প্রতিবাদ: বিশিষ্ট জনেদের সভায় অপর্ণা সেন, শঙ্খ ঘোষ, দেবেশ রায় ও নবনীতা দেবসেন। মঙ্গলবার তপন থিয়েটারে। নিজস্ব চিত্র
নন্দীগ্রামের ঘটনার প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন তাঁরা অনেকেই। ২০১৯-এর এই অস্থির সময়ে কিন্তু নিজেরাই নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা জরিপ করার কথা বলছেন তাঁরা। নির্বাচনোত্তর-পর্বে বাংলায় অশান্তি এবং সাম্প্রদায়িক হিংসার বাড়বাড়ন্তেই মঙ্গলবার নাগরিক সভা ডেকেছিলেন সংস্কৃতি জগতের কয়েক জন ব্যক্তিত্ব। এ দিন সন্ধ্যায় কালীঘাটের একটি প্রেক্ষাগৃহে শোনা গেল তাঁদের আত্মসমীক্ষার স্বর।
সভার নেপথ্যে ‘মূল আহ্বায়ক’ শঙ্খ ঘোষ নিজে কিছু বলেননি। তবে বাঙালির রক্তে অসাম্প্রদায়িকতার উপাদান বিপন্ন হয়ে পড়ছে বলে দেবেশ রায়, নবনীতা দেবসেন, অশোক মুখোপাধ্যায়, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তরা ছিলেন যারপরনাই বিচলিত। লেখক-সমাজকর্মী হর্ষ মান্দারের লেখা থেকে পড়ে ঘৃণার জবাবে পাল্টা ঘৃণা না-ছড়িয়ে যুক্তিতে, সংলাপে তার মোকাবিলা করার কথা বলছিলেন অপর্ণা সেন। তৃণমূল ও বিজেপির প্রতিযোগিতামূলক ‘ধর্মপরায়ণতা’ নিয়ে হতাশাও ফুটে উঠেছে। চিত্রশিল্পী ওয়াসিম কপূরের আক্ষেপ, ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনিতে মুখ্যমন্ত্রীর উত্তেজিত প্রতিক্রিয়ার ফল ভাল হচ্ছে না।
‘‘আমাদের পেশাগত, ব্যক্তিগত, পারিবারিক জীবনটাও রাজনৈতিক দলের ছায়ায় জড়িয়ে পড়ছে’’, বলে আফসোস করছিলেন অধ্যাপক সুকান্ত চৌধুরী। তাঁর মতে, ‘ক’ দলের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে ‘খ’, কিংবা ‘খ’য়ের প্রতি বিরক্ত হয়ে ‘গ’, ‘ঘ’, ‘ঙ’ দলের ধামা ধরার প্রবণতা বিপজ্জনক। বাঙালি কেন স্বকীয় হতে পারে না? বিভাস চক্রবর্তী স্বীকার করলেন, পঞ্চায়েত ভোটে হিংসার মতো কিছু অন্যায় নিয়ে বিশিষ্টরা ঠিক সরব হননি। কোনও রাজনৈতিক দলের কমিটিতে না-ঢুকে বিশিষ্টদের স্বতন্ত্র পথে হাঁটার কথা বলছিলেন কৌশিক সেন। দল না দেখে সমাজ-রাজনীতির সঙ্কটে ঘন ঘন সরব হওয়ার পক্ষেই ঐকমত্য উঠে এল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy