সারদা কাণ্ড-সহ নানা ঘটনায় ভাবমূর্তি জোর ধাক্কা খেয়েছে। সেই হারানো ভাবমূর্তি ফেরাতে শনিবারই কালীঘাটে এক বৈঠকে আসন্ন পুরভোটে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির লোককে প্রার্থী করার জন্য জোর দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নির্দেশমতো হুগলিতে প্রার্থী বাছাইয়ে নামছেন জেলা নেতৃত্ব। রবিবার ভদ্রেশ্বর পুরভবনে জেলার সব ক’টি পুরসভার চেয়ারম্যান এবং ভাইস-চেয়ারম্যানদের নিয়ে জেলা নেতৃত্বের বৈঠকে সেই ইঙ্গিতই মিলল।
তৃণমূল শিবিরের খবর, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মূলত চারটি বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে
১) অপরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির কাউকে প্রার্থী করা যাবে না।
২) কারও বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তাঁকে টিকিট দেওয়া চলবে না।
৩) সক্রিয় কর্মীদের টিকিট দেওয়ার ব্যাপারে যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে।
৪) দলের ভাল কর্মী, যাঁরা এত দিন টিকিট পাননি, তাঁদেরও টিকিট দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
এ দিনের বৈঠকে জেলার তিন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, রত্না দে নাগ এবং অপরূপা পোদ্দার ছাড়াও ছিলেন চন্দননগরের বিধায়ক অশোক সাউ, আরামবাগের বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা, দলের জেলা সভাপতি তথা পরিষদীয় সচিব তপন দাশগুপ্ত, কার্যকরী সভাপতি দিলীপ যাদব প্রমুখ। তপনবাবু বলেন, “জেলা থেকে আমরা প্রার্থী তালিকা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠাব। শেষ সিদ্ধান্ত দিদিই (মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়) নেবেন। প্রার্থী বাছাইয়ে এ দিন পাঁচ সদস্যের স্ক্রিনিং কমিটি গড়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা সদস্য সংগ্রহ অভিযানেও নামছি।”
জেলার ১৩টি পুরসভাতেই ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে তাদের মাথাব্যথা বাড়িয়েছে বিজেপি। চাঁপদানি, রিষড়া, বাঁশবেড়িয়া, শ্রীরামপুরের বেশ কিছু ওয়ার্ডে তৃণমূলকে পিছনে ফেলে এগিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থীরা। তৃণমূল সূত্রের খবর, বৈঠকে ঠিক হয়েছে, দলের ব্লক বা শহর সভাপতিদের সঙ্গে বসে পুরপ্রধান, উপ-পুরপ্রধানেরা প্রাথমিক ভাবে প্রার্থীদের নাম বাছাই করবেন। সেই তালিকা জমা দিতে হবে স্ক্রিনিং কমিটির কাছে। কমিটি তালিকা খতিয়ে দেখে তিন সাংসদকে দেবেন। তিন সাংসদ ও জেলা সভাপতি আলোচনা করে দলের রাজ্য কমিটির কাছে তালিকা পাঠিয়ে দেবেন। রাজ্য নেতৃত্বই চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রাথমিক প্রার্থী-তালিকা তৈরি করতে হবে। জেলার কয়েকটি পুরসভার চেয়ারম্যানদের গতবারের জেতা আসন সংরক্ষিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় তাঁদের অন্য আসনে দাঁড়ানো নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। বৈঠকে ভদ্রেশ্বরের সাসপেন্ড এক নেতার প্রসঙ্গ নিয়ে কিছু সমস্যাও হয়। গত পুর নির্বাচনের পরে দলবিরোধী কাজের জন্য ওই নেতাকে দল সাসপেন্ড করে। জেলার শীর্ষ স্তরের এক নেতা স্ক্রিনিং কমিটিতে ওই নেতার নাম রাখার জন্য বৈঠকে প্রস্তাব করেন। দিলীপবাবু তার প্রতিবাদ করেন। এমন এক জনকে প্রার্থী বাছাই করার ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিতে গেলে ভাবমূর্তির প্রশ্নই বড় হয়ে দেখা দেবে বলে গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ঠিক হয়, ওই নেতাকে স্ক্রিনিং কমিটিতে রাখা হবে না।
এ দিন দলের নতুন ভাবে সদস্য সংগ্রহের জন্যও আলাদা ভাবে জেলা সভাপতির নেতৃত্বে আর একটি ‘স্ক্রিনিং কমিটি’ গড়া হয়। সদস্য করা হবেন, তা প্রাথমিক ভাবে দেখভাল করবে দলের নিচুতলা। তারে সঙ্গে ওই কমিটি সংযোগ রাখবে বলে তৃণমূলের এক নেতা জানান। এ ক্ষেত্রেও ভাবমূর্তির বিষয়টির দিকে জোর দিতে বলা হয়েছে দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের। প্রোমোটার, ঠিকাদার বা দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কাউকে দলের সদস্য করার ক্ষেত্রে নেতৃত্বের ঘোর আপত্তির কথাও এ দিন জানিয়ে দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy