যুদ্ধের বলি: ইউক্রেনের ডোনেৎস্ক অঞ্চলের এক শিক্ষাকর্মীর নিথর দেহ। শুক্রবার। ছবি রয়টার্স
শুক্রবার বিকেলে যখন এই লেখা তৈরি করছি, তার কিছু আগেই সাইরেন বেজেছে। সতর্কবার্তা। মার্শাল আইন জারি হওয়ার পরে বেশ কয়েক বার সতর্ক করে সাইরেন বাজানো হয়েছে। পরিস্থিতি আরও বদলে গেলে আমাদের হয়তো অন্যত্র সরে যেতে হবে। এখন এখানে কনকনে ঠান্ডা। তাপমাত্রা প্রায় ৪ ডিগ্রির নীচে।
বৃহস্পতিবার আমার অ্যাপার্টমেন্টে যারা জেগেছিল, বেশি রাতে তারা বার কয়েক বোমার শব্দ শুনেছে। বাইরে থেকে খাওযা-দাওয়া সেরে ঘরে ফিরে আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। একটা সাইরেনের শব্দে ঘুম ভেঙেছিল। শুক্রবার সকালে রাস্তায় গিয়ে দেখলাম, হাওয়ায় বারুদের গন্ধ। আমাদের এই জায়গাটা থেকে ১০- ১২ কিলোমিটার দূরে রাতে বোমার মতো কিছু পড়েছে।
রাজধানী কিয়েভ দখল হয়েছে, পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র দখল হয়ে গিয়েছে— এ সব খবর পেলেও ইউক্রেনে আমাদের এই জ্যাপরোজিয়া শহরে এখনও ভয়ের তেমন কিছু দেখছি না। আমরা জ়্যাপরোজিয়া মেডিকেল ইউনিভার্সিটির ডাক্তারির ছাত্ররা এই অ্যাপার্টমেন্টে থাকি। আমি তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। ছোট্ট এই শহর থেকে কিয়েভ ঘণ্টা আটের রাস্তা। করোনার সময় যেমন লকডাউন হয়েছিল, একরকম সে ভাবেই আছি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে একটু বেরিয়েছিলাম। এটিএম-এ দরকার ছিল। রাস্তায় ভিড় না থাকলেও এটিএম-এ বিশাল লাইন পড়ে গিয়েছে মানুষের। এখানে এটিএমের ব্যবস্থাটা একটু আলাদা। দোকানের সঙ্গে। দোকান, মল, বাজার সবই খোলা আছে। জিনিসপত্রও পাওয়া যাচ্ছে। শপিংমলগুলোতেও দেখলাম ভিড়। হয়তো যুদ্ধের
কথা ভেবেই মানুষ কিছু জিনিস বেশি বেশি কিনে রাখতে চাইছেন। মলগুলোর ক্যাশ কাউন্টার দেখলেই বোঝা যাচ্ছিল। এত জিনিসপত্র বিক্রি হচ্ছে যে বাক্সগুলো ভরে যাচ্ছিল। একটার পর একটা বাক্স বদলাতে হচ্ছিল।
জল, বিদ্যুৎ, মোবাইল ফোনের সংযোগ, ইন্টারনেট সবই আছে। এখনও সে সবের কোনও সমস্যা নেই। বেলেঘাটার বাড়িতে যোগাযোগ রাখছি। বাবা- মায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী ১২ মার্চ আমার দেশে ফেরার বিমান ধরার কথা। ফিরে যাব। তবে এই পরিস্থিতিতে বিমানের টিকিটের দাম এক লাফে তিনগুণ বেড়ে গেছে। ৪০- ৫০ হাজারের টিকিট আর এখন পাওয়াই যাচ্ছে না। এক লাখ-দেড় লাখ হয়ে গেছে। আর সরাসরি ফ্লাইটের ভাড়া তো দু’লাখ হয়ে গেছে মনে হয়। এখন অপেক্ষায় আছি, কখন ভারত সরকার আমাদের ফেরার ব্যবস্থা করে।
লেখক জ়্যাপরোজিয়ায় পাঠরত ডাক্তারি ছাত্র
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy