বন্ধ: দাঁড়িয়ে আছে পণ্যবোঝাই ট্রাক। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
কার-পাস নিয়ে জটিলতার জেরে বুধবার সকাল থেকে পেট্রাপোল দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পণ্য নিয়ে ট্রাক চলাচল বন্ধ। মঙ্গলবার দুপুর থেকেই কাজ ব্যাহত হতে শুরু করেছিল।
ট্রাক চালকদের কার-পাস তৈরির কাজ করেন দু’দেশের ক্লিয়ারিং এজেন্টরা। ওই কাজের সূত্রে তাঁদের উভয় দেশের মধ্যে যাতায়াত করতে হয়। অনেক দিন ধরেই এই কাজ করে আসছেন এজেন্টরা। পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আচমকা বিএসএফের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কার-পাস তৈরির জন্য ক্লিয়ারিং এজেন্টরা দু’দেশের মধ্যে যাতায়াত করতে পারবেন না। ফলে দু’দেশের ক্লিয়ারিং এজেন্টরাই কার-পাস তৈরির কাজ করতে পারছেন না। বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’’
বন্দরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, মূলত নিরাপত্তার যুক্তিতেই এই নির্দেশ। অতীতে ক্লিয়ারিং এজেন্ট সোনার বিস্কুট পাচার করতে গিয়ে ধরাও পড়েছে।
কার-পাস কি?
দু’দেশে ট্রাক চালকদের এক ধরনের স্বচিত্র পরিচয়পত্রই হল কার-পাস। কারপাস করতে হলে নির্দিষ্ট একটি ফর্ম পূরণ করতে হয় চালকদের। তাতে চালক ও খালাসির নাম-ঠিকানা, ট্রাকের নম্বর, গাড়ির চ্যাসিস নম্বর, কোন পণ্য নিয়ে যাচ্ছে, পণ্যের পরিমাণ কত— এ সব ফর্মে লিখতে হয়। শুল্ক দফতরের কর্তাদের তাতে সই থাকে। পেট্রাপোল-বেনাপোল বন্দর দিয়ে দু’দেশের মধ্যে পণ্য নিয়ে যাওয়া ট্রাক চালকদের কার-পাস নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। তা ছাড়া চালকেরা যাতায়াত করতে পারেন না। কয়েক বছর আগে পেট্রাপোল-বেনাপোল বন্দর এলাকায় এই পাস চালু করে দু’দেশের সরকার।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, কারপাস শুল্ক দফতরের কর্তাদের করে দেওয়ার কথা। কয়েক বছর আগে যখন কার-পাস চালু হয়েছিল, তখন কয়েক দিন দু’দেশের শুল্ক দফতরের কর্তারা কার-পাসের আবেদনপত্র পূরণ করার কাজ করেছিলেন। কিন্তু কর্মীর অভাবে তাঁরা ওই কাজ করতে পারেন না।
দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ক্লিয়ারিং এজেন্টদের। প্রায় আট বছর ধরে ক্লিয়ারিং এজেন্টরা কার-পাস তৈরির কাজ করে আসছিলেন। ট্রাক চালকেরা অনেকেই লেখাপড়া জানেন না। ইংরেজি লিখতে পারেন না। ফলে তাঁরা কার-পাসের জন্য নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করতে পারেন না। কিন্তু কারপাস করতে হলে দু’দেশের ক্লিয়ারিং এজেন্টদের এ ভাবে যাতায়াত করতে হয় কেন?
এক ক্লিয়ারিং এজেন্ট জানান, এ দেশ থেকে পণ্য নিয়ে কোনও ট্রাক চালক বেনাপোলে ঢুকতে গেলে তাঁরা ওই চালকের কার-পাসের ফর্ম পূরণ করেন। তারপরে বেনাপোলে গিয়ে বাংলাদেশের শুল্ক দফতরের কর্তাদের ওই ফর্মে সই করান। ফর্ম নিয়ে এ দেশে এসে তাঁদের শুল্ক আধিকারিকদের দিয়ে ফর্মে সই করানো হয়। তারপরে ট্রাক চালকদের হাতে কার-পাস তুলে দেওয়া হয়। ট্রাক এরপরে পণ্য নিয়ে বেনাপোলে ঢোকার অনুমতি পায়। ও দেশের ক্লিয়ারিং এজেন্টরা ও দেশের ট্রাক চালকদের জন্য একই ভাবে কাজ করেন।
নিজেদের সংগঠন থেকে দেওয়া পরিচয়পত্র দেখিয়ে ক্লিয়ারিং এজেন্টরা দু’দেশের মধ্যে যাতায়াত করেন। কার্তিক বলেন, ‘‘বিএসএফ জানিয়েছে কেন্দ্রের নির্দেশ, তাই আমরা কার-পাসে জন্য ও দেশে আসতে পারব না। বিষয়টি শুল্ক দফতর-সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে জানানো হয়েছে।’’ শুল্ক দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, সমস্যা দ্রুত মেটাতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy