Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

Kali Puja 2021: চুনো মাছের ১২ রকমের ভোগ রাঁধেন বাগদিরা, কাঁকড়াও প্রসাদ চুনোকালীর!

শহর এবং শহরতলীর উজ্জ্বল আলোকমালা থেকে দূরে পূর্ব বর্ধমান জেলা পূর্বস্থলী এক প্রান্তিক গ্রাম বিদ্যানগরের কোবলায় পূজিত হন দেবী চুনোকালী।

খড়ের চালা থেকে দেবী বিলেকালী এখন বাস করেন কংক্রিটের মন্দিরে।

খড়ের চালা থেকে দেবী বিলেকালী এখন বাস করেন কংক্রিটের মন্দিরে। নিজস্ব চিত্র।

অমিত রায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২১ ১২:৩৯
Share: Save:

বৃহস্পতিবার শ্যামাপুজো। কলকাতা-সহ বারাসত-নৈহাটির মতো শহরতলিও দীপান্বিতা আমাবস্যায় আলোর রোশনাইয়ে সেজে উঠবে। শহর ও শহরতলির উজ্জ্বল আলোকমালা থেকে দূরে পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী এক প্রান্তিক গ্রাম। সেই গ্রামের বিদ্যানগরের কোবলায় পূজিত হন দেবী ‘চুনোকালী’। এই চুনোকালীকে কেউ কেউ আবার ডাকেন ‘বিলেকালী’ বলেও। খাল-বিলে ভরা গ্রাম এই বিদ্যানগর। এখানকার বেশিরভাগ মানুষ পেশায় মৎস্যজীবী, সমাজের নজরে তাঁরা বাগদি। মূলত জেলে-বাগদিদের হাতেই পূজিত হন দেবী কালী। এই পুজোর বিশেষত্ব হল, ১২ রকমের মাছের ভোগ দেওয়া হয় বিলেকালীকে। সেই ভোগ আবার রাঁধেন জেলে বাগদিরাই। তাঁদের জালে খাল বিল থেকে ধরে আনা মাছই তৈরি হয় দেবীর ভোগ।

কোবালা এলাকার চাঁদের বিলের পাড়ে আয়োজিত এই পুজোর ভোগে নিবেদন করা হয় চুনোমাছ থেকে কাঁকড়া। ১২ রকমের পদের বেশির ভাগই ভাজা পদ। ১) কাঁকড়া, ২) সোনা খড়কে মাছ ভাজা, ৩) মৌরলা মাছ ভাজা, ৪) পুঁটি মাছ ভাজা, ৫) খয়রা ভাজা, ৬) ল্যাটা ভাজা, ৭) বেলে মাছ ভাজা, ৮) কই মাছ ভাজা, ৯) শিঙি মাছ ভাজা, ১০) মাগুর মাছ ভাজা, ১১) ধ্যাদা মাছ ভাজা, ১২) চাঁদা ও খলসে মাছ ভাজা। সঙ্গে এক বিশেষ ধরনের মাছের টক তৈরি হয় দেবীর নৈবেদ্য হিসাবে।

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ

আগে এই পুজো হত খড়ের চালার নড়বড়ে এক মন্দির। ২০০০ সালে এই পুজো তথা মন্দিরের দায়িত্ব নেন তৎকালীন এলাকার বিধায়ক স্বপন দেবনাথ। যিনি আবার বর্তমানে প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন বিকাশ মন্ত্রী। তিনিও দুলে, বাগদি, জেলেদের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছিলেন এই পুজোয়। তাঁর উদ্যোগেই খড়ের চালা থেকে দেবী বিলেকালী এখন বাস করেন কংক্রিটের মন্দিরে। তবে পুজোয় কোনও বাড়তি জাঁকজমক করতে নারাজ মন্ত্রী। কারণ, বিলে মাছ ধরা মানুষগুলোর আবেগ জড়িত এই পুজোর সঙ্গে। তাই তাঁদের অধিকারে হস্তক্ষেপ না করে পাশে থেকেই তাদের উৎসবে সামিল হতে চান স্থানীয় বিধায়ক।

তবে এই দেবীর নাম কী ভাবে চুনোকালী বা বিলেকালী হল? এমন কৌতূহলী প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেছেন, ‘‘হিন্দু ধর্মে বা শাস্ত্রে এমন কোনও কালীর কথার উল্লেখ নেই। যেহেতু এই পুজো খালের পাড়ে হয়, সেই খাল থেকে চুনো মাছ ধরেই এলাকার মানুষ নিজের জীবিকা নির্বাহ করেন, তাই সেই সব মানুষের মুখেমুখেই এই দেবী চুনোকালী বা বিলেকালী বলে পরিচিত হয়ে গিয়েছেন।’’ এমন একটি পুজো ও তাঁর সঙ্গে যুক্ত মানুষজনদের কথা মন্ত্রী স্বপন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। মুখ্যমন্ত্রী আবার বিলেকালী পুজোর জন্য একখানি কবিতাও লিখে পাঠিয়েছেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE