ছেলেমেয়ের সঙ্গে বুধনিদেবী।—নিজস্ব চিত্র।
ছ’বছর আগে দুই শিশুসন্তান-সহ এক মহিলাকে কলকাতা থেকে উদ্ধার করেছিল শিশুকল্যাণ দফতর। তার পর তাঁর ঠিকানা হয় হুগলির কোন্নগরের একটি হোম। বুধনিদেবী নামে ওই মহিলার ছেলে আদিত্যের তখন তিন বছর বয়স। মেয়ে খুশির ৫ বছর। অনেক চেষ্টাচরিত্র করে বিহারের সুপল জেলায় তাঁর বাপেরবাড়ির খোঁজ পায় চাইল্ড লাইন। ছটপুজোর আগেই গত রবিবার ছেলেমেয়েকে নিয়ে সেখানেই ফিরেছেন বুধনিদেবী।
হুগলি জেলা চাইল্ড লাইন সূত্রের খবর, হিন্দিভাষী ওই মহিলা মানসিক ভাবে পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন না। সম্ভবত তিনি হারিয়ে গিয়েছিলেন। এখানে তাঁর চিকিৎসা এবং কাউন্সেলিং করানো হয়। আদিত্য ও খুশিকে স্কুলে ভর্তি করানো হয়। কয়েক মাস আগে মহিলার ঠিকানা খুঁজে বের করতে চাইল্ড লাইনকে বলে হুগলি জেলা শিশুকল্যাণ দফতর। এর পরেই জেলা চাইল্ড লাইন উঠেপড়ে লাগে। ভিন্ রাজ্যের বিভিন্ন জেলার চাইল্ড লাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মহিলার ছবি পাঠানো হয়। সম্প্রতি বিহারের সহর্ষ জেলার চাইল্ড লাইন খোঁজখবর করে জানায়, পাশের সুপল জেলায় মহিলার বাপের বাড়ি।
সুপল জেলায় চাইল্ড লাইনের দফতর নেই। সহর্ষের চাইল্ড লাইনের মাধ্যমেই ওই বাড়িতে যোগাযোগ করা হয়। বাড়ির লোকের সঙ্গে হুগলি চাইল্ড লাইনের লোকজন ফোন মারফত কথা বলেন। সহর্ষের চাইল্ড লাইনের আধিকারিক বালকিশোর ঝা জানান, মহিলার বাপের বাড়ি সুপল জেলার নির্মলী গ্রামে। তাঁর স্বামীরও খোঁজ মিলেছে।
দিন কয়েক আগে ওই মহিলা এবং শিশু দু’টিকে সেখানকার চাইল্ড লাইন দফতরে দিয়ে আসা হয়। হুগলি জেলা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর গোপীবল্লভ শ্যামল জানান, বাড়িতে মহিলার মা-বাবা আছেন। মহিলা শিশু দু’টিকে কয়েক দিন সেখানকার হোমে রাখা হয় আছেন। রবিবার বাপের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
গাঁয়ে ফিরে মহিলা খুশি। আনন্দিত চাইল্ড লাইনের লোকজনও। তবে, শুধু ওই মা-সন্তানই নয়, নিজের ঠিকানায় ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে ঝাড়খণ্ডের অমর বাস্কেও। মাস ছয়েক আগে ব্যান্ডেল জিআরপি থানার পুলিশ স্কুলের পোশাক পরা বছর নয়েকের ছেলেটিকে উদ্ধার করে। তারও ঠাঁই হয় কোন্নগরের হোমে। বাড়ির ঠিকানা বলতে পারেনি সে। কথা বলছিল সাঁওতালি ভাষায়। ঠিকানা বলেছিল ‘ঝাড়খণ্ড’।
চাইল্ড লাইনের বক্তব্য, ঝাড়খণ্ডের নানা জায়গায় খোঁজ চালিয়ে তার বাবা-মায়ের সন্ধান মিলেছে। তার বাড়ি দেওঘরের মথুরাপুর এলাকায়। তার পরিবারটি পিছিয়ে পড়া। ছেলেটি হারিয়ে যাওয়ার পরেও কোনও নিখোঁজ ডায়েরি করেনি তারা।
হুগলি চাইল্ড লাইনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কেউ হারিয়ে গেলে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা উচিত। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটের পোর্টালে বিষয়টি বিভিন্ন জায়গায় সরকারি দফতরে ছড়িয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে তা না হওয়ায় ঠিকানা খুঁজে বের করতে রীতিমতো বেগ পেতে হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy