ছবি— পিটিআই।
সকাল থেকে দুপুর, শনিবার মধ্য কলকাতার মল্লিকবাজারের বেসরকারি হাসপাতালের আটতলার কার্নিশে চলল রুদ্ধশ্বাস নাটক। মই নিয়ে দৌড়োদৌড়ি, হইচই, চিৎকার, চেঁচামেচি— হল সবই, কিন্তু আট তলার কার্নিশে বসে থাকা রোগীকে উদ্ধার করা গেল না। ঘণ্টা দেড়েক কার্নিশে বসে থাকার পর, পড়ে গেলেন একেবারে নrচে। আশপাশের গিজগিজে ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে প্রশাসন তখন হতবাক দর্শক!
আট তলায় হাসপাতালের এইচডিইউ বিভাগে আচমকাই হইচই। ৩৩ বছরের সুজিত অধিকারী বিছানা থেকে উঠে জানালার দিকে যাচ্ছেন। এক জন নার্স তা দেখতে পেয়ে তাঁকে থামান। সুজিত তাঁকে কামড়ে দিতে যান। রোগীর আচমকা এমন ব্যবহারে হতচকিত হয়ে পড়েন নার্স। সেই সুযোগে তাঁর হাত ছাড়িয়ে সুজিত এক লাফে জানালা পেরিয়ে কার্নিশে।
সুজিত কার্নিশে চলে যেতেই হইচই শুরু হয়ে যায় মল্লিকবাজারের ওই বেসরকারি হাসপাতালে। সঙ্গে সঙ্গে খবর যায় দমকল, পুলিশ এবং সুজিতের আত্মীয়দের কাছে। মিনিট পনেরোর মধ্যে পৌঁছে যায় দমকল, পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দল। হাসপাতালে কর্মী ও নিরাপত্তারক্ষীরা সুজিতকে ফিরে আসতে বলতে থাকেন। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেননি তিনি।
হাসপাতালে এসে পৌঁছন সুজিতের পিসি। তাঁকে দ্রুত আট তলার খোলা জানালার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পিসি ভাইপোকে বুঝিয়ে ফিরিয়ে আনতে পারবেন, মনে করা হয়েছিল এমনটাই।
পিসি: আজই তোকে ছুটি করে দিচ্ছে… আমরা বাড়ি ফিরে যাব। তুই চলে আয়।
সুজিত: ইউনিফর্ম পরা সবাইকে চলে যেতে বল। গেটের সামনে থেকে সরে যেতে বল।
পিসি: কেউ আসবে না। তুই চলে আয়।
সুজিত সে কথায় কর্ণপাত না করে কার্নিশের আরও ধারে চলে যান। দু’হাত দু’পাশে ছ়ড়িয়ে কিছু বলতে থাকেন। হাঁটু মুড়ে বসার চেষ্টা করেন। নীচে তখন ভিড় জমতে শুরু করেছে।
খবর পেয়ে ওই বেসরকারি হাসপাতালে চলে আসেন সুজিতের এক ভাই। জানালা দিয়ে ভাইয়ের গলা পেলে গলতে পারেন সুজিত, এমন ভেবে ভাইকে এগিয়ে দেওয়া হয়। ভাই বেশ রাগত ভাবে সুজিতকে ফিরে আসতে বলেন। এ বারও কোনও কাজ হয় না।
সুজিত সকাল থেকে কিছুই তেমন খাননি। তাই স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর খিদে লেগেছিল। এ কথা আঁচ করে খাবার দেওয়ার কথা বলা হয় তাঁকে। তাতে কর্ণপাত করেননি। এর পর এগিয়ে দেওয়া হয় জলের গেলাস। তাতেও নড়ানো যায়নি সুজিতকে।
সুজিতের পরিবার সূত্রে খবর, তিনি মদ খেতে পছন্দ করেন। কার্নিশ থেকে ফিরিয়ে আনতে এ বার মদের টোপ দেওয়া হয়। সুজিতের পিসি ভাইপোকে বলেন, কার্নিস বেয়ে তিনি ফিরে এলে, মদ দেওয়া হবে। তাতেও কর্ণপাত করেন না সুজিত। শেষ একটি বোতল এনে কার্নিশে বসে থাকা সুজিতকে দেখানো হয়।
কিছুতেই কথা শুনছেন না দেখে সুজিতের দুই সন্তানকে ভিডিয়ো কলে ধরেন পিসি। মোবাইলের পর্দায় সন্তানেরা বাবার সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু তত ক্ষণে জানালার ধার থেকে বেশ অনেকটা সরে একটি কোণের মুখে পৌঁছে গিয়েছেন সুজিত। দুই ছেলের কাতর আর্তিও পৌঁছয়নি বাবার কানে।
আট তলায় হাসপাতালের এইচডিইউ বিভাগে আচমকাই হইচই। ৩৩ বছরের সুজিত অধিকারী বিছানা থেকে উঠে জানালার দিকে যাচ্ছেন। এক জন নার্স তা দেখতে পেয়ে তাঁকে থামান। সুজিত তাঁকে কামড়ে দিতে যান। রোগীর আচমকা এমন ব্যবহারে হতচকিত হয়ে পড়েন নার্স। সেই সুযোগে তাঁর হাত ছাড়িয়ে সুজিত এক লাফে জানালা পেরিয়ে কার্নিশে।
সুজিত কার্নিশে চলে যেতেই হইচই শুরু হয়ে যায় মল্লিকবাজারের ওই বেসরকারি হাসপাতালে। সঙ্গে সঙ্গে খবর যায় দমকল, পুলিশ এবং সুজিতের আত্মীয়দের কাছে। মিনিট পনেরোর মধ্যে পৌঁছে যায় দমকল, পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দল। হাসপাতালে কর্মী ও নিরাপত্তারক্ষীরা সুজিতকে ফিরে আসতে বলতে থাকেন। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেননি তিনি।
হাসপাতালে এসে পৌঁছন সুজিতের পিসি। তাঁকে দ্রুত আট তলার খোলা জানালার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পিসি ভাইপোকে বুঝিয়ে ফিরিয়ে আনতে পারবেন, মনে করা হয়েছিল এমনটাই।
পিসি: আজই তোকে ছুটি করে দিচ্ছে… আমরা বাড়ি ফিরে যাব। তুই চলে আয়।
সুজিত: ইউনিফর্ম পরা সবাইকে চলে যেতে বল। গেটের সামনে থেকে সরে যেতে বল।
পিসি: কেউ আসবে না। তুই চলে আয়।
সুজিত সে কথায় কর্ণপাত না করে কার্নিশের আরও ধারে চলে যান। দু’হাত দু’পাশে ছ়ড়িয়ে কিছু বলতে থাকেন। হাঁটু মুড়ে বসার চেষ্টা করেন। নীচে তখন ভিড় জমতে শুরু করেছে।
খবর পেয়ে ওই বেসরকারি হাসপাতালে চলে আসেন সুজিতের এক ভাই। জানালা দিয়ে ভাইয়ের গলা পেলে গলতে পারেন সুজিত, এমন ভেবে ভাইকে এগিয়ে দেওয়া হয়। ভাই বেশ রাগত ভাবে সুজিতকে ফিরে আসতে বলেন। এ বারও কোনও কাজ হয় না।
সুজিত সকাল থেকে কিছুই তেমন খাননি। তাই স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর খিদে লেগেছিল। এ কথা আঁচ করে খাবার দেওয়ার কথা বলা হয় তাঁকে। তাতে কর্ণপাত করেননি। এর পর এগিয়ে দেওয়া হয় জলের গেলাস। তাতেও নড়ানো যায়নি সুজিতকে।
সুজিতের পরিবার সূত্রে খবর, তিনি মদ খেতে পছন্দ করেন। কার্নিশ থেকে ফিরিয়ে আনতে এ বার মদের টোপ দেওয়া হয়। সুজিতের পিসি ভাইপোকে বলেন, কার্নিস বেয়ে তিনি ফিরে এলে, মদ দেওয়া হবে। তাতেও কর্ণপাত করেন না সুজিত। শেষ একটি বোতল এনে কার্নিশে বসে থাকা সুজিতকে দেখানো হয়।
কিছুতেই কথা শুনছেন না দেখে সুজিতের দুই সন্তানকে ভিডিয়ো কলে ধরেন পিসি। মোবাইলের পর্দায় সন্তানেরা বাবার সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু তত ক্ষণে জানালার ধার থেকে বেশ অনেকটা সরে একটি কোণের মুখে পৌঁছে গিয়েছেন সুজিত। দুই ছেলের কাতর আর্তিও পৌঁছয়নি বাবার কানে।
এই মধ্যেই হাজির হয় দমকলের ৬৫ মিটারের প্ল্যাটফর্ম ল্যাডার বা অতিকায় মই। কিন্তু সেই মই নিয়ে কাছাকাছি আসতেই সুজিত আবার বেগড়বাই শুরু করেন। জানিয়ে দেন, ইউনিফর্ম পরা কেউ কাছে এলেই ঝাঁপ দেবেন তিনি। অগত্যা আবার মই নামিয়ে আনা হয়। আট তলার কার্নিশের ওই অংশের তলায় একটি ছাদের উপর পাতা হয় একাধিক ফোম। যাতে সুজিত উপর থেকে লাফ দিলে, ওই ফোমের গদিতে পড়েন। এর মধ্যেই কেটে গিয়েছে এক ঘণ্টারও বেশি সময়। বিভিন্ন ভাবে সুজিতকে কথা বলে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা তখনও জারি।
এরই মধ্যে সুজিতের পিসির মোবাইলে বাড়ি থেকে ফোন আসে। উদ্দেশ্য ছিল, সুজিতকে বাড়ির অন্যান্যদের সঙ্গে কথা বলিয়ে বুঝিয়ে শুনিয়ে ফিরিয়ে আনা। সেই ফোনটি ধরতে যেতেই পিসি বাইরে নতুন করে হইচইয়ের আওয়াজ পান। উঁকি দিয়ে দেখেন, নীচে পড়ে যাচ্ছেন ভাইপো। ঘড়ির কাটা তখন দুপুর একটা ছুঁইছুঁই।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy