমিশনারকে ডেকে বৈঠক করেছি।’’

লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মানুষ রাজ্যপালকে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখান করার পরেই তিনি দিল্লি দৌড়ে এসেছেন! ইতিমধ্যেই বাংলার মানুষের কাছে ‘মস্তিষ্কের অস্থিরতার প্রতীক’ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছেন তিনি। রাজ্যপাল দিল্লিতে যা-ই বলুন না কেন, তার কোনও গুরুত্ব নেই।’’ কলকাতায় তৃণমূলের মহাসচিব তথা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা প্রচারপাল নই! রাজ্যপাল বলবেন। আমরা প্রতিনিয়ত তার জবাব দিতে পারব না। মানুষ আমাদের নির্বাচিত করেছেন তাঁদের কাজ করার জন্য। আমাদের সেটাই করতে দিন।’’ লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী এবং বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যপালের বৈঠক স্বাভাবিক ঘটনা। বাংলায় ভোট যে ভাবে হয়েছে, তা নিয়ে উদ্বেগ আছে তাঁদের সকলেরই। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সেরে রাজ্যপাল সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলতে যাচ্ছেন, এই ঘটনা ‘অভিনব’!

আইনশৃঙ্খলার প্রসঙ্গেই রাজ্যপাল বলেন, ‘‘নৈহাটিতে প্রথম দু’টি বিস্ফোরণে মানুষ মারা গিয়েছিল। তৃতীয় বিস্ফোরণটি ঘটায় রাজ্য প্রশাসন। ওই বিস্ফোরণের তদন্ত জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-কে দিয়ে করানো উচিত ছিল।’’ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের মতে, শাহের কাছে সীমান্ত নিরাপত্তার প্রশ্নে রাজ্য সরকারের ঢিলেঢালা মনোভাব নিয়েও সরব হন রাজ্যপাল। কথা হয় অনুপ্রবেশ ও অনুপ্রবেশকারীদের নাগরিকত্বের বিষয়েও। সূত্রের দাবি, বৈঠকে সিএএ বিল পাশের পরে রাজ্যে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার কথা তোলেন রাজ্যপাল।

অন্য বিষয়গুলি:

Jagdeep Dhankhar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy