Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
CV Ananda Bose & Firhad Hakim

ফিরহাদের জোড়া পদ নিয়ে প্রশ্ন বোসের, মাথা ঘামাতে হবে না, মুখ্যমন্ত্রী জানলেই হবে, পাল্টা হাকিম

মন্ত্রী এবং মেয়র, দু’টি পদে থেকে কি আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন ফিরহাদ হাকিম? এমন প্রশ্নের জবাব চেয়ে নবান্নকে চিঠি পাঠাল রাজভবন। রাজ্যপাল আনন্দ বোসের এই প্রশ্নকে পাত্তা দিতে নারাজ মেয়র।

Is Firhad Hakim benefiting from both the positions of mayor and minister? Governor CV Anand Bose asked Nabanna

(বাঁ দিকে) ফিরহাদ হাকিম। সি ভি আনন্দ বোস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:৪৪
Share: Save:

মেয়র এবং মন্ত্রী পদে থেকে কি দু’তরফ থেকেই আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন ফিরহাদ হাকিম? এই প্রশ্নের জবাব চেয়ে নবান্নে চিঠি পাঠালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ থেকে শুরু করে, রাজভবনের অন্দরমহলে কলকাতা পুলিশের নজরদারির অভিযোগ তুলে নবান্নের সঙ্গে সংঘাত জিইয়ে রেখেছেন রাজ্যপাল। এরই মধ্যে এ বার ফিরহাদের মতো শাসকদলের প্রথম সারির নেতার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বোস। ফিরহাদ কি দু’টি পদে বসে আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। রাজভবন সূত্রে খবর, গত সপ্তাহেই এই বিষয়ে উত্তর জানতে চেয়ে নবান্নে চিঠি পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এখনও নবান্ন থেকে কোনও জবাব আসেনি। আর ফিরহাদ স্বয়ং রাজ্যপালের এমন প্রশ্নকে পাত্তাই দিতে চাননি।

২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে কলকাতা পুরসভার মেয়র হন ফিরহাদ। সেই সময় রাজ্যের পুরমন্ত্রী ছিলেন তিনি। ২০১১ সাল থেকেই তাঁকে এই দফতরের দায়িত্বে রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের পর তাঁর দফতর বদল হলেও মন্ত্রী পদে রয়ে গিয়েছেন তিনি। পরিবহণ এবং আবাসন মন্ত্রীর দায়িত্বের সঙ্গে কলকাতার মেয়র পদও রয়েছে তাঁর কাছেই। ২০২২ সালে তাঁর হাত থেকে আবাসন দফতর নিয়ে আবারও পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ২০২২ সালের অগস্ট মাসে পরিবহণ দফতরও ছাড়তে হয় তাঁকে। মন্ত্রিসভায় বার বার তাঁর দফতর বদল হলেও, গত প্রায় চার বছর তিনি কলকাতা মেয়রের পদে রয়েছেন। তাঁর এই দু’টি পদে থেকে যাওয়া নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল।

ঘটনাচক্রে, ফিরহাদকে ঘিরে রাজ্যপালের নবান্নে পাঠানো চিঠি প্রসঙ্গটি যখন প্রকাশ্যে আসে, সেই সময় তিনি রয়েছেন দিল্লিতে। সেখানে তৃণমূলের কর্মসূচিতে যোগদান করতে দু’দিনের জন্য দিল্লি গিয়েছেন কলকাতার মেয়র। যাওয়ার আগে ফিরহাদ বলে গিয়েছেন, ‘‘আমি রাজ্যপালের কোনও বক্তব্যে পাল্টা মন্তব্য করতে রাজি নই। এর আগে জগদীপ ধনখড়ও একই ভাবে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। তাই আমি কী ভাবে মন্ত্রী এবং মেয়র পদে রয়েছি তা আমার মুখ্যমন্ত্রী জানলেই হবে, রাজ্যপালের না জানলেও চলবে।’’

তবে ফিরহাদই নয়, এর আগে শোভন চট্টোপাধ্যায়ও একই ভাবে রাজ্যের মন্ত্রী এবং মেয়র পদে ছিলেন। ২০১০ সালে তৃণমূল দ্বিতীয় বার কলকাতা পুরসভা দখল করলে মেয়র হন শোভন। ২০১১ সালের বেহালা পূর্ব থেকে জিতে প্রথম বার বিধায়ক হলেও, তাঁকে মন্ত্রী করা হয়নি। কিন্তু ২০১৬ সালে শোভন দ্বিতীয় বার বিধানসভায় জিতলে তাঁকে আবাসন এবং দমকল দফতরের মন্ত্রী করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ২০১৮ সালে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মেয়র এবং মন্ত্রী দুই পদ থেকেই ইস্তফা দেন শোভন। সেই সময় বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে তড়িঘড়ি পুর আইন সংশোধন করে মেয়র পদে বসানো হয় ফিরহাদকে। সেই থেকেই তিনি ওই পদে রয়ে গিয়েছেন।

বর্তমান মেয়র রাজ্যপালের এমন প্রশ্নকে পাত্তা না দিতে চাইলেও, বোসের প্রশ্নকে যুক্তিসঙ্গতই বলছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ বলেন, ‘‘রাজ্যপাল সঠিক প্রশ্নই করেছেন। আমাদের সংবিধানে তিনটি স্তরে সরকার রয়েছে। কেন্দ্র, রাজ্য এবং স্থানীয় স্তরে। রাজ্য সরকারের মন্ত্রী যদি স্থানীয় প্রশাসনের অংশ হন, তাহলে তা স্বায়ত্তশাসনের অধিকারে হস্তক্ষেপ হয়। আমি এই বিষয় নিয়ে একটি মামলাও দায়ের করেছিলাম। যা এখন শুনানির অপেক্ষায়।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy