পঞ্চায়েত সমিতির পরে এ বার পঞ্চায়েত।
গ্রামীণ হাওড়ায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অব্যাহত। সোমবারই জগত্বল্লভপুরে পঞ্চায়েত সমিতির দলীয় সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন তৃণমূলের ১৬ জন সদস্য। ২৪ ঘণ্টা পরে, মঙ্গলবার সাঁকরাইলের থানা-মাকুয়া পঞ্চায়েতের প্রধান মঞ্জু সেনকে হারতে হল দলীয় সদস্যদের আনা অনাস্থার উপরে ভোটাভুটিতে। সেই অনাস্থা সমর্থন করেছেন বিরোধী সিপিএমের ছয় এবং কংগ্রেসের এক সদস্যও।
গত ১৭ অক্টোবর মঞ্জুদেবীর বিরুদ্ধে যথাযথ ভাবে উন্নয়ন করতে না পারা, স্বজনপোষণ-সহ নানা অভিযোগে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন দলীয় ৩ সদস্য। প্রস্তাব সমর্থন করেন সিপিএমের ৬ এবং কংগ্রেসের ১ সদস্য। পঞ্চায়েতের ১৭ সদস্যের মধ্যে এ দিন ভোটাভুটিতে ওই ১০ জনই প্রধানের বিরুদ্ধে ভোট দেন। বাকি সাত সদস্য ভোটাভুটিতে সামিল হননি। পঞ্চায়েতের মোট সদস্যের অর্ধেকের বেশি সদস্য অনাস্থার পক্ষে ভোট দেওয়ায় তা পাশ হয়ে যায় বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, নতুন বোর্ড গঠন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ রয়েছে। মঞ্জুদেবী তাঁকে অনৈতিক ভাবে সরানো হচ্ছে বলে আগেই মামলা করেছিলেন। আদালতের পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত নতুন বোর্ড গঠন করা যাচ্ছে না।
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা উন্নয়নের অভিযোগ মানেননি মঞ্জুদেবী। তিনি পরিস্থিতির জন্য দলীয় বিধায়ককেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, “পঞ্চায়েতের যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে। পঞ্চায়েতে দলের কিছু সদস্য সেই উন্নয়নের বিরোধিতা করতেই এই কাজ করেছেন। এর পিছনে বিধায়কের প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে।” মঞ্জুদেবীর অভিযোগ নিয়ে সাঁকরাইলের তৃণমূল বিধায়ক শীতল সর্দার কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, “এ নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।”
গত বছর ১৯ অগস্ট মঞ্জুদেবীকে প্রধান করে ওই পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়ে তৃণমূল। সেখানে মোট ১৭টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের দখলে রয়েছে ৯টি, সিপিএমের দখলে ৭টি এবং কংগ্রেসের ১টি। কিন্তু বোর্ড কাজকর্ম শুরুর প্রায় প্রথম থেকেই তৃণমূল সদস্য পলাশ বাছার মঞ্জুদেবীর বিরুদ্ধে উন্নয়ন করতে না পারার অভিযোগ তুলতে থাকেন। দলের আরও দুই সদস্যকেও তিনি পাশে পান। মূলত পলাশবাবুর উদ্যোগেই অনাস্থা আনা হয়।
এর আগে গত দু’মাসে গ্রামীণ হাওড়ায় ডোমজুড়ের কলোরা-১ এবং সলপ-১ পঞ্চায়েতেও দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলেন দলেরই বিরোধী গোষ্ঠীর সদস্যেরা। যার ফলে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বারবার সামনে আসছে বলে অভিমত জেলা তৃণমূলেরই একাংশের। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যেখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে না জড়ানোর জন্য নেতা-কর্মীদের সতর্ক করছেন, সেখানে কেন পঞ্চায়েত স্তরে তা ঠেকানো যাচ্ছে না? এ ব্যাপারে জেলা তৃণমূূল সভাপতি অরূপ রায় বলেন, “দলের নির্দেশ এ ভাবে অনাস্থা আনা যাবে না। যাঁরা এনেছেন, তাঁরা দলের নির্দেশ অমান্য করেছেন। দলীয় স্তরে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছি। সেই অনুযায়ী ওই সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তৃণমূলের তিন সদস্যের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এ দিনের অনাস্থায় পঞ্চায়েতে দলের ছয় সদস্য সমর্থন করায় তাঁদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। দলের সাঁকরাইল জোনাল কমিটির সম্পাদক নন্দলাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে আমাদের যে ছয় সদস্য তৃণমূলের অন্য গোষ্ঠীকে সমর্থন করেছেন, তাঁদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy