কারখানার গেটের সামনে মহিলা শ্রমিকদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব িচত্র
মজুরি নিয়ে শ্রমিক-বিক্ষোভের জেরে কার্যত অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে পান্ডুয়ার রামেশ্বপুরের একটি বিয়ার কারখানায়। সোমবার এক টানা বিক্ষোভের জেরে কাজ হয়নি কারখানায়। গোটা ঘটনা শ্রম দফতরে জানানোর পাশাপাশি বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতির উপরে নজরে রাখছে প্রশাসনও। কারখানায় প্রায় ৪৫০ শ্রমিক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মহিলার সংখ্যা প্রায় ৩৩০।
কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্যার সূত্রপাত হয় রবিবার। এত দিন রবিবার কাজ করলে শ্রমিকেরা দ্বিগুণ মজুরি (ওভারটাইম) পেতেন। শ্রমিকদের একাংশের দাবি, রবিবার কাজে যোগ দিতে এসে শ্রমিকেরা জানতে পারেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ এক দিনের মজুরি দেবেন। শুরু হয় বিক্ষোভ। কাজে যোগ দিতে অস্বীকার করেন অনেকে।
কারখানা সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ওই সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা জানতে পারেন, কারখানায় কাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিক। অভিযোগ, ওই সময় বিক্ষোভরত কয়েক জন শ্রমিক কারখানায় ঢুকে কর্মরত শ্রমিকদের মারধর করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে পান্ডুয়া থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। ওই ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।
এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ প্রায় আড়াইশো মহিলা শ্রমিক কারখানা চত্বরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের দাবি, ওই ছয় শ্রমিকের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। রবিবার কাজ করলে দ্বিগুণ মজুরি দিতে হবে।
কারখানার ‘বোর্ড অফ ডিরেক্টরস’-এর সদস্য সুবীর সাহা বলেন, ‘‘কয়েকজন শ্রমিক কারখানার ভিতরে অন্য শ্রমিকদের মেরেছিল। ওই শ্রমিকেরাই অভিযোগ করেছেন।’’ মজুরি সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘করোনা-আবহে অনেকেই কারখানায় আসতে পারছেন না। রবিবার কাজ করলে এখন আর দ্বিগুণ মজুরি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা ফের দ্বিগুণ মজুরি দেব।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘কারখানার পরিস্থিতি শ্রম দফতরকে জানিয়েছি।’’ পান্ডুয়া ব্লক প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেন, ‘‘আমাদের নজরে ঘটনাটি এসেছে। আলোচনা চলছে। কী হয় দেখা যাক।’’
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের মধ্যে শুক্লা অধিকারী বলেন, ‘‘কারখানায় প্রায় সাড়ে তিনশো মহিলা শ্রমিক কাজ করেন। আগে ছুটির দিন বা রবিবার কাজ করলে দ্বিগুণ মজুরি পেতাম। এখন কর্তৃপক্ষ তা দিচ্ছেন না। তাই আমরা সকলে দাবি করেছি, আগের মতো মজুরি দিতে হবে।’’ তাঁর অভিযোগ: ‘‘ছ’জন শ্রমিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে কর্তৃপক্ষ। আমরা ওই মামলা তুলতে বলেছি। যত দিন না মামলা তোলা হচ্ছে, ততদিন আমরা কেউ কাজ করব না। এই কথা কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি।’’
বিক্ষোভ চলাকালীন সেখানে হাজির হন বিজেপি জেলা সভানেত্রী বেবি তিওয়ারি। তিনি বলেন, ‘‘শ্রমিকদের দাবির সঙ্গে আমরা সহমত। ছয় শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা তুলতে হবে। তবেই শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেবেন। রবিবার কাজ করলে দ্বিগুণ মজুরি দিতে হবে। ’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy