শিবপুর আইআইইএসটি। —ফাইল চিত্র।
শুধু ছাত্রছাত্রীদের বোঝালেই হবে না। সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিপদ কতটা, সেটা অভিভাবকদেরও বোঝানো জরুরি বলে মনে করছেন শিবপুর আইআইইএসটি-র পড়ুয়া-গবেষকদের একাংশ। বিষয়টি শুধু তাঁদের চিন্তাভাবনার স্তরেই আটকে নেই। ওই আইনের বিরুদ্ধে লিফলেট বা প্রচারপত্র বিলির পরিকল্পনা করেছেন তাঁরা। মোট ১৩টি ভাষায় এই প্রচারপত্র ছাপানোর কাজ চলছে।
কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেবেন না। তাই জামিয়া মিলিয়া, আলিগড় ও জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া-শিক্ষকদের উপরে আক্রমণের প্রতিবাদে শিবপুর আইআইইএসটি-র পড়ুয়া-গবেষকেরা মিছিল করেছেন ক্যাম্পাসের বাইরে। সেই মিছিলে যোগ দিয়েছেন শিক্ষক, প্রাক্তনীরাও। মিছিলে স্লোগান উঠেছে, ‘আজাদ দেশ মে আজাদি। বিজেপি, আরএসএস সে আজাদি’...। এ বার ক্যাম্পাসের মধ্যেই সিএএ-র বিরোধিতা করে প্রচারপত্র বিলির পরিকল্পনা করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে এই কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়তে আসা পড়ুয়াদের মধ্যে তা বিলি করা হবে।
অন্যতম উদ্যোক্তা তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের গবেষক শৌভিক রায় শুক্রবার জানান, তাঁদের প্রতিবাদ ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়েও জানাতে পেরেছেন তাঁরা। এ বার প্রচারপত্র ছড়ানো হবে ক্যাম্পাসে পড়ুয়াদের মধ্যে। বহু ভাষাভাষীর ক্যাম্পাস। তাই বাংলা, হিন্দি, তামিল, তেলুগু-সহ ১৩টি ভাষায় প্রচারপত্র বিলি করা হবে। পড়ুয়াদের অনুরোধ জানানো হবে, তাঁরা যেন অভিভাবকদের এই প্রচারপত্র পড়তে দেন। সেই সঙ্গে ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়েও প্রচারপত্র ছড়ানো হবে। ‘‘আধুনিক রাষ্ট্রের কাছে ধর্মনিরপেক্ষতাই কাম্য। ধর্মভিত্তিক নাগরিকত্ব আইন মানবতা-বিরোধী। তাই এই আইনের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ চলবে,’’ বলেন শৌভিক।
আরও পড়ুন: টুইট-বোমা! বিজেপির অন্দরের সঙ্ঘাত প্রকাশ্যে মোদীর সফরের আগেই
কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খড়্গপুর আইআইটিতেও পড়ুয়ারা জামিয়া মিলিয়া এবং আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের উপরে পুলিশি হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। প্রতিবাদ জানিয়েছেন জেএনইউয়ের পড়ুয়া-শিক্ষকদের উপরে মুখোশধারীদের আক্রমণের বিরুদ্ধেও। তাঁদের প্রতিবাদ বিজেপি-সঙ্ঘ পরিবারের বিরুদ্ধেও। তবে সবই ক্যাম্পাসের বাইরে। সেই সব প্রতিবাদসভাতেও উঠেছে আজাদির স্লোগান। একদা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া, এখন খড়্গপুর আইআইটি-র ভূতত্ত্ব বিভাগের গবেষক অর্কপ্রভ মুখোপাধ্যায়ের দেওয়া সেই আজাদি স্লোগানের ভিডিয়ো এখন সামাজিক মাধ্যমে ঘুরছে। অর্কপ্রভ এ দিন বলেন, ‘‘এটা প্রতিবাদের সময়। যতই কর্তৃপক্ষের বারণ থাকুক, যে-কোনও উপায়ে প্রতিবাদ জানাব আমরা।’’
সাম্প্রতিক প্রতিবাদের ঝড় আছড়ে পড়েছে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটেও। অন্যতম প্রতিবাদী, গবেষক মন্মথ রায় জানান, তাঁরা ক্যাম্পাসের ভিতরে প্রতিবাদ মিছিল শুরু করে পরে বাইরে প্রদক্ষিণ করেছেন। সেই মিছিলে পা মিলিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরাও। সূত্রের খবর, আপত্তি থাকলেও কর্তৃপক্ষ সরকারি ভাবে মিছিল করতে না-দেওয়ার ব্যাপারে কিছু জানাননি।
প্রতিবাদ চলছে রাজ্যের অন্যতম কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্বভারতীতেও। গবেষক সাম্য দাস জানান, ওখানে প্রতিবাদ জানাতে তাঁরা কোনও অনুমতি নেন না।
তিনি বলেন, ‘‘এখানে কোনও ছাত্র সংসদ নেই। তাই কারা নেবে অনুমতি?এত বড় ক্যাম্পাসে কোনও একটা জায়গা নির্দিষ্ট করে নিয়ে প্রতিবাদ শুরু হয়। কিছু দিন ধরেই দেখা যাচ্ছে, প্রতিবাদে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে।’’
শিক্ষাঙ্গনে আক্রমণ প্রতিহত করতে কলকাতার বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, মেডিক্যাল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা একজোট হচ্ছেন। শুক্রবার তাঁরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সংগঠন জুটা-র দফতরে বৈঠকে বসেন। ২৮ জানুয়ারি কনভেনশন করে আগামী দিনের কর্মসূচি ঠিক করবেন ওই শিক্ষকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy