সভা: প্রার্থী নিয়ে আলোচনা। নিজস্ব চিত্র
হঠাৎ দেখলে মনে হবে বুঝি কোনও রাজনৈতিক সভা!
মাঠে মঞ্চে হাজির শাসকদলের নেতারা। উড়ছে দলীয় পতাকা। দর্শকাসনে কয়েকশো মানুষ। একটু পরেই অবশ্য ভুল ভাঙল।
মঞ্চ থেকে উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক তথা গ্রামীণ জেলা তৃণমূল সভাপতি পুলক রায়ের প্রশ্ন, ‘‘প্রার্থী হিসাবে কাকে চান?’’
দর্শকদের উত্তর— ‘‘আকবর শেখকে।’’
ফের পুলকবাবুর প্রশ্ন, ‘‘আর কাউকে কেউ প্রার্থী হিসাবে চান?’’
দর্শক চুপ।
দেওয়াল লিখনের কাজ আগেই শুরু হয়েছে। এ বার উলুবেড়িয়ায় পুরভোটের প্রার্থী বাছাইয়ের কাজও শুরু করে দিল তৃণমূল। নজিরবিহীন ভাবে এ বারই প্রথম প্রকাশ্যে কর্মিসভা ও সাধারণ মানুষকে ডেকে তাঁদের কাছ থেকে মতামত নেওয়া শুরু হল। রবিবার সেই ছবিই দেখা গেল উলুবেড়িয়ার ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের ফতেপুর প্রাথমিক স্কুলের মাঠে। ওয়ার্ডটি তৃণমূলের দখলেই রয়েছে। ওয়ার্ডের অধীনে আছে ৬টি বুথ। প্রার্থী নির্বাচনের জন্য এ দিন প্রকাশ্য সভায় ৬টি বুথেরই দলীয় কর্মী এবং সাধারণ মানুষকে ডাকা হয়। প্রায় ৭০০ জন হাজির হন বলে তৃণমূলের দাবি।
মঞ্চে নেতাদের মধ্যে পুলকবাবু ছাড়াও ছিলেন বিদায়ী পুরসভার চেয়ারম্যান অভয় দাস, উলুবেড়িয়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সভাপতি বেণুকুমার সেন প্রমুখ। ছিলেন ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা তথা চেয়ারম্যান পারিষদ (জল) আকবর শেখও। তিনি প্রশ্নোত্তর শুনে কোনও মন্তব্য করেননি। পরে বলেন, ‘‘কর্মীরা ফের আমার উপরে বিশ্বাস রেখেছেন। আমি খুশি। তবে এ নিয়ে যা বলার দল বলবে।’’ পুলকবাবু কর্মীদের বলেন, ‘‘আকবরের নাম আমরা দলের রাজ্য কমিটির কাছে পাঠাব। সেখান থেকে সবুজ সঙ্কেত এলে তবেই দেওয়ালে প্রার্থীর নাম লিখবেন আপনারা। তার আগে প্রার্থীর নাম ফাঁকা রেখে দেওয়াল লিখনের কাজ চালিয়ে যান।’’ পুলকবাবু আরও জানান, পুরসভায় মোট ৩২টি ওয়ার্ডেই প্রকাশ্য সভার মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই হবে। প্রাথমিক ভাবে যে নামগুলি উঠে আসবে, সেগুলি পাঠানো হবে দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। সেখান থেকে সিলমোহর পড়লে তবেই তালিকা চূড়ান্ত বলে ধরা হবে।
এতদিন তৃণমূলের প্রার্থী বাছাই হত ঘরে বসে। নেতারা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে সেই কাজ করতেন। এ বার কর্মীদের গুরুত্ব দেওয়া হল। এর পিছনে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের ভূমিকাই দেখছেন তৃণমূলের অনেক নেতাকর্মী। দলেরই একটি সূত্র মানছে, প্রশান্ত কিশোরের টিম উলুবেড়িয়াতে কাজ শুরু করে দিয়েছে। কোন কাউন্সিলর বিদায়ী বোর্ডে ভাল কাজ করেছেন, সে বিষয়ে ওই টিম আলাদা ভাবে সমীক্ষা করছে। দলের কর্মী এবং নেতৃত্বের সঙ্গেও তারা কথা বলছে। প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার সময়ে ওই টিমের পরামর্শকেও দলের পক্ষ থেকে মান্যতা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন গ্রামীণ জেলা তৃণমূল নেতাদের একটা বড় অংশ। কে প্রার্থী হবেন সে বিষয়ে প্রশান্ত কিশোরের টিমের পরামর্শ এবং দলের সুপারিশের মধ্যে যাতে বড় কোনও ফারাক না-থাকে, সে জন্যই প্রকাশ্য সভা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এক তৃণমূল নেতা।
এই সভা নিয়ে বিরোধীরা অবশ্য খোঁচা দিতে ছাড়ছে না। তাঁদের প্রশ্ন, এমন সভায় সমবেত ভাবে যে নাম প্রস্তাব করা হবে, তার বিরুদ্ধে গিয়ে কোনও সাধারণ মানুষ কি অন্য কারও নাম নির্ভয়ে প্রস্তাব করতে পারবেন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy