—ফাইল চিত্র।
‘যুদ্ধের’ প্রহর ঘোষণা সময়ের অপেক্ষা মাত্র। তার পরেই তীব্র হবে ‘দামামা’-র আওয়াজ! তাতে ‘ছারখার’ হবে পরিবেশ, আশঙ্কা এমনটাই। সেই কারণে আগেভাগেই যুযুধান বিভিন্ন পক্ষকে সাবধান করতে চাইছেন পরিবেশকর্মীরা। নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন তাঁরা।
‘যুদ্ধ’ অর্থাৎ পুরভোটের ময়দানে পরিবেশ যাতে রক্ষা পায়, সেই জন্য সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি দিয়েছে চন্দননগরের একটি পরিবেশ সংস্থা। পরিবেশ অ্যাকাডেমি নামে ওই সংগঠনের সদস্যদের অভিযোগ, ভোটের মরসুমে পরিবেশ সংক্রান্ত বিধিনিষেধের তোয়াক্কা করে না রাজনৈতিক দলগুলি। মানুষ এবং পরিবেশের অসুবিধার কথা না ভেবেই দিনভর উচ্চগ্রামে মাইক্রোফোন বাজানো হয়। তাতে শব্দবিধি ভেঙে খানখান হয়ে যায়। তাঁদের খেদ, এখন পরীক্ষার মরসুম চলছে। মাইক বাজানোর ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ রয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলি আইনের ফাঁক দিয়ে সেই নির্দেশ অগ্রাহ্য করছে।
সংগঠনের সদস্যদের অভিযোগ, সম্প্রতি কলকাতায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় মাইক বাজানো হয়। ওই জায়গায় বসতি বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই, এই কথা বলে মাইক বাজানোকে যুক্তিগ্রাহ্য করে তুলতে চাইছে বিজেপি। আবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা ঘিরেও একই প্রশ্ন উঠছে। এ ক্ষেত্রে তৃণমূলের যুক্তি, যে জায়গায় মাইক বেজেছে, কারও সমস্যা হয়নি। পরিবেশকর্মীদের আশঙ্কা, পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে মাইকের জন্য পরিবেশ এবং মানুষকে অতিষ্ঠ হতে হবে।
সংগঠনের কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় জানান, রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে পাঠানো চিঠিতে আবেদন জানানো হয়েছে, প্রচারের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলি মাইক্রোফোন বা লাউডস্পিকার ব্যবহার করলেও তা যাতে আইনে নির্দিষ্ট শব্দসীমা অতিক্রম না করে, তা নিশ্চিত করা হোক। এর পাশাপাশি, প্রত্যেক দলকে গ্রিন জেনারেটর ব্যবহার করতে বলা হোক।
প্রচারের ক্ষেত্রে পরিবেশ-শত্রু সামগ্রীর ব্যবহারেও পরিবেশকর্মীরা চিন্তিত। তাঁদের অভিযোগ, প্রচারে প্লাস্টিক বা ফ্লেক্সজাতীয় বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করা হয়। যত্রযত্র তা পড়েও থাকে। ফলে, পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়। নির্বাচন কমিশনের কাছে তাঁদের আর্জি, ফেস্টুন, ব্যানারের ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের পরিবর্তে জৈব-সামগ্রী ব্যবহারে জোর দেওয়া হোক। বিশ্বজিৎবাবুর কথায়, ‘‘প্লাস্টিক পরিবেশের পক্ষে গুরুতর সমস্যা। পরিবেশকে বাঁচানোর দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলি এড়াতে পারে না। বরং তারা সচেতন হলে সাধারণ মানুষকে বোঝানোর কাজও সহজ হয়।’’ চিঠির প্রতিলিপি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকেও পাঠানো হয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলি কী বলছে?
হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘প্রচার সামগ্রীর ব্যবহারের প্রভাব পরিবেশের উপরে যাতে না পড়ে, সেই চেষ্টা নিশ্চয়ই করব। যতটা পারা যায়, এটা করা হবে।’’ বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামল বসুর বক্তব্য, ‘‘এটা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর জিনিসের ব্যবহার কমিশন কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ করুক। সব দলকেই এটা মানতে হবে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তীর্থঙ্কর রায়ের কথায়, ‘‘পুর-নির্বাচনে বাড়ি বাড়ি যাওয়া এবং পাড়া বৈঠকের উপরেই আমরা জোর দেব। দু’-একটা ছোট সভা হলেও নিয়ন্ত্রিত ভাবে মাইক বাজানো হবে। পরিবেশ দূষণ এবং মানুষের অসুবিধা যাতে না হয়, সেই ব্যাপারে যতটা সম্ভব আমরা
সচেতন থাকব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy