তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, এর সঙ্গে অবৈধ কয়লা কারবারের যোগ থাকার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতীকী ছবি।
রবিবার জাতীয় সড়কের উপরে একটি গাড়ির ‘স্টেপনি’ (বদলি চাকা) থেকে মিলেছে ৯৩ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই নিয়ে শুরু হয়ে গেল রাজনৈতিক চাপানউতোর।
পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার বিকেলে জাতীয় সড়কে নাকা-তল্লাশিতে ধরা পড়ে, বিহারের নম্বরের একটি গাড়ির স্টেপনিতে বহু লক্ষ টাকা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, এর সঙ্গে অবৈধ কয়লা কারবারের যোগ থাকার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো অবশ্য সোমবার বলেন, ‘‘সব দিক খতিয়ে দেখছি। পাঁচ জনকে ধরা হয়েছে। তাঁদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’’ তিনি প্রাথমিক ভাবে জানান, রাজনৈতিক যোগ মেলেনি।
তবে এই নিয়ে শাসক-বিরোধী দু’পক্ষের মধ্যে দাবি, পাল্টা দাবি শুরু হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন দিল্লি যাওয়ার আগে অভিযোগ করেন, ‘‘হাওয়ালা বা টাকা আসছে বিজেপির হাত ধরে। টাকা, দুষ্কৃতী এবং বন্দুক আনছে তারা। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দিয়ে তারা তা আনছে। পুলিশ তাই খতিয়ে দেখতে পারছে না।’’ তার পরেই তিনি বলেন, ‘‘আমি বিজেপি নেতাদের অনুরোধ করব, রাজনৈতিক ভাবে লড়াই করুন, জোর জবরদস্তি করে নয়।” তাঁর কথার জবাবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘প্রমাণ করে দেখান! মুখ্যমন্ত্রী তো বলেছিলেন, পুরুলিয়ার চাকরি মেদিনীপুরে চলে গিয়েছে, কারা টাকা নিয়েছে সব জানি। তার পরে কী হল? কিছু প্রমাণ হল, আদালতে কিছু হল?’’ কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রসঙ্গে শুভেন্দুর কটাক্ষ, ‘‘যখন তখন এক জন মুখ্যমন্ত্রী হয়ে উনি কেন্দ্রীয় বাহিনীর অবমাননা করেন। উনি নিজে ২০০৯ থেকে ২০১১ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় ঘুরতেন। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেও আরপিএফ-কে ডেপুটেশনে রেখেছিলেন।’’
পুলিশ সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, উত্তর-পূর্ব ভারতের বৈধ বা অবৈধ কয়লা খাদান থেকে দেশের অন্যত্র কয়লা এবং তার লেনদেন বাবদ অর্থ উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলা পেরিয়ে যাতায়াত করে। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হচ্ছিল কি না, তা নিয়েও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, সূত্রের ভিত্তিতে খবর পেয়েই কালো রঙের এই এসইউভি-টি আটকে চালক-সহ পাঁচ আরোহীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় থানায় আনা হয় তাঁদের। তার পরেই স্টেপনি থেকে বার হয় রাশি রাশি কালো প্লাস্টিকের প্যাকেট, যেগুলির মধ্যে ছিল লক্ষ লক্ষ টাকা। টাকা গুনতে ব্যাঙ্ক থেকে গোনার যন্ত্র আনা হয়। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম ইমতিয়াজ আলম, মহম্মদ তৌফিক, মহম্মদ নওশাদ, মহম্মদ মোজাব্বিল এবং গুড্ডু রজক। সবার বয়স ২৪ থেকে ৩০-এর মধ্যে। গুড্ডু উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলার বাসিন্দা। বাকিদের বাড়ি বিহারের পূর্ণিয়ায়।
পুলিশ জেনেছে, পূর্ণিয়া থেকে টাকা নিয়ে রওনা হন চার যুবক। পথে গুড্ডুকে গাড়িতে তোলা হয়। সবাই কয়লার ব্যবসা করেন বলে দাবি করেছেন। কয়লা কেনার টাকা দিতে গুয়াহাটি যাওয়ার কথা পুলিশকে জানিয়েছেন। তবে টাকা ‘স্টেপনি’-তে লুকিয়ে কেন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এ দিন জলপাইগুড়ি আদালতে ধৃতদের ১০ দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘ধৃতদের মোবাইলের তথ্য যাচাই করে দেখা হচ্ছে। বিহার ও অসম পুলিশকে জানানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy