হাতে গোনা লোক নিয়ে নওশাদের সভা। শনিবার রামগড়ে। —নিজস্ব চিত্র।
নন্দীগ্রামের পরে লালগড়। এক দিনের তফাতে ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহলে সভা করলেন ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী।
তবে শনিবার জঙ্গলমহলে নওশাদের প্রথম সভায় আশানুরূপ ভিড় হয়নি বলেই সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি। লালগড় ব্লকের রামগড়ে কার্যত ফাঁকা মাঠে ঘণ্টাখানেক বক্তব্য রাখেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর চেয়ারম্যান নওশাদ। সরব হন আদিবাসী-জনজাতির বঞ্চনা, তাঁদের জল-জঙ্গল-জমির অধিকার নিয়ে।
এ দিনও নওশাদের নিশানায় ছিল তৃণমূল। আগাগোড়া আক্রমণ করেছেন জঙ্গলমহলে তৃণমূলের ‘মুখ’, মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদাকে। সভাস্থলও ছিল বিরবাহার বিধানসভা এলাকাতেই। নওশাদের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদিবাসী আবেগ উস্কে ভোট কিনেছেন। কিন্তু এলাকার মানুষের কোনও পরিবর্তন হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘প্রকৃত আদিবাসীরা বঞ্চিত। অনেকেই ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র নিয়ে চাকরি করছে। আগে হাতির সমস্যাও এত ছিল না। এখন জঙ্গল সাফ হয়ে যাচ্ছে। হাতিরা খাবার না পেয়ে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে, মানুষ মারছে। এ সব মন্ত্রী মহোদয়া বলতে পারবেন না। কারণ, তিনি সওয়াল করলে পদ চলে যেতে পারে।’’ জনতার প্রতি নওশাদের বার্তা, ‘‘ভাবুন, কাকে জিতিয়ে বিধানসভায় পাঠিয়ে মন্ত্রী করেছেন।’’
লোকসভা ভোটের আগে জঙ্গলমহলের মাটিতে সবে পা রেখেছে নওশাদের দল। রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ, জঙ্গলমহলের মূলবাসী আদিবাসী ও কুড়মিরা রাজ্যের নিরিখে সংখ্যালঘু। ফলে, সংখ্যালঘু মুসলিমদের সঙ্গে তাঁদের এক সারিতে এনে বঞ্চনার অভিযোগ সামনে আনতে চাইছেন নওশাদেরা। নওশাদও মানছেন, ‘‘কুড়মি, আদিবাসী-সহ সবাইকে এক মঞ্চে এনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠিত করাই আমাদের লক্ষ্য।’’
রামগড়ের খেরওয়াল মাডওয়া ফুটবল মাঠে নওশাদের সভার অনুমতি দেয়নি পুলিশ। তবে বিনা বাধাতেই সভা হয়েছে। দুপুর ১২টায় সভা শুরুর কথা থাকলেও লোকজন না আসায় সময় পিছোয়। বিকেল পৌনে ৩টে নাগাদ পৌঁছন নওশাদ। তৃণমূলকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা সভা আটকাতে চেয়েছিলেন, লোকজনকে আসতে দেননি,তাঁরা পৃথিবীর বিপ্লবের ইতিহাস পড়েননি। জঙ্গলমহল জাগছে। বিপ্লব হবে।’’ মঞ্চেও ছিল বিরসার ছবি। বিরসার জন্মজয়ন্তী উপলক্ষেই এ দিনের সভা।
নওশাদের সঙ্গে বিজেপি-র বোঝাপড়া নিয়ে তৃণমূল গোড়া থেকেই অভিযোগ করছে। স্থানীয়দের দাবি, এ দিনের সভাতেও এক জন ‘জয় শ্রী…’ ধ্বনি দিতে গিয়ে অন্যদের বাধায়থেমে যান। মন্ত্রী বিরবাহার মন্তব্য, ‘‘উনি জঙ্গলমহলে প্রচারের রাজনীতি করতে এসেছিলেন। পুরো ফ্লপ শো হয়েছে। আর ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্রের বিষয়টি আমিই প্রথম মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনি। ফলে এ সব অসত্য কথার জবাব হয় না।’’ বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি দেবাশিস কুন্ডুর দাবি, ‘‘সীমাহীন দুর্নীতির কারণে তৃণমূলের পায়ের তলায় মাটি নেই। সত্যিটা আড়াল করতে বিরোধীদের এক সারিতে এনে নানা অপব্যাখ্যা দিচ্ছে তারা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy