তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য
ছেলে বিজেপি-তে যোগ দিলে তিনি আটকাতে পারবেন না। এমনটাই জানালেন সিঙ্গুরের প্রবীণ তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। বুধবার দলীয় হুইপ মেনে বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিতে এসেছিলেন তিনি। ছেলে তুষার ভট্টাচার্য বিজেপি-তে যোগ দিতে চাইলে, তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করবেন না? এমন প্রশ্নের উত্তরে অশীতিপর বিধায়ক বলেন, ‘‘তুষার যথেষ্ট বড় হয়েছে। নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারে। রাজনীতির ক্ষেত্রে কোনও সিদ্ধান্ত নিলে তা হবে একান্ত ওঁর নিজের সিদ্ধান্ত। বাবা হিসেবে আমি ওকে মতামত দিতে পারি বা বলতে পারি। এর বেশি কিছু আমার পক্ষে করা সম্ভব হবে না।’’ এর পরেই তিনি আরও বলেন, ‘‘বড় ছেলের সঙ্গে তো আর বাবা হিসেবে লড়াই করতে পারি না। তাই যদি ও বিজেপি-তে যোগ দিতে চায়,তা হলে ওঁকে আটকাতে পারব না।’’
তুষার বিজেপি-তে যোগ দিতে চান— গত ২০ জানুয়ারি চন্দননগরের সভায় এমনটাই দাবি করেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। ঠিক তার পর দিনই আনন্দবাজার ডিজিটালকে রবীন্দ্রনাথবাবুর ছেলে বলেন, ‘‘শুভেন্দুদা যে দিন সিঙ্গুরে সভা করতে আসবেন সে দিনই আমি বিজেপি-তে যোগ দেব।’’ শুধু নিজে যাওয়া নয়, বাবা রবীন্দ্রনাথকেও তিনি বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করবে বলে জানিয়েছিলেন তুষার।
২০০১ সাল থেকে সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ। সিঙ্গুর আন্দোলনের অন্যতম মুখও ছিলেন তিনি। ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় আসার পরে মন্ত্রীও করা হয় তাঁকে। তবে ইদানীং দলের সঙ্গে অনেকটাই ‘দূরত্ব’ তৈরি হয়েছে। দ্বিতীয় দফার তৃণমূল সরকারে তিনি আর মন্ত্রিত্ব পাননি। সম্প্রতি হুগলি জেলায় তৃণমূলের নেতা তথা হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্নার সঙ্গে তাঁর মতোবিরোধ প্রকাশ্যে আসে। দ্বন্দ্ব মেটাতে হস্তক্ষেপ করতে হয় খোদ মমতাকে। তার পর থেকেই রবীন্দ্রনাথ বিজেপি-তে যোগ দিতে পারেন বলে জল্পনা তৈরি হয়। কিন্তু সেই জল্পনা স্পষ্ট ভাবেই নাকচ করে দিয়েছিলেন সিঙ্গুরের ‘মাস্টারমশাই’। তবে তুষার চান, তাঁর বাবা বিজেপি-তেই আসুন। তবে তিনি আসবেন কি আসবেন না সেই সিদ্ধান্ত রবীন্দ্রনাথের উপরেই ছাড়তে চান তুষার।
বাবা দীর্ঘ দিনের রাজনীতিক হলেও, এত দিন রাজনীতির সঙ্গে কোনও যোগ ছিল না তুষারের। কিন্তু সিঙ্গুরে তৃণমূলের গোষ্ঠী রাজনীতিতে বাবাকে ‘কোণঠাসা’ করার চেষ্টা হয়েছে বলেই সক্রিয় রাজনীতিতে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ছেলে, এমনটাই জানিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। তিনি বলেন, ‘‘আমার ছেলে হলেও ও রাজনীতি করত না। কিন্তু তৃণমূলে আমার বিরোধিরা যে ভাবে তুষার ও আমাকে দুনীর্তির অভিযোগে অভিযুক্ত করতে চেয়েছিল তা ও মেনে নিতে পারেনি। তাই এ সবের জবাব দিতেই রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্ত নেয়।’’ বিধায়কের কথায়, ‘‘এত বছরের রাজনৈতিক জীবনে কোনও দিন বিরোধিরা দুনীর্তির অভিযোগ তুলতে পারেনি। কিন্তু আমার নিজের দলের লোকেরাই যে ভাবে আমাকে কোণঠাসা করতে চেয়ে দুনীর্তির অভিযোগ তুলেছে, তাতে সত্যিই কষ্ট হয়েছে। ছেলে হিসেবে তুষারও আঘাত পেয়েছিল। তাই সেই আঘাত থেকে যদি কোনও সিদ্ধান্ত নেয় তা আমি বাবা হিসেবে আটকাতে পারব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy