নিয়োগ মামলায় অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হল মঙ্গলবার থেকে। বিচার ভবনে গোটা বিচারপর্ব চলবে একটি রুদ্ধদ্বার কক্ষে (ইন ক্যামেরা)। যেখানে বাইরের কারও প্রবেশাধিকার নেই। এই মামলায় আগে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের বয়ান সংগ্রহ করার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সেই মতো বিচার ভবন থেকে ইডির কাছে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের নামের তালিকা চাওয়া হয়। প্রাথমিক ভাবে তিন জন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীর নাম আদালতে জমা দিয়েছে ইডি। সেই মতো মঙ্গলবার ওই তালিকায় থাকা প্রথম গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীর বয়ান সংগ্রহ করা হয় রুদ্ধদ্বার এজলাসে।
আদালত চত্বরে পার্থের আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী জানান, তিনি আজ ওই সাক্ষীকে এজলাসে কোনও প্রশ্ন করেননি। প্রথম এবং দ্বিতীয় সাক্ষীর ধরন একই। তাই দু’জনকে একসঙ্গে প্রশ্ন করতে চান তাঁরা।
বিচার প্রক্রিয়া ‘ইন ক্যামেরা’ (রুদ্ধদ্বার কক্ষে) চলার কারণে, কোন তিন জনকে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীর তালিকায় রাখা হয়েছে, তা প্রকাশ করা হয়নি। যে সাক্ষী এ দিন সাক্ষ্য দিতে এসেছিলেন, তিনি এক বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন। তিনি ওই সংস্থায় চাকরি করার সময় পার্থ তাঁদের কাছে কিছু নাম চেয়েছিলেন সংস্থার ডিরেক্টর বানানোর জন্য। ইডি সূত্রে খবর, তদন্ত চলাকালীন সাক্ষী এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে জানিয়েছিলেন।
নিয়োগ সংক্রান্ত ইডির এই মামলায় অভিযুক্তের তালিকায় ৫৪টি নাম রয়েছে। এর মধ্যে ২৮ জন ব্যক্তি এবং ২৫ টি সংস্থাকে অভিযুক্ত হিসাবে দেখানো হয়েছে চার্জশিটে। এ দিন পার্থ-সহ বাকি অভিযুক্তেরা সশরীরে উপস্থিত ছিলেন আদালতে।
ইডির এই মামলায় রাজ্যে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থের ইতিমধ্যে শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করেছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পার্থ জামিন পাবেন। তার আগেই চার্জ গঠন শেষ করে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের বয়ান সংগ্রহ করে ফেলার জন্য বলেছে শীর্ষ আদালত। সেই মতো ইতিমধ্যে চার্জ গঠন হয়ে গিয়েছে নিম্ন আদালতে। মঙ্গলবার থেকে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের বয়ান সংগ্রহ শুরু হল।
প্রায় আড়াই বছর আগে, নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ২০২২ সালের ২২ জুলাই দক্ষিণ কলকাতার নাকতলায় পার্থের বাড়িতে অভিযান চালায় ইডি। দীর্ঘ তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে হানা দেয় ইডি। টালিগঞ্জের ‘ডায়মন্ড সিটি’ আবাসনে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে নগদ ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে ইডি। একই সঙ্গে উদ্ধার হয় প্রচুর বিদেশি মুদ্রা এবং সোনার গয়নাও। সেই থেকে জেলে রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি, নিয়োগ মামলায় দুর্নীতির অন্যতম মূলচক্রী পার্থ।
গত ১৩ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট শর্তসাপেক্ষে পার্থের জামিন দেওয়ার সময় জানায়, চার্জ গঠন এবং গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের বয়ান সংগ্রহ হয়ে গেলে ১ ফেব্রুয়ারির আগেই জামিন পেতে পারেন তিনি। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মতো দ্রুত চার্জ গঠন প্রক্রিয়ার দিকে এগোয় বিচার ভবন। আদালতের শীতের ছুটির সময়েও পার্থদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের জন্য বিচার ভবনে বিশেষ আদালত বসে। এ বার চার্জ গঠন প্রক্রিয়া শেষ করে সাক্ষীদের বয়ান সংগ্রহ শুরু হল পার্থদের বিরুদ্ধে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy