যাদবপুরকাণ্ডের ১৭ দিনের মাথায় ফের নিজের দফতরে এলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত। সোমবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিট নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকেন ভাস্কর। প্রথমেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক আধিকারিক তথা রেজিস্ট্রার, সহ-উপাচার্য প্রমুখের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি। গত কয়েক দিনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের যে পরীক্ষাগুলি হয়নি, সে সব পরীক্ষা পুনরায় নেওয়ার বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির সঙ্গে বৈঠকও করেন উপাচার্য।
আরও পড়ুন:
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে এলেও অল্প ক্ষণের জন্যই নিজের দফতরে থাকবেন উপাচার্য। গত ১ মার্চ যাদবপুরে তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার সম্মেলন ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেখানে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। জখম হন পড়ুয়ারাও। সেই রাতেই আহত ছাত্রদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন উপাচার্য ভাস্কর। সেখানে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। তার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন উপাচার্য। তবে আপাতত কাজে যোগ দিলেও চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কোনও প্রকার উত্তেজনা কিংবা মানসিক চাপে ফের স্বাস্থ্যের অবনতি হতে পারে ভাস্করের। তা ছাড়া, আগের চেয়ে সুস্থ বোধ করলেও উপাচার্যের শরীর এখনও পুরোপুরি সুস্থ নয়। এ বিষয়ে সকালে ডাক্তারের সঙ্গে ফোনে কথাও হয়েছে তাঁর স্ত্রীর। তার পরেই চিকিৎসকদের অনুমতি নিয়ে অল্প সময়ের জন্য ক্যাম্পাসে এসেছেন উপাচার্য।
কর্মসমিতির বৈঠক ডাকা প্রসঙ্গে সোমবার ভাস্কর বলেন, ‘‘অস্থায়ী উপাচার্য পদে থেকে কর্মসমিতির বৈঠক ডাকার জন্য সরকারি অনুমতির প্রয়োজন। আমরা শীঘ্রই সরকারের কাছে বৈঠক নিয়ে আবেদন করব। গত কয়েক দিনের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে কর্মসমিতিতে আলোচনা প্রয়োজন।’’ এ ছাড়াও উপাচার্য জানিয়েছেন, তিনি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে। সরকারের কাছেও এ বিষয়ে একাধিক বার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। ছাত্র সংসদ নির্বাচনই বিশ্ববিদ্যালয়ে সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে বলে বিশ্বাস উপাচার্যের। অন্য দিকে, যাদবপুর ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়ি বসানো প্রসঙ্গে উপাচার্যের বক্তব্য, ‘‘আমাদের কাছে পুলিশ ফাঁড়ি ও ব্যারাক তৈরির প্রস্তাব এসেছে। আমরা কর্মসমিতির বৈঠকে এ বিষয়টি উত্থাপন করব। সেখানে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে সব মিলিয়ে ৪০০০ বর্গফুট জায়গা চাওয়া হয়েছে। আমাদের কাছে এত জমি নেই।’’
আরও পড়ুন:
অন্য দিকে, সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠন চলছে স্বাভাবিক ছন্দে। তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্রের শাস্তির দাবিতে রোদকে উপেক্ষা করে সুবর্ণ জয়ন্তী ভবনের বাইরে মাটিতে বসে ক্লাস করছেন কলা বিভাগের পড়ুয়ারা। তবে এত বিশৃঙ্খলার মধ্যেও কিউএস প্রকাশিত র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান হয়েছে ৭২১ থেকে ৭৩০র মধ্যে, গত বছর যা ৭৪১-৭৫০র মধ্যে ছিল। উপাচার্যের কথায়, ‘‘এত কিছুর মধ্যেও যাদবপুর তার মান ধরে রাখতে পেরেছে, এটা গর্বের বিষয়।’’