বুধবারই নন্দিনীকে সরানো সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করল নবান্ন। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যপালের প্রধান সচিবের পদ থেকে সরানোর জন্য আর্জি জানিয়ে নবান্নকে বার্তা দিয়েছিলেন সিভি আনন্দ বোস। রবিবার রাতে সবার আগে সেই খবর প্রকাশ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। এর পরে নীরব ছিল নবান্ন। কোনও রকম আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছিল না রাজভবনের পক্ষেও। সোম ও মঙ্গলবারের জল্পনা শেষে নন্দিনীকে যে আনন্দ সরাতে চান তা মেনে নিল নবান্ন। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, নন্দিনী পর্যটন দফতরের প্রধান সচিবের দায়িত্ব সামলাবেন।
গত শনিবার সকালে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে রাজ্যপালের বৈঠকের পর থেকেই রাজভবনের একের পর এক পদক্ষেপ রাজনৈতিক জল্পনা তৈরি করে। তারই সর্বশেষ পদক্ষেপ ছিল রাজ্যপালের প্রধান সচিবের পদ থেকে নন্দিনীকে সরিয়ে দেওয়া। সেই বার্তা নবান্নকে পাঠিয়েই দিল্লি চলে গিয়েছিলেন আনন্দ। সেখান তিনি উপরাষ্ট্রপতি তথা বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। মঙ্গলবার আনন্দ কলকাতায় ফেরেন। আর বুধবারই নন্দিনীকে সরানো সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করল নবান্ন।
নন্দিনী ১৯৯৪ ব্যাচের আইএএস অফিসার। অতীতে রাজ্যের বহু গুরুত্বপূর্ণ দফতরের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ উঠলেও অতীতে তাঁর সঙ্গে মমতার দূরত্ব তৈরি হওয়ার কথাও শোনা যায়। যদিও ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে নন্দিনী মমতার ‘প্রিয় পাত্রী’ হয়ে ওঠেন বলে জানা যায়। তখন শিল্পোন্নয়ন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও তথ্য সংস্কৃতি দফতরের সচিবের মতো গুরুদায়িত্ব তিনি একসঙ্গে সামলেছেন। পরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর মতানৈক্যের কারণে গুরুত্ব কমতে থাকে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা যায়।
প্রথমে তাঁকে নিগম থেকে সরানো হয়। পরে তথ্য সংস্কৃতিও কেড়ে নিয়ে পাঠানো হয় স্টেট গেজেটিয়ারের এডিটর পদে। সেখান থেকে সুন্দরবন উন্নয়ন। তার পর ফের প্রশাসনিক দিক থেকে প্রায় গুরুত্বহীন প্রেসিডেন্সি ডিভিশনে। সেই নন্দিনী রাজভবনে যাওয়ার পরে ফের ‘শাসকদলের লোক’ তকমা পান। রাজভবন সূত্রে খবর, সেই তকমার কারণেই তাঁকে সরতে হল। এখন মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের দফতরে গেলেন তিনি।
তবে এর পরে রাজ্যপালের প্রধান সচিবের দায়িত্ব কে পাবেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। নিয়ম বলছে, রাজ্য সরকারের তরফে নতুন কোনও আইএএস অফিসারকে নিয়োগ করা হবে। একাধিক নামের তালিকাও পাঠাতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রেও রাজ্যপাল নিজের অপছন্দ জানাতে পারেন। আবার আগে থেকেই নিজের পছন্দের কোনও নাম তিনি নবান্নকে জানাতে পারেন।
রাজ্যপাল হিসাবে আনন্দ শপথ নেওয়ার পর থেকে তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তুলতে শুরু করে বিজেপি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, এই ঘনিষ্ঠতার পিছনে নন্দিনীর ভূমিকা ছিল। রাজ্যপালের শপথ, সরস্বতী পুজোর দিনে ‘হাতেখড়ি’, সেন্ট জ়েভিয়ার্স কলেজের অনুষ্ঠান থেকে বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনে ভাষণ— এ সব নিয়ে নানা অভিযোগ তোলে বিজেপি। তার পরেই সুকান্ত যান রাজভবনে। রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এর পরেই নবান্নে যায় নন্দিনী সংক্রান্ত বার্তা। তার পরেই সরিয়ে দেওয়া হল নন্দিনীকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy