Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
উদ্ধার প্রচুর বাজি, তবু সংশয় প্রশাসনে
cracker

বন্ধ হবে কি বাজিদূষণ, আজ রাতে পরীক্ষা

বাজি পোড়ানো বন্ধে আদালতের নির্দেশ কঠোর ভাবে কার্যকর করার দাবিতে বিভিন্ন সংগঠনের আন্দোলন চলছে। শুক্রবার ওই আর্জিতে উলুবেড়িয়া, শ্যামপুর, বাগনানে পদযাত্রা করে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

আর্জি: বাজির ব্যবহার বন্ধের আবেদন জানিয়ে শুক্রবার জাঙ্গিপাড়ায় মিছিল — ছবি: দীপঙ্কর দে

আর্জি: বাজির ব্যবহার বন্ধের আবেদন জানিয়ে শুক্রবার জাঙ্গিপাড়ায় মিছিল — ছবি: দীপঙ্কর দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া-উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২০ ০৫:০৪
Share: Save:

এ বার সব ধরনের বাজি পোড়ানোই নিষিদ্ধ। করোনা সংক্রমিতদের বাজির ‘বিষ’ থেকে বাঁচাতেই কলকাতা হাইকোর্টের এই নিষেধাজ্ঞা। আজ, কালীপুজো। বাজি পোড়ানো থেকে একশো শতাংশ মানুষকে বিরত করা প্রশাসনের কাছে নয়া চ্যালেঞ্জ। হাওড়া ও হুগলি জেলা পুলিশ-প্রশাসনের দাবি, তারা এই কাজে কোমর বেঁধেছে। প্রকাশ্যে বাজি বিক্রি কার্যত রুখে দেওয়া গিয়েছে। বাজি ধরতে অভিযান, ধরপাকড় চলেছে। প্রচারও চলছে। তবে, যাঁরা আগে বাজি কিনে ফেলেছেন, তাঁরা যাতে সেগুলি না পোড়ান, তা নিশ্চিত করাই পুলিশের মাথাব্যথা।

হুগলিতে চণ্ডীতলা, জাঙ্গিপাড়া, হরিপাল, ধনেখালি, খানাকুল, ডানকুনি-সহ নানা জায়গায় বাজি তৈরি হয়। গোটা বছর ব্যবসা চলে। তবে দুর্গাপুজোর সময় থেকেই মূল ‘সিজন’। এ বার কারবার জমে ওঠার আগেই আদালতের নির্দেশে পুলিশ অভিযানে নামে। হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সূত্রের খবর, শুক্রবার কয়েকশো কেজি বাজি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। আরামবাগ শহরের কয়েকটি দোকান থেকে প্রায় ৫০ কেজি বাজি উদ্ধার হয়। এ পর্যন্ত আরামবাগ মহকুমার চারটি থানা এলাকায় ৫০০ কেজিরও বেশি বাজি উদ্ধার হয়েছে। পুজো কমিটির কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে সতর্ক করা হয়েছে। বাজি বিক্রির সম্ভাব্য ফাঁক-ফোকরগুলিতে সাদা পোশাকের পুলিশ নজরদারি চালাচ্ছে।

এ দিন হরিপাল থেকে ৩৫ কেজি, জাঙ্গিপাড়া থেকে ৩৯ কেজি বাজি বাজেয়াপ্ত বয়েছে। সিঙ্গুর এবং ধনেখালিতে এই সংখ্যা যথাক্রমে ৪০ ও ৫৫ কেজি। গত কয়েক দিনে বলাগড়ে বিভিন্ন দোকানে তল্লাশি চালিয়ে ১০০ কেজিরও বেশি বাজি উদ্ধার হয়েছে। মগরায় এক ব্যক্তি ব্যাগে প্রায় ৪০ কেজি বাজি নিয়ে যাওয়ার সময় বমাল গ্রেফতার হন। চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ ডানকুনি থেকেও প্রচুর বাজি বাজেয়াপ্ত করে। জেলা সদর চুঁচুড়াতেও গত কয়েক দিনে ভাল পরিমাণ বাজি বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

তবে, বাজি পোড়ানো একেবারে বন্ধ থাকবে কিনা, তা নিয়ে পুলিশের একাংশই সংশয়ে। সূত্রের খবর, চণ্ডীতলার বেগমপুর, হরিপালের মালপাড়া, সিঙ্গুরের বাসুবাটীতে কারবারিদের গুদামে বাজি মজুত রয়েছে। আদালতের নির্দেশের প্রেক্ষিতে এই সব জায়গায় বাজির অস্থায়ী দোকান বসেনি। কিন্তু অল্প হলেও চোরাগোপ্তা বিক্রি চলছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। তবে পুলিশের ধারণা, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে অধিকাংশ মানুষই এ বার বাজির প্রতি বিরূপ। ফলে, বাজি কোনও ভাবেই উৎপাতের পর্যায়ে পৌঁছবে না। বাজি পোড়ানোর অভিযোগ পেলেই আইনানুগ কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাওড়ার বাগনান, জগৎবল্লভপুর-সহ বিভিন্ন থানা এলাকায় পুলিশের তরফে ব্যবসায়ী সমিতিগুলিকে বলে দেওয়া হয়েছিল, কেউ যেন বাজি মজুত না করেন। বাজি বেচলেই গ্রেফতার করা হবে বলে মাইকে জানানো হয়। জগৎবল্লভপুরে বিভিন্ন পঞ্চায়তের তরফেও বাজি না পোড়ানোর আবেদন জানানো হয়। পুলিশের দাবি, বাজির বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলেছে। তবে, দু’একটি ক্ষেত্র ছাড়া তেমন বড় মাপের বাজি মজুতদারি দেখা যায়নি।

বাজি পোড়ানো বন্ধে আদালতের নির্দেশ কঠোর ভাবে কার্যকর করার দাবিতে বিভিন্ন সংগঠনের আন্দোলন চলছে। শুক্রবার ওই আর্জিতে উলুবেড়িয়া, শ্যামপুর, বাগনানে পদযাত্রা করে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। একটি সংগঠনের তরফে জয়িতা কুণ্ডু কুঁতি বলেন, ‘‘বাজি পোড়ানোর খবর পেলে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং পুলিশকে জানাব।’’ বিকেলে হুগলির জাঙ্গিপাড়ায় একাধিক ক্লাব-সংগঠনের উদ্যোগে মিছিলে শামিল হন বহু মানুষ।

অন্য বিষয়গুলি:

cracker Kali Puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE