প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া। —ফাইল ছবি
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া মঙ্গলবার সমাবর্তন মঞ্চে দাঁড়িয়ে জানিয়েছিলেন, পড়ুয়ারা প্রেসিডেন্সিতে পড়তে এসেছেন। হিন্দু হস্টেলে থাকতে আসেননি। হস্টেলে থাকা একটা সুবিধা। এটা অধিকার নয়। দেওয়া হয়। স্বভাবতই বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। উচ্চশিক্ষা দফতর জানাচ্ছে, এই অধিকারের কথা নিয়মে না-থাকলেও পড়ুয়ারা এত দিন যে-সুবিধা পেয়ে আসছেন, তা থেকে তাঁদের বঞ্চিত করা যায় না।
উপাচার্য মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন, হিন্দু হস্টেলে সংস্কারের কাজ চলায় ছাত্রদের অন্যত্র থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অর্থাৎ তাঁদের থাকার সুবিধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পড়ুয়াদের বক্তব্য, রাজারহাটে যেখানে তাঁদের থাকতে দেওয়া হয়েছে, সেটি বসবাসের যোগ্য নয়। তাই হিন্দু হস্টেলের আবাসিকেরা বিছানাপত্র নিয়ে প্রেসিডেন্সি ক্যাম্পাসেই থাকছেন টানা ৪১ দিন ধরে।
উচ্চশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়কে পড়ুয়াদের হস্টেল দিতেই হবে, এমন কোনও নিয়ম নেই। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলির ক্ষেত্রে নিয়ম আছে, ৫০ শতাংশ পড়ুয়ার হস্টেলে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। তবে ওই কর্তাও বলেন, ‘‘হিন্দু হস্টেল প্রেসিডেন্সির ইতিহাসের সঙ্গেই জড়িত। স্বয়ং প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ ছাত্রাবস্থায় ওখানে থাকতেন। এই হস্টেল আগে থেকেই তৈরি করা আছে এবং ছাত্রেরা সেখানে থাকার সুযোগ পেয়ে আসছেন। সংস্কারের নামে তিন বছর ধরে পড়ুয়াদের এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা যায় না।’’
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক অরিন্দম ডলই বুধবার জানান, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক পড়ুয়া জেলা ও গ্রাম থেকে আসেন। ‘‘উপাচার্য যা বলেছেন, তাতে মনে হয়, পিছিয়ে পড়া মানুষের সন্তান অথবা জেলায় থাকা পড়ুয়াদের পড়াশোনা করার
জায়গা নয় প্রেসিডেন্সি,’’ বলেন অরিন্দম। আন্দোলনকারী ছাত্রনেতা সায়ন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা মনে করি, কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গেলে হস্টেলের সংস্থান করে দেওয়াটা কর্তৃপক্ষেরই দায়িত্ব। হিন্দু হস্টেলের বদলে থাকার যে-জায়গা দেওয়া হয়েছে, সেটা বসবাসের যোগ্য নয়।’’
প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী তথা প্রসার ভারতীর প্রাক্তন সিইও জহর সরকার এ দিন জানান, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ও হিন্দু হস্টেল অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত। প্রেসিডেন্সিকে পাঁচতারা হোটেল না-বানিয়ে যদি অনেক আগেই হিন্দু হস্টেলের দিকে নজর দেওয়া যেত, তা হলে প্রেসিডেন্সির ইতিহাসে মঙ্গলবারের ওই দুঃখজনক ঘটনা ঘটত না।’’ স্পষ্টতই তাঁর ইঙ্গিত নন্দন-৩ প্রেক্ষাগৃহে কোনও রকমে সারা প্রেসিডেন্সির চলতি বছরে সমাবর্তনের দিকে। প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী সংসদের সাধারণ সম্পাদক বিভাস চৌধুরী এ দিন জানান, প্রেসিডেন্সির ঐতিহ্যের সঙ্গে হিন্দু হস্টেল ঐতিহ্যও জড়িত। তবে তিনি মনে করেন, পড়ুয়াদের জেদের ফলে মঙ্গলবার যা হল, তাতে গরিমা নষ্ট হয়েছে প্রেসিডেন্সিরই।
‘‘সমাবর্তনের দিন আমি যা বলেছি, তার বাইরে আর কিছু বলব না,’’ এ দিন বলেন উপাচার্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy