Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

২১টি কলেজেই ক্ষমতা ধরে রাখল টিএমসিপি

২১-০। রাজ্য-রাজনীতিতে নানা কারণে শাসক দলের বিড়ম্বনা বাড়ছে। তা সত্ত্বেও এ বারও হাওড়া জেলার প্রায় সব ক’টি কলেজে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ক্ষমতা ধরে রাখল তাদের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলি একযোগে টিএমসিপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ করলেও ঠারেঠোরে নিজেদের সাংগাঠনিক দুর্বলতার কথাও স্বীকার করেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাওড়া শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:০০
Share: Save:

২১-০।

রাজ্য-রাজনীতিতে নানা কারণে শাসক দলের বিড়ম্বনা বাড়ছে। তা সত্ত্বেও এ বারও হাওড়া জেলার প্রায় সব ক’টি কলেজে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ক্ষমতা ধরে রাখল তাদের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলি একযোগে টিএমসিপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ করলেও ঠারেঠোরে নিজেদের সাংগাঠনিক দুর্বলতার কথাও স্বীকার করেছে।

হাওড়া জেলায় ডিগ্রি ও কারিগরি কলেজ মিলিয়ে মোট ২১টি কলেজ রয়েছে। গত ২৮ জানুয়ারি একমাত্র মধ্য হাওড়ার নরসিংহ দত্ত কলেজের কয়েকটি আসনে নির্বাচন হয়েছে টিএমসিপির দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। অথচ, এ বছর মনোনয়ন পর্ব চলার সময়ে বেশ কয়েকটি কলেজে টিএমসিপিকে যথেষ্ট বেগ দিয়েছে এবিভিপি। তা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত দেখা গেল টিএমসিপি একতরফাই লড়াই জিতে গেল।

এবিভিপি নেতারা প্রকাশ্য টিএমসিপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুললেও আড়ালে স্বীকার করছেন সাংগাঠনিক দুর্বলতার কথা। নরসিংহ দত্ত কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র এবিভিপি নেতা শুভ গোলুইয়ের আক্ষেপ, ‘‘কলেজে আমাদের সংগঠন রয়েছে। স্থানীয় বিজেপি নেতারা সক্রিয় হলে এ বারই কলেজে খাতা খুলতে পারতাম। কিন্তু তা হল না।’’ একই দাবি ডোমজুড় আজাদ হিন্দ কলেজ, জগৎবল্লভপুর শোভারানি কলেজ, বালি লালবাবা কলেজ, আমতা রামসদয় কলেজ বা আন্দুল জগবন্ধু কলেজের এবিভিপি সদস্যদের।

এবিভিপির জেলা সংযোজক সুদীপ দেবনাথ বলেন, ‘‘বিভিন্ন কলেজে মনোনয়ন তুলতে গিয়ে আমাদের কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছে। তবে আমাদের রণকৌশলে কিছু ভুল ছিল। ফেব্রুয়ারিতে জেলা কমিটির বৈঠকে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করব।’’ যদিও জেলা বিজেপির একাধিক নেতার দাবি, বেশ কিছু কলেজে এবিভিপি সমর্থকদের পাশে ছিলেন তাঁরা। দলের হাওড়া (গ্রামীণ) সভাপতি গৌতম রায় বলেন, “জেলার কলেজগুলিতে টিএমসিপির মোকাবিলা করতে গেলে শক্তিশালী সংগঠন চাই। সেটা এখনও হয়নি।”

গঙ্গাধরপুর কলেজ, জয়পুর কলেজের ছাত্র পরিষদ সদস্যরাও সংগঠনের জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ তুলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্র পরিষদ সমর্থকদের অভিযোগ, কলেজে সংগঠন থাকলেও জেলা নেতৃত্ব তাদের গুরুত্বই দেন না। ফলে, ফাঁকা মাঠে গোল দিয়েছে টিএমসিপি। জেলা ছাত্র পরিষদ সভাপতি সইদ কুরেশির অবশ্য দাবি, ‘‘কর্মীদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই মনোনয়ন তুলতে জোর করিনি।’’

অন্য দিকে, বিভিন্ন কলেজে টিএমসিপির বিরুদ্ধে হুমকি, মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে এসএফআই। এ বার উলুবেড়িয়া কলেজে মনোনয়্ন তোলা নিয়ে টিএমসিপি-এসএফআই গোলমাল হয়। এসএফআইয়ের একটি কার্যালয় ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তবে, এবিভিপির মতো তারা সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা মানেনি। সংগঠনের হাওড়া জেলা কমিটির সভাপতি বিশ্বজিৎ ঘোষ (টকাই) বলেন, ‘‘প্রতিটি কলেজ ইউনিটকে নিয়ে আলাদা সম্মেলন করব। সেখানেই প্রমাণ হবে আমাদের সংগঠন আছে কী নেই।’’ যদিও ঘটনা হল, রাজ্যে পরিবর্তনের পর থেকেই হাওড়া জেলায় এসএফআইয়ের সংগঠনে ধস নেমেছিল। গত বছরও জেলার কোনও কলেজেই তারা মনোনয়ন তুলতে পারেনি।

বিরোধীদের কো্নও অভিযোগই মানতে চায়নি টিএমসিপি। তাদের দাবি, জেলায় বিরোধী ছাত্র সংগঠনের কোনও অস্তিত্ব নেই। স্থানীয় বিজেপি ও সিপিএমের পাশে পড়ুয়ারা নেই। জেলার গ্রামীণ এলাকার টিএমসিপি সভাপতি তুষার ঘোষ এবং ওই সংগঠনের শহরাঞ্চলের সভাপতি অঞ্জন টাকির দাবি, ‘‘আমরা সারা বছর ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে থাকি। তাই তাঁদের সমর্থন পেয়েছি।’’ তবে, এত মসৃণ জয়েও গোষ্ঠীকোন্দল এড়াতে না পারার অস্বস্তি কিন্তু চাপতে পারছে না টিএমসিপি। তাদের এক ছাত্রনেতার স্বীকারোক্তি, ‘‘জেলার দুই মন্ত্রীর ইগোর লড়াই ছাত্র সংগঠনে প্রভাব ফেলছে। তাই অনেক চেষ্টার পরেও নরসিংহ দত্ত কলেজে নিজেদের মধ্যে লড়াই আটকানো গেল না।”

অন্য বিষয়গুলি:

tmcp 21 college howrah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy