সকাল হতেই ভাঙড়ে শুরু হয়েছে পুলিশি ধরপাকড়। —নিজস্ব চিত্র।
ভোটে কারচুপির অভিযোগে মঙ্গলবার রাত থেকে উত্তপ্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের কাঁঠালিয়া এলাকা। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে দুই আইএসএফ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। মারা গিয়েছেন আরও এক যুবক। তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। এ ছাড়াও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন পুলিশের এক পদস্থ কর্তা এবং এক পুলিশকর্মী। বুধবার সকাল থেকেই এলাকায় জোরদার পুলিশি টহল শুরু হয়েছে। চলছে ধরপাকড়।
মঙ্গলবার ভাঙড়-২ ব্লকের কাঁঠালিয়ার গণনাকেন্দ্রে চলছিল জেলা পরিষদের ভোটগণনা। আইএসএফ নেত্রী রেশমা খাতুন অভিযোগ করেন, তাঁদের জেলা পরিষদের প্রার্থী জাহানারা খাতুন প্রথমে পাঁচ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ বিডিও জানান, জাহানারা ৩৬০ ভোটে হেরে গিয়েছেন। আইএসএফ নেতৃত্বের দাবি, প্রশাসনের সঙ্গে ‘সেটিং’ করেছে তৃণমূল। তার পরেই ভোটের এই ফলঘোষণা হয়েছে। তাঁরা পুনর্নির্বাচনের দাবি তোলেন। যদিও তৃণমূল এই অভিযোগ উড়িয়ে দেয়। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে এলাকায় উত্তেজনা শুরু হয়। পুলিশের অভিযোগ, একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকেরা তাদের উপর আক্রমণ শুরু করে। এলাকায় একের পর এক বিস্ফোরণ হয়। বোমা এবং গুলির শব্দে আতঙ্ক ছড়ায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। কিন্তু অবস্থা বদলায়নি। আইএসএফের পাল্টা অভিযোগ, পুলিশ গুলি চালিয়েছে। তাতে তাঁদের বেশ কয়েক জন কর্মী আহত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে হাসান আলি নামে বছর ছাব্বিশের এক কর্মীর। কলাডাঙার বাসিন্দা হাসানকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাত ১২টা ১০ মিনিট নাগাদ হাসানকে কয়েক জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি আক্রমণ করেন। তাতেই প্রাণ হারিয়েছেন ওই যুবক।
রাজু মোল্লা নামে আরও এক জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ৩৫ বছরের রাজুর দেহ উদ্ধার হয়েছে ভাঙড়-২ ব্লক এলাকায়। তাঁর পরিবারের দাবি, তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন।মঙ্গলবার রাতে মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে ঘটকপুকুরে দিদির বাড়িতে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময় কাঁঠালিয়া এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ হন রাজু। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
অন্য দিকে, পুলিশের এক পদস্থ কর্তার হাতে গুলি লেগেছে। এক পুলিশকর্মীও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বুধবার দু’জনেরই অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে।
মঙ্গলবার রাতে গুলি এবং বোমার লড়াইয়ের মধ্যে সারা রাত গণনাকেন্দ্রের একটি ঘরের মধ্যেই আটকে ছিলেন এক ভোটকর্মী এবং পুলিশকর্মীরা। বুধবার সকালে জেলা পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী এসে তাঁদের উদ্ধার করে। সকাল সকাল ঘটনাস্থলে যান এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সিদ্ধনাথ গুপ্ত-সহ পুলিশের পদস্থ কর্তারা। শুরু হয় ধরপাকড়। আপাতত থমথমে পুরো এলাকা। নতুন করে অশান্তির খবর নেই। তবে কাঁঠালিয়া হাই স্কুল চত্বর থেকে ভাঙড়ের কাশীপুর রোড জুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে ইটের টুকরো, বোমার সুতলি ইত্যাদি। পুলিশের একের পর এক গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy