বেশির ভাগ অংশেই এই অবস্থায় ইছামতী। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
নদীর ধারে বড় হয়েছেন দেবব্রত চৌধুরী। শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা নদীতে দাপাদাপি করে সাঁতার শিখেছেন। জোয়ার-ভাটা খেলতে দেখেছেন নদীতে।
সেই দেবব্রতই নদীর দিকে তাকিয়ে সোমবার বললেন, ‘‘এখন শুধু কচুরিপানা। কে বলবে, এক সময়ে এই নদী ছিল কত মানুষের জীবন-জীবিকার আশ্রয়। এখন মশা-সাপখোপের আঁতুড়ঘর ।’’
নদীর নাম ইছামতী। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা এই নদীর নামেই রাজ্যে একটি নতুন জেলা তৈরি হতে চলেছে বলে এদিন ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বনগাঁর মানুষের প্রশ্ন, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতি বিজড়িত এই নদী তার আগের মহিমায় ফিরবে কি? দেবব্রতর কথায়, ‘‘ইছামতী নামে জেলা ঘোষণা হয়েছে, ভাল কথা। কিন্তু আমরা চাই, সম্পূর্ণ সংস্কার করে নদীকে আগের অবস্থায় ফেরানো হোক।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, অনেক দিন আগেই নদী গতি হারিয়েছে। পলি, কচুরিপানা জমে যাওয়ায় এখন আগের মতো আর জোয়ার-ভাটা খেলে না। গতিহারা নদী ফি বছর মানুষের দুর্দশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বনগাঁ শহরের নিকাশি ব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ছিল ইছামতী নদী। অতীতে বৃষ্টির জমা জল ইছামতী হয়ে বেরিয়ে যেত। এখন নদীর জলধারণের ক্ষমতা কার্যত নেই, তাই জল লোকালয়ে ঢুকে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দারা চাইছেন, সরকার যেন ইছামতীর সংস্কারের বিষয়ে পদক্ষেপ করে। বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়া বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ইছামতী নামে জেলা ঘোষণা করেছেন। অথচ, ইছামতী নদী যে দিন দিন মারা যাচ্ছে, সে দিকে সরকারের নজর নেই।’’
খাতায়-কলমে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের পাবাখালি এলাকায় চূর্ণী ও মাথাভাঙা নদীর সংযোগস্থলে মাথাভাঙা নদী থেকে ইছামতীর সৃষ্টি। যদিও এখন কার্যত কোনও উৎসমুখ নেই এই নদীটির। ২০০৫ সাল থেকে বিক্ষিপ্ত ভাবে কেন্দ্র ও রাজ্যের পক্ষ থেকে কয়েকবার পলি তুলে নদী সংস্কারের কাজ হলেও হাল ফেরেনি। বনগাঁ শহরে নদী ড্রেজিং করে কখনও পলি তোলা হয়নি। নদী বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, পাবাখালিতে ইছামতীর উৎসমুখ সংস্কার করা জরুরি।
বনগাঁর পুরপ্রধান গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘নদিয়ার পাবাখালিতে ইছামতীর উৎস মুখ সংস্কারের আবেদন করে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। নদীতে কচুরিপানার সমস্যা সমাধান করতে পুরসভার তরফে আধুনিক মেশিন কেনা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy