(বাঁ দিক থেকে) জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বিশ্বজিৎ দাস এবং শঙ্কর আঢ্য। — নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (বালু)-এর টাকা শঙ্কর আঢ্যকে পৌঁছে দিতেন বিশ্বজিৎ দাস! রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে এমনটাই দাবি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ইডি। ইডির দাবি, শঙ্করের কাছে বালুর যে টাকা পৌঁছত, তা হাওয়ালার মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রায় বদলে ফেলা হত। পাচার করে দেওয়া হত দুবাইয়ে। সেই কাজেও প্রত্যক্ষ ভাবে সহযোগিতা করতেন বিশ্বজিৎ। ইডি দাবি করেছে, বালুর যে ২০০০ কোটি টাকা শঙ্করের মাধ্যমে দুবাই পাঠানো হয়েছে, সেই টাকার একটা অংশ দুবাইয়ে গিয়ে নিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ। তবে ইডির হাতে ধৃত বিশ্বজিতের দাবি, তাঁর সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। বিশ্বজিৎ জানিয়েছেন, তিনি কোনও রাজনৈতিক নেতা নন, এক জন ব্যবসায়ী।
শুক্রবার সকালে বিশ্বজিৎকে নিয়ে সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বার হন ইডি আধিকারিকে.রা। কলকাতার ইডি দফতর থেকে বেরোনোর সময় বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। আমি এক জন ব্যবসায়ী। আমি কোনও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘শঙ্কর আঢ্যকে চিনতাম, তবে তাঁর সঙ্গে কোনও ঘনিষ্ঠতা ছিল না।’’ যদিও শঙ্করের প্রাক্তন ম্যানেজার হিসাবে পরিচিত ছিলেন বিশ্বজিৎ। বছর চারেক তিনি শঙ্করের সঙ্গে কাজ করেছেন বলেও সূত্রের খবর।
মঙ্গলবার রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর বুধবার বিশ্বজিৎকে রেশন ‘দুর্নীতি’ মামলায় গ্রেফতার করে ইডি। সল্টলেক থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। তিনি বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং ওই একই মামলায় ধৃত শঙ্কর ওরফে ডাকুর ঘনিষ্ঠ বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের সূত্রে খবর। ইডির একটি সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সল্টলেকে বিশ্বজিতের প্রাসাদোপম বাড়িতে যখন তল্লাশি চলে, তখন ব্যবসায়ী বাড়িতে ছিলেন না। পরে অবশ্য তিনি বাড়িতে আসেন। এর পর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। মঙ্গলবার সকালে গ্রেফতার হন তিনি।
গত ৫ জানুয়ারি বনগাঁয় শঙ্করের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল ইডি। প্রায় ১৭ ঘণ্টা তল্লাশির পর রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ফরেক্স বা বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচার ব্যবসা বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধানের। তাঁর এবং তাঁর আত্মীয়-পরিজনদের নামে ৯০টির বেশি ফরেক্স সংস্থা রয়েছে। ইডি আদালতে জানিয়েছে, ওই সংস্থার মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে লেনদেন করেছেন শঙ্কর। তার মধ্যে অন্তত ৯ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা রাজ্যের মন্ত্রী তথা রেশন মামলায় ধৃত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। এর পরেই দুবাইতে শঙ্করের একটি সংস্থার খোঁজ পায় ইডি। এখন তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, বিশ্বজিৎও শঙ্করের মতো ফরেক্স বা বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তাঁর সঙ্গে রেশন মামলার বেশ কিছু যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। শঙ্করের মতো দুবাই-যোগেরও অভিযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, রেশন দুর্নীতি মামলায় এর আগে গ্রেফতার হয়েছেন ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান। ইডি গ্রেফতার করেছে রাজ্যের বনমন্ত্রী বালুকে। তাঁর সূত্র ধরে গ্রেফতার করা হয় বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্করকে। এর পর শঙ্কর ‘ঘনিষ্ঠ’ বিশ্বজিৎকে গ্রেফতার করেছে ইডি। অর্থাৎ, তিনিই রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া চতুর্থ ব্যক্তি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy