ফাইল চিত্র।
শুধু কম নয়। বেবাক শূন্য!
বাংলার একাধিক স্বাস্থ্যজেলায় করোনার বুস্টার ডোজ় গ্রাহকের পরিসংখ্যান তালিকায় স্বাস্থ্যকর্তাদের বেজায় অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে এই আদি ও অকৃত্রিম ‘শূন্য’ সংখ্যাটি!
শুধু বেসরকারি হাসপাতালে ১৮ থেকে ৫৯ বছর বয়সিদের বুস্টার ডোজ় দেওয়া শুরু হয় গত ১৬ মার্চ। কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পশ্চিম বর্ধমানের কিছু শহরাঞ্চল বাদ দিলে বাকি জেলায় প্রথম থেকেই বুস্টার ডোজ় নেওয়ার হার অত্যন্ত কম। কারণ, বেশির ভাগ জেলায় বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম এতে আগ্রহ দেখায়নি।
রাজ্যে মোট ২৫১০টি বেসরকারি হাসপাতালে বুস্টার ডোজ় দেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা ও পশ্চিম বর্ধমানেই রয়েছে ২২১২টি। অর্থাৎ বাকি সব জেলা মিলিয়ে সাকুল্যে মাত্র ২৯৮টি হাসপাতালে এই ডোজ় পাওয়া যাচ্ছে। ফলে বহু জেলার অনেক মানুষ তা নিতে চাইলেও নেওয়ার মতো হাসপাতাল খুঁজে পাচ্ছেন না। মে মাসের শেষে এসে দেখা যাচ্ছে, একাধিক স্বাস্থ্যজেলায় ১৮-৫৯ বছর বয়সি বুস্টার ডোজ় নেওয়া মানুষের সংখ্যা ‘শূন্য’। অর্থাৎ সেই সব জেলায় ওই বয়ঃসীমার কেউ সেই ডোজ় নিতেই পারেননি!
চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, প্রকোপ স্তিমিত হয়ে এলেও করোনা বিদায় নিয়েছে, এমন নয়। আবার নতুন কোনও ঢেউ আসবে না, সেটাও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না তাঁরা। তার উপরে ১৮-৫৯ বছর বয়সিদের বুস্টার দেওয়া শেষ করার একটা সময়সীমাও স্থির করেছে কেন্দ্র। তাই বুস্টার ডোজ় নেওয়ার এমন শোচনীয় পরিসংখ্যান চিন্তায় ফেলেছে বঙ্গীয় স্বাস্থ্যকর্তাদের। এর জন্য মূলত কেন্দ্রের ভ্রান্ত নীতিকেই দায়ী করছেন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, সরকারি ক্ষেত্রে ১৮ থেকে ৫৯ বছর বয়সিদেরও বুস্টার ডোজ়ে নেওয়ার ছাড়পত্র দেওয়া হলে পরিস্থিতি এতটা খারাপ হত না।
বিষ্ণুপুর, নন্দীগ্রাম, ঝাড়গ্রাম, কালিম্পং, ডায়মন্ড হারবার, দক্ষিণ ও উত্তর দিনাজপুর, পুরুলিয়া, রামপুরহাটের মতো স্বাস্থ্যজেলায় মাসে বুস্টার ডোজ়ের হিসেব শূন্যে ঠেকেছে। রাজ্য পরিবার কল্যাণ আধিকারিক অসীম দাস মালাকার বলেন, ‘‘আগামী ন’মাসে রাজ্যে ১৮-৫৯ বছর বয়সি অন্তত চার কোটি মানুষের বুস্টার ডোজ় শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। সেই হিসেবে মাসে পাঁচ লক্ষেরও বেশি মানুষকে এই ডোজ় নিতে হবে। কিন্তু ১৫ মার্চ থেকে ২৬ এপ্রিলের মধ্যে কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন মিলিয়ে মাত্র ৫৭,২৮৩ জন এই ডোজ়
নিয়েছেন। অর্থাৎ সংখ্যাটা এক লক্ষেরও
ধারেকাছে পৌঁছয়নি। ১ মে-২৪ মে পর্যন্ত নিয়েছেন মাত্র ৭৮,৩৭০ জন। সেখানেও লক্ষে পৌঁছনো যায়নি।’’
বুস্টার নেওয়ার ক্ষেত্রে কলকাতার সঙ্গে জেলাগুলির পার্থক্যও অত্যন্ত প্রকট। ১ মে থেকে ২৪ মে কলকাতায় ১৮-৫৯ বছর বয়সিদের মধ্যে বুস্টার নিয়েছেন ৩৯,৯৩৪ জন, সেখানে কোচবিহার নিয়েছেন ৯৭, মুর্শিদাবাদে ৩১, ডায়মন্ড হারবারে ৯৫, দক্ষিণ দিনাজপুরে মাত্র ৩০ জন। নন্দীগ্রাম, বিষ্ণুপুর, ঝাড়গ্রাম, কালিম্পংয়ের মতো স্বাস্থ্যজেলায় সংখ্যাটা সেই ‘০’!
বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলির সংগঠনের প্রধান আলহাজউদ্দিনের মতে, অনেকেই মনে করছেন, কোভিডের ভয়াবহতা আর নেই। ফলে বুস্টার নিতে হবে না। আবার অনেকে ৩৮৬ টাকা খরচ করে বুস্টার নিতে হবে ভেবে পিছিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা ভাবছেন, সরকারি হাসপাতালে যখন ১৮ থেকে ৫৯ বছর বয়সিদের নিখরচায় বুস্টার দেওয়া চালু হবে, তখন নিলেই হবে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy