সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কসবার জাল টিকা-কাণ্ড একটি ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলে মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে, বুধবার যে সময়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ওই মন্তব্য করছেন, তার কিছুক্ষণ আগেই গোটা ঘটনা নিয়ে রাজ্য সরকারের থেকে রিপোর্ট তলব করেছে কেন্দ্র। ওই চিঠিতে এমনও উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। তার অব্যবহিত পরেই মমতা বিজেপি-কে পাল্টা আক্রমণ করেছেন। তিনি জানিয়ে দেন, জাল প্রতিষেধক শিবির-কাণ্ডে রাজ্য সরকারের কোনও হাত নেই। বরং প্রতারণার ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে প্রতারকদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার যে ভাবে পদক্ষেপ করেছে, তা ‘দৃষ্টান্তমূলক’। তাঁর কথায়, ‘‘অন্য কেউ হলে এই রকম পদক্ষেপ করতে পারত না।’’
জাল টিকাকরণ শিবির নিয়ে গত ২৬ জুন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। বুধবার কেন্দ্র জানিয়েছে, শুভেন্দুর চিঠি পেয়েই রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, গোটা ঘটনায় বিজেপি-র ‘ইন্ধন’ থাকতে পারে বলে সোমবারই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মমতা। বুধবারও তিনি বলেন ‘‘বিজেপি এখানে চক্রান্ত করছে। বিভিন্ন এজেন্সিকে কাজে লাগিয়ে লোক সাজিয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। বাংলাকে বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে।’’ এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। টিকা কেলেঙ্কারি নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতের প্রসঙ্গও টানেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘গুজরাতেও পার্টি অফিস থেকে টিকা বিলি করার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি-র বিরুদ্ধে। কই তখন তো কোনও মামলা হয়নি?’’
কসবার ঘটনা নিয়ে যাঁরা রাজ্যের সমালোচনা করেছেন, তাঁদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো ভিডিয়ো ছড়ানো হয়, তখন কোথায় থাকেন আপনারা? তখন তো কিছু বলতে শুনি না!’’ জাল টিকা-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবের বিরুদ্ধে রাজ্য প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ করবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি বলেছিলেন, গোটা ঘটনার দায় পুরসভা এবং পুলিশ-প্রশাসন কোনও ভাবেই এড়াতে পারে না। আগামী দিনে এই ধরনের জালিয়াতির ঘটনা রুখতে সচেতন থাকার বার্তা দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘কেউ কেউ এ রকম জালিয়াতি করার সুযোগ খোঁজে। সরকারের লোগো ব্যবহার করতে চায় প্রতারকেরা। চোর-ডাকাতরা এই ভাবে নেতাদের সঙ্গে ছবি তুলে পরে প্রভাব খাটায়। কেউ সেল্ফি তোলার চেষ্টা করলে আমি তো সঙ্গে সঙ্গে বারণ করে দিই!’’ কসবার ঘটনার পর রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীদের একাংশের সঙ্গে দেবাঞ্জনের ছবি প্রকাশ্যে আসার ঘটনায় রাজ্য সরকারের স্বস্তিতে থাকার বিশেষ কারণ নেই। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ না করলেও মমতা বলেন, ‘‘বিজেপি-র লোকজনের সঙ্গেও প্রতারকদের ছবি আছে হয়তো। খুঁজলেই পাওয়া যাবে। আগামী দিনে নিশ্চয়ই বেরোবে। একটা কথা পরিষ্কার বলে দিতে চাই— এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ছাড়া হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy