নিরাপত্তায়: কাশ্যপপুর গ্রামে চলছে রাত পাহারা। —নিজস্ব চিত্র
রাত বারোটা বাজলেই ওঁরা স্বামীর সঙ্গে এলাকায় বেরিয়ে পড়ছেন। কারও হাতে লাঠি, কারও হাতে টর্চ। রাতভর চলছে পাহারা। চোর-ছিনতাইবাজদের দৌরাত্ম্যে ওঁরা অতিষ্ঠ।
উলুবেড়িয়ার কুলগাছিয়া-তুলসীবেড়িয়া মোড়ের কাছে মুম্বই রোডের পাশে কুলগাছিয়া উত্তর এবং কাশ্যপপুর গ্রামে বেশ কয়েক মাস ধরে চুরি-ছিনতাই হচ্ছে। গ্রামবাসীরা আতঙ্কে ভুগছেন। পুলিশকে বলেও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। তাই গ্রামবাসীরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে শুরু করেছেন রাত-পাহারা।সঙ্গে স্ত্রী-রা কেন?
উত্তরটা দিলেন সুশ্বেতা বাগ। তিনি পেশায় শিক্ষিকা। সোমবার রাতেই হাতে লাঠি, মুখে বাঁশি নিয়ে স্বামীর সঙ্গে এলাকায় পাহারা দিচ্ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘একা ঘরে থাকতে ভয় করে। বাড়ির পুরুষেরা রাত জেগে এলাকা পাহারা দেন। তাই আমরা মহিলারাও ঠিক করেছি পালা করে পুরুষদের সঙ্গে পাহারা দেব।’’
কয়েক মাস ধরে চলছে এই রাত-পাহারা। সাড়ে ১১টা-১২টা থেকে শুরু হয় টহল। চলে ভোর ৩টে-সাড়ে ৩টে পর্যন্ত। কোন দম্পতি কবে পাহারা দেবেন, তা গ্রামবাসীরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ঠিক করে নিয়েছেন। দেবদুলাল বিশ্বাস নামে এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘রাত ১১টার পরে রাস্তা দিয়ে একা গেলেই ছিনতাই হচ্ছে। বাইকে দ্রুত গতিতে এসে পথ আটকে অস্ত্র দেখিয়ে ছিনতাই করে মুম্বই রোড ধরে পালাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। মুম্বই রোডে এখন পুলিশের টহল তেমন দেখা যায় না। সেই সুযোগটাই নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা।’’ টুটুন অধিকারী নামে এক মহিলা বলেন, ‘‘সন্ধ্যার পর থেকেই চিন্তায় থাকি যতক্ষণ না পর্যন্ত স্বামী ঘরে ফেরে।’’
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এলাকায় মদ ও সাট্টার ঠেকও চলে। সেখানে দুষ্কৃতীদের আড্ডা জমে। চুরি-ছিনতাইয়ের কথা অনেক বার পুলিশকে জানিয়ে সিসিক্যামেরার ফুটেজ পর্যন্ত তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। কী বলছে পুলিশ?
টহলদারি না-থাকার কথা মানতে চায়নি পুলিশ। জেলার (গ্রামীণ) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশিস মৌর্যের আশ্বাস, ওই এলাকা থেকে একটি অভিযোগ মিলেছে। তদন্ত হবে। ওই এলাকায় পুলিশের টহলদারি চলে। টহলদারি আরও বাড়ানো হবে।
গ্রামবাসীরা বলছেন, না আঁচালে বিশ্বাস নেই। এখনও কোনও ব্যবস্থা না হওয়ায় পুলিশের প্রতি তাঁদের ভরসা নেই। চুরি-ছিনতাই ঠেকাতে তাই তাঁরা নিজেরাই পাহারা দিচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy