প্রতিবাদ: সমাবর্তন শেষে ফোটো সেশনে ডিগ্রি দেখালেন না আইএসআই-এর পড়ুয়ারা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দেবস্মিতা চৌধুরী ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটে (আইএসআই) অনেক হয়ে উঠলেন।
এ বার যাদবপুরের সমাবর্তন মঞ্চে স্বর্ণপদক নিতে গিয়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিলিপি ছিঁড়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্রী দেবস্মিতা বলেছিলেন, ‘‘হাম কাগজ নেহি দিখায়েঙ্গে (আমরা কাগজ দেখাব না)।’’ বৃহস্পতিবার দেশের অন্যতম সেরা কেন্দ্রীয় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের ৫৪তম সমাবর্তনে বেশ কয়েক জন পড়ুয়া জানিয়ে দিলেন, তাঁরাও কাগজ দেখাবেন না। ডিগ্রি গ্রহণের পরে ফোটো সেশনের সময় সেই ডিগ্রির কাগজ উল্টো করে ধরে রাখেন তাঁরা। তাঁদের এক জন ডিগ্রিও নেননি।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানের শেষে ফোটো সেশনের সময় এ দিনই পাওয়া ডিগ্রির শংসাপত্রকে উল্টো দিক করে ছবি তুলতে দেখা যায় স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়াদের। কেন এটা করলেন তাঁরা?
কোয়ান্টেটিভ ইকনমিক্সের স্নাতকোত্তর পড়ুয়া প্রিয়মা মজুমদার বলেন, ‘‘আমরা সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে। ওই আইনের প্রতিবাদে ‘হাম কাগজ নেহি দিখায়েঙ্গে’ বলে যে-প্রচার চলছে, তার পাশে আছি আমরা। ঠিক করেছি, আমরা আমাদের ডিগ্রির কাগজ না-দেখিয়ে এই প্রচারে অংশ গ্রহণ করব।’’ প্রিয়মা জানান, তিনি যে তাঁর স্নাতকোত্তর ডিগ্রিটাই নেবেন না, সেটা জানিয়ে দিয়েছিলেন আগেই। প্রিয়মা বলেন, ‘‘আমি এর পরে পিএইচ ডি করব। আমার ডিগ্রিটা প্রয়োজন। কিন্তু এখন দেশের পরিস্থিতি যা, তাতে আমি এখন ডিগ্রি নেব না।’’
আরও পড়ুন: ‘সুভাষচন্দ্রের আজাদি ভুলিয়ে দিচ্ছে বিজেপি’
সিএএ-র বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রীদের এই ধরনের সমবেত প্রতিবাদের আগে সমাবর্তনে দীক্ষান্ত ভাষণে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, রসায়নের নোবেলজয়ী জোয়াকিম ফ্রাঙ্ক জানান, আজকের পৃথিবীর ছাত্রসমাজকে আরও বেশি করে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই প্রসঙ্গে হিটলারি শাসনের পরে জার্মানিতে নিজের ছাত্রজীবনের কথা উল্লেখ করেন জোয়াকিম। ষাটের দশকের শেষ দিকে তাঁর ছাত্রাবস্থায় পারস্যের শাহ জার্মানি সফরে যাওয়ার পরে সেখানে যে-ছাত্র আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, তার উল্লেখ করেন তিনি।
তাঁদের ছাত্রাবস্থার সেই টালমাটাল সময়ে ছাত্রসমাজ কী ভাবে তাদের দাবি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়েছিল, এ দিনের ভাষণে তা বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরেন জোয়াকিম। কী ভাবে ছাত্রছাত্রীরা নতুন জার্মানি গড়ে তুলতে সাহায্য করেছিলেন, তার সবিস্তার বিবরণ দেন তিনি। তার পরেই বলেন, ‘‘সেই নতুন জার্মানি ছিল অনেক বেশি সহিষ্ণু, অনেক বেশি উদার। জার্মানেরা অন্যদের গ্রহণ করতে দু’হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল।’’
আরও পড়ুন: ভরসা অবিজেপি মুখ্যমন্ত্রীরাই, বলছেন অরুন্ধতী
অভিজ্ঞতা থেকে জোয়াকিমের পর্যবেক্ষণ, যদি ভবিষ্যতের কোনও আশা বেঁচে থাকে, তা বেঁচে থাকে নতুন প্রজন্মের হাত ধরে। তিনি জানান, আজকের দিনে বিশ্ব উষ্ণায়ন খুব বড় সমস্যা। ঐক্যবদ্ধ ভাবে এই সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy