চণ্ডীতলায় পানীয় জল এবং ঠাণ্ডা পানীয় তৈরির কারখানার সামনে শ্রমিকদের বিক্ষোভ। সোমবার। ছবি: দীপঙ্কর দে
লকডাউনের শুরুতে সেই যে কারখানা বন্ধ হয়, এখনও খোলেনি। ওই পর্বের বেতনও মেলেনি। এই পরিস্থিতিতে সোমবার চণ্ডীতলার কাপাসহাড়িয়ায় পানীয় জল এবং ঠান্ডা পানীয় তৈরির একটি কারখানার গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন শ্রমিকেরা। অবিলম্বে উৎপাদন চালু এবং লকডাউন পর্বের বেতনের দাবি তুলেছেন তাঁরা।
দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে ওই কারখানাটি চালু হয় বছর চারেক আগে। জনা পঁচিশ শ্রমিক রয়েছেন। তাঁরা জানান, মার্চের শেষে লকডাউনের শুরুতেই উৎপাদন বন্ধ হয়। তবে, দেরিতে হলেও ওই মাসের বেতন মিলেছিল। কিন্তু এপ্রিলের বেতন মেলেনি। মে মাসের বেতনও দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে।
এ নিয়ে শ্রমিকদের ক্ষোভ ছিলই। এখন কারখানা খোলায় বাধা না থাকলেও উৎপাদন চালু না-হওয়ায় ক্ষোভ বাড়তে থাকে। সোমবার শ্রমিকদের একাংশ কারখানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। শ্রমিকদের অভিযোগ, উৎপাদন চালু না-হলেও কারখানায় মজুত উৎপাদিত সামগ্রী বের করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ দিন ওই সামগ্রী বের করতে কারখানায় গাড়ি ঢোকানো হচ্ছিল। বিক্ষোভকারীরা গাড়ি ভিতরে ঢুকতে দেননি। কারখানার এক আধিকারিকের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কিছু বলতে চাননি।
শ্রমিকদের দাবি, রোজগার না-থাকায় তাঁরা বিপাকে পড়েছেন। এমনিতেই সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম বেতনের থেকে কম টাকা মেলে। এই পরিস্থিতিতেও লকডাউন-পর্বে মালিকপক্ষ তাঁদের পাশে দাঁড়াননি।
শ্যামসুন্দর পাত্র নামে এক শ্রমিক জানান, বাবা-মা, স্ত্রী-ছেলে, ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী এবং ভাইপোকে নিয়ে তাঁর সংসার। বাবা হৃদরোগী। ওষুধের উপরে নির্ভরশীল। শ্যামসুন্দর বলেন, ‘‘কারখানা থেকে দু’মাসে কিছুই পাইনি। ভাই কলকাতায় সোনা-রুপোর কাজ করে। ওর কাজও বন্ধ। বাধ্য হয়ে ১০০ দিনের কাজ করছিলাম। আমপানের পরে সেই কাজও পাইনি। রেশনে বিনামূল্যে চাল পাচ্ছি বলে বাঁচোয়া। না হলে হয়তো না-খেতে পেয়ে মরতে হত।’’
শ্যামসুন্দরের সহকর্মী হিরালাল পোড়েলও সংসার টানতে পুকুর কাটছেন ১০০ দিনের শ্রমিক হিসেবে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সব কারখানা খুলছে, আমাদেরটা কেন খুলছে না, বুঝতে পারছি না।’’ কারখানার আইএনটিটিইউসি সভাপতি অন্বয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। ওঁরা জানিয়েছেন, উৎপাদন বন্ধ থাকায় লোকসানের কারণে এপ্রিল-মে মাসের বেতন দিতে পারবেন না। শ্রমিকদের কথা ওঁরা ভাবছেন না। অবিলম্বে উৎপাদন চালু করা হোক। ওই দুই মাসের টাকাও দেওয়া হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy