বিদায় মা: নবনীতা দেবসেনকে শ্রদ্ধা অন্তরা এবং নন্দনার। শুক্রবার বাংলা আকাদেমিতে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল
রবীন্দ্রনাথের দেওয়া নাম নবনীতা। বড় প্রিয় ছিল কবিগুরুর গান। তাই মায়ের মৃত্যুর সময় আগত জেনে বড় মেয়ে অন্তরা পাশে বসে ধরেছিলেন রবীন্দ্রনাথের গান। মাকে কোলে জড়িয়ে ধরে সুরে সুর মেলান ছোট মেয়ে নন্দনা। যা শুনতে শুনতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চির ঘুমের দেশে পাড়ি দিয়েছেন নবনীতা দেবসেন।
ক্যানসার ধরা পড়ার পরে গত কয়েক মাস শরীরটা মোটেই ভাল যাচ্ছিল না। কিন্তু মনে তার আঁচ লাগেনি। শুক্রবার অন্তরা বলেন, ‘‘শেষের দিকে মা লিখতে না পারলে বলতেন, আমরা লিখে নিতাম। বাবা (অমর্ত্য সেন) নিয়মিত খবর নিতেন। মায়ের সঙ্গে কথাও হত মাঝে মধ্যে।’’
নবনীতার প্রয়াণের খবর পেয়ে বৃহস্পতিবারই বহু মানুষ ভিড় করেছিলেন হিন্দুস্তান পার্কে ‘ভালো বাসা’-র বাইরে। কিন্তু নবনীতার দুই মেয়ের ইচ্ছায় বাইরের লোকের জন্য দরজা বন্ধই ছিল। শুক্রবার সকালে একে একে আসেন শঙ্খ ঘোষ, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, শ্রীজাতর মতো সাহিত্যিক, মালা রায়, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, রবীন দেবের মতো রাজনীতিকেরা। আসেন সস্ত্রীক রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
সাড়ে এগারোটা নাগাদ রজনীগন্ধায় ঢাকা দেহ শববাহী গাড়িতে রওনা দেয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে। দেশ-বিদেশের বহু প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করলেও যাদবপুরের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের সঙ্গেই অঙ্গাঙ্গী ভাবে জুড়ে ছিল নবনীতার নাম। সেখানে বর্তমান পড়ুয়ারা তো বটেই, শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন অনেক প্রাক্তনী, শিক্ষক নবনীতা যাঁদের স্মৃতিতে উজ্জ্বল। সকলে গলা মেলালেন, ‘তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে মম...’।
যাদবপুর থেকে নবনীতার দেহ নিয়ে যাওয়া হয় বাংলা আকাদেমিতে। সেখানে শ্রদ্ধা জানান জয় গোস্বামী, শাঁওলি মিত্র। জয় বলেন, ‘‘ছোট গল্প, রসগল্প লেখার এক অদ্ভুত ক্ষমতা ছিল নবনীতাদির। এমনকি অসুস্থতাকেও তুড়ি মেরে তিনি লিখে গিয়েছেন নিয়মিত।’’
দুপুর দেড়টায় কেওড়াতলা শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় নবনীতার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy