—প্রতীকী ছবি।
প্রায় আড়াই মাস ধরে চলা নির্বাচনী প্রচার শেষ হল আজ। বাকি কেবল শনিবারের শেষ দফা নির্বাচন। প্রচারের শেষ দিনে রীতিমতো উজ্জীবিত বিজেপি শিবিরের দাবি, তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসতে চলেছে দল। যদিও ইন্ডিয়া মঞ্চের নেতারা তা মানতে রাজি নন।
বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, সাত দফা নির্বাচনের গোড়ার দিকে প্রত্যাশিত আসন না পেলেও, যত ভোট গড়িয়েছে তত নিজেদের গুছিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে দল। পাঁচ বছর আগে লোকসভা নির্বাচনে ৩০৩টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। সপ্তম দফা নির্বাচনের আগে বিজেপির অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষণ হল, সব মিলিয়ে এ বারেও ২৯৫-৩০৫টি আসন একার জোরে জিততে চলেছে তারা। তবে কোনও ভাবেই চারশো আসন ছোঁয়া যে সম্ভব নয়, তা শেষ দফা ভোটের আগে স্বীকার করে নিচ্ছেন বিজেপি নেতারা।
টানা তিন বার ক্ষমতা দখলে নেমে গোড়াতেই চারশো আসনের উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু বিজেপি শিবিরের বক্তব্য, প্রথম দু’দফা নির্বাচনের পরেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে এ বারে বিজেপির পক্ষে কোনও ঝড় নেই। উল্টে সমর্থনের চোরাস্রোত রয়েছে বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের পক্ষে। সূত্রের মতে, প্রথম দুটি পর্বে ভোটদানের প্রবণতা দেখে সরকার ধরে রাখা যাবে কি না, তা নিয়েই আশঙ্কা তৈরি হয় দলের মধ্যে। বিজেপির এক নেতার ব্যাখ্যা, ‘‘নির্বাচনের শুরু থেকেই ৩২৫ আসন জেতার লক্ষ্য নিয়ে এগোনো হচ্ছিল। কিন্তু প্রথম দু’দফার নির্বাচনে দল রীতিমতো ধাক্কা খায়।’’ সমীক্ষা করে দেখা যায়, প্রথম দু’দফার নির্বাচনের প্রবণতা যদি বাকি ছ’টি পর্বে বজায় থাকে, সে ক্ষেত্রে দল কুড়িয়ে বাড়িয়ে ২৫০-২৬০টি আসন পেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সরকার গড়তে শরিক-নির্ভরতা অনেকাংশেই বেড়ে যাবে। সমীক্ষায় দেখা যায়, বিজেপির আসন হ্রাস পরোক্ষে কংগ্রেসের আসন প্রাপ্তিকে এক ধাক্কায় প্রায় দ্বিগুণ করে দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে কংগ্রেস প্রায় ৯০-৯৫টি আসন জয়ের জায়গায় পৌঁছে যাবে বলেই মনে করছিল গেরুয়া শিবির।
বিজেপি সূত্রের দাবি, চতুর্থ দফার পর থেকে পরিস্থিতি ইতিবাচক হতে শুরু করে। বিশেষ করে হিন্দু-মুসলমান বিভাজনের রাজনীতিকে হাতিয়ার করে প্রচারে নামার পর থেকেই ধীরে ধীরে হিন্দু ভোটের মেরুকরণ হয়। বিজেপির ওই নেতার কথায়, ‘‘প্রথম দু’দফার ধাক্কায় নড়েচড়ে বসে দল। তৃতীয় পর্ব থেকেই দল অনেকটাই ঘর গুছিয়ে নিতে সক্ষম হয়। যার ইতিবাচক ফল দেখা যায় পরবর্তী পর্বের ভোটগুলিতে।’’ তৃতীয় থেকে ষষ্ঠ পর্ব পর্যন্ত যে ভাবে ভোট হয়েছে, তাতে আশবাদী বিজেপি নেতৃত্ব। দলের বক্তব্য, বর্তমান পরিস্থিতিতে ৩২৫ আসন না হলেও, গত বারের মতো একক ভাবে ৩০০ আসন পাওয়ার কাছাকাছি পৌঁছে যেতে সমস্যা হবে না। দলের বিশ্লেষণ, বিজেপি যদি একক ভাবে ৩০০-র কাছাকাছি আসন পায়, সে ক্ষেত্রে সার্বিক ভাবে এনডিএ জোটের শক্তি গিয়ে দাঁড়াবে ৩৫০-৩৭০। সেই পরিস্থিতিতে গত বারের মতোই কংগ্রেস নেমে আসবে ৫০-৬০ আসনে। ইন্ডিয়া জোট খুব বেশি হলে ১৪০-১৫০টির কাছাকাছি পেতে পারে বলেই মনে করছেন বিজেপি নেতারা।
যদিও বিজেপির এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন ইন্ডিয়া জোটের নেতারা। তাঁদের মতে, বাস্তবে প্রতিটি রাজ্যেই আসন হারাতে চলেছে বিজেপি। বিশেষ করে মহারাষ্ট্রে গত বারের চেয়ে অন্তত ১০ থেকে ১২টি আসন বেশি পাবেন বিরোধীরা। বিহার ও উত্তরপ্রদেশ— দুই রাজ্যে সব মিলিয়ে ডজনখানেক আসন কমবে বিজেপির। গেরুয়া শিবিরের আসন কমবে হরিয়ানা, দিল্লি, রাজস্থানেও। বিরোধীদের মতে, পশ্চিমবঙ্গেও বিজেপির আসন বৃদ্ধি দূরে থাক, কমপক্ষে তিন থেকে চারটি আসন কমার সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণে কর্নাটকে গত বার ২৮টির মধ্যে ২৫টি আসন জিতেছিল বিজেপি। এ বারে আসন প্রাপ্তির চিত্রটি সম্পূর্ণ পাল্টে যাবে বলেই দাবি করছে শাসক দল কংগ্রেস। কেরল ও তামিলনাড়ুতে বিজেপির খাতা খোলার সম্ভাবনা কম। একমাত্র তেলঙ্গনা ও অন্ধ্রপ্রদেশে সব মিলিয়ে ১০টি আসন বাড়লেও
বাড়তে পারে। কিন্তু তা দিয়ে কোনও ভাবেই অন্যান্য রাজ্যের ঘাটতি মেটানো সম্ভব নয় বলেই দাবি করেছে ইন্ডিয়া জোট। কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশের কথায়, ‘‘ইন্ডিয়া জোট ইতিমধ্যেই ম্যাজিক সংখ্যা পেরিয়ে গিয়েছে। সরকার গড়ার দোরগোড়ায় রয়েছে তারা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy