মজুরি কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে শ্রমিকদের মধ্যে। ব্যাহত হচ্ছে কাজকর্ম। ঘটনাটি শ্রীরামপুরের রাজ্যধরপুরে একটি লোহার যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানায়।
হুগলি অ্যালয় অ্যান্ড স্টিল কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড নামে ওই কারখানাটি এক দশকেরও বেশি পুরনো। শ’তিনেক ঠিকাশ্রমিক কাজ করেন। এখানে রেলের প্ল্যাটফর্ম, সেতু, কারখানা, মোবাইল টাওয়ার-সহ বিভিন্ন নির্মাণে কাজে লাগে এমন লোহার যন্ত্রাংশ তৈরি হয়। উৎপাদিত সরঞ্জাম বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপালের মতো দেশে রফতানিও করা হয়। কারখানায় ফার্নেস (লোহা গলানো) ও রোলিং (গলানো লোহা থেকে যন্ত্রাংশ তৈরি) মিল এই দু’টি বিভাগ আছে। মূলত রোলিং মিলের শ্রমিকরেই সমস্যায় পড়েছেন। ওই বিভাগের শ্রমিকদের ক্ষোভ, নিয়ম অনুযায়ী এক ঘণ্টা কাজপিছু এক ঘণ্টা বিশ্রাম বরাদ্দ থাকে। অর্থাৎ ৮ ঘণ্টা কাজের জন্য ১৬ ঘণ্টা শ্রমিকদের কারখানায় থাকার কথা। ঘণ্টাপিছু ২০ টাকা ৮৩ পয়সা হিসেবে ১৬ ঘণ্টার মজুরি দেওয়া হয়। অভিযোগ, সম্প্রতি কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, ১৬ ঘণ্টা কারখানায় থাকলেও মজুরি দেওয়া হবে ৮ ঘণ্টার। এর প্রতিবাদেই শ্রমিকেরা আন্দোলনে নামেন। তারপরেই ৫২ জন ঠিকাশ্রমিককে বসিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
শ্রমিকদের তরফে প্রশাসন ও শ্রম দফতরে চিঠি দেওয়া হয়। শ্রমিকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৭ ও ৯ ফেব্রুয়ারি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকেন শ্রীরামপুরের সহকারী শ্রম কমিশনার সুকান্ত রায়চৌধুরী। দু’দিনই মালিকপক্ষের তরফে কেউ হাজির না হওয়ায় বৈঠক ভেস্তে যায়। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় বৃহস্পতিবারও। ফলে সমস্যার সমাধান অধরাই। সুকান্তবাবু বলেন, ‘‘মালিকপক্ষ গরহাজির থাকায় আলোচনা করা যায়নি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাচ্ছি।’’ উপ-শ্রম কমিশনার পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েই বিষয়টি দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’
শ্রমিক শেখ আব্দুল সাবুর, রাজু দাস , সুব্রত পাত্র বলেন, ‘‘দিনে ৩৩০ টাকা মজুরি পেতাম। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে এখন অর্ধেক পাব। এত কম টাকায় সংসার চলবে কী করে?’’ নতুন হারের বেতন গত দু’মাস তাঁরা নেননি। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘কারখানায় শাসকদলের শ্রমিক সংগঠন থাকলেও সেখানকার নেতারা কর্তৃপক্ষের কথা মেনে নেওয়ার পরামর্শ দেন। বুধবার সকালে কারখানার সামনে বিক্ষোভ দেখাতে গেলে পুলিশও সরে যেতে বলে।’’ কারখানার আইএনটিটিইউসি সভাপতি বিদ্যুৎ রাউত দাবি করেন, ‘‘বছর খানেক আগে সংগঠন তৈরি হওয়া থেকে শ্রমিকদের স্বার্থে লড়ছি। কিন্তু কিছু শ্রমিক আলোচনার রাস্তায় না হেঁটে কাজ বন্ধ করে নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। সংগঠনেরও পরোয়া করছেন না। তাতেই সমস্যা তৈরি হয়েছে।’’
কী বলছেন মালিক পক্ষ? কারখানার মালিক প্রেম অগ্রবালের সাফাই, ‘‘শ্রম দফতরে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল না বলে তাই যাইনি। প্রয়োজন হলে নিশ্চয়ই যাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy