Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Gondolpara Jute mill

বন্ধ গোন্দলপাড়া চটকল খুলতে উদ্যোগী কর্তৃপক্ষ

আর্থিক মন্দা, শ্রমিক অসন্তোষ-সহ নানা কারণ দেখিয়ে ২০১৮ সালের ২৭ মে ওই জুটমিলে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

প্রকাশ পাল
চন্দননগর শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২০ ০৫:০৩
Share: Save:

কালো মেঘে ছেয়ে থাকা আকাশে হঠাৎ রূপোলি রেখা!

গোন্দলপাড়া জুটমিলের শ্রমিকদের কাছে ব্যাপারটা অনেকটা তেমনই। ঝাড়া দু’বছর পেরিয়ে গিয়েছে চন্দননগরের এই চটকলটি বন্ধ। সেই বন্ধ দরজা খুলতে উদ্যোগী হয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনাও সেরেছেন তাঁরা। কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। মালিকপক্ষের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। তবে সব প্রস্তাবে তাঁরা সহমত নয়।

আর্থিক মন্দা, শ্রমিক অসন্তোষ-সহ নানা কারণ দেখিয়ে ২০১৮ সালের ২৭ মে ওই জুটমিলে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। ফলে সেখানকার কয়েক হাজার শ্রমিক বেকায়দায় পড়েন। পরে লোকসভা ভোটের মুখে কয়েক দিনের জন্য কারখানা খোলে। ফের বন্ধ হয়ে যায়। উৎপাদন চালুর দাবিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন পথে নামে। সংবাদপত্রে লেখালেখি হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের তরফে বিশেষ হেলদোল দেখা যায়নি। সম্প্রতি পরিস্থিতির কিছুটা হেরফের ঘটেছে।

মিল সূত্রের খবর, গত ১৫ জুন মালিকপক্ষ মিলের ১১টি শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁরা মিল খুলতে চান। এই ব্যাপারে তাঁরা ৮ দফা প্রস্তাব দেন। তা নিয়ে শনিবার ফের দু’পক্ষের আলোচনা হয়। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন জানিয়েছে, মিল চালানোর ব্যাপারে তারা সব রকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। তবে কয়েকটি বিষয় মালিকপক্ষকে স্পষ্ট করতে হবে।

মিলের টিইউসিসি সম্পাদক রাজেশ জয়সোয়ারা, আইএনটিটিইউসি সম্পাদক পরিমল সিংহরায়, সিটু নেতা তথা প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক শিবপ্রসাদ ওরফে রতন বন্দ্যোপাধ্যায়দের বক্তব্য, কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের মে মাসে যে মহার্ঘ্যভাতা (ডিএ) ছিল, মিল খুললে সেই অঙ্ক থেকেই শুরু করা হবে। কিন্তু এই প্রস্তাব মানা সম্ভব নয়। মিলের টাইম অফিস বিভাগের কর্মী রাজেশ বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষের উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছি। সব সহযোগিতা আমরা করব। কিন্তু বর্ধিত ডিএ-র টাকা না দিলে কী করে চলবে!’’ মেকানিক বিভাগের কর্মী পরিমলেরও বক্তব্য, ‘‘কাজে যোগ দিতে শ্রমিক তৈরি। কিন্তু বর্ধিত ডিএ দেবে না, এটা হয় না। মেনে নিলে হয়তো এটাই নিয়ম হয়ে দাঁড়াবে।’’

আরও একটি বিষয় শ্রমিকদের ভাবাচ্ছে। তা হল, ইতিমধ্যে মিলের নাম পরিবর্তন হয়েছে বলে তাঁরা জেনেছেন। আগে মিলটি ছিল ‘রতনলাল এক্সপোর্ট লিমিটেড’-এর অধীনে। এখন এই চটকল ‘শক্তিগড় টেক্সটাইল অ্যান্ড ইনডাস্ট্রিজ লিমিটেড’-এর অধীন। মিল খোলা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি নতুন সংস্থার নামেই দেওয়া হয়েছে।

শ্রমিক নেতাদের বক্তব্য, কবে নাম পরিবর্তন করা হল, তাঁরা জানেন না। এই নিয়ে শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয়নি। শিবপ্রসাদবাবু বলেন, ‘‘বর্তমান শ্রমিকদের দায়দায়িত্ব, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের গ্র্যাচুইটি-সহ অন্যান্য পাওনার দায়িত্ব তো নতুন কোম্পানিকে নিতে হবে। ত্রিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টা ঠিক করা হোক।’’ পরিমলবাবুও বলেন, ‘‘আমরা চাই, শ্রমিকদের দায়দায়িত্বের বিষয়টা সরকারের ঘরে বসে ঠিক করা হোক। তা হলে কোনও জটিলতা থাকবে না। বিভ্রান্তিও থাকবে না।’’

বিভ্রান্তি এবং যাবতীয় জট কাটিয়ে চালু হোক উৎপাদন, এটাই চাইছেন শ্রমিকরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Gondolpara Jute mill
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE