Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
চার শহরে নজর হিলিয়াম বেলুনেও
West Bengal Lockdown

ডানকুনি-শ্রীরামপুরে বাড়িতে আনাজ

‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ হিসেবে চিহ্নিত হুগলির চার পুর এলাকায় নজরদারিতে ওড়ানো হচ্ছে চারটি হিলিয়াম বেলুনও।

এই ধরনের বেলুন উড়িয়েই চলবে নজরদারি। —নিজস্ব চিত্র

এই ধরনের বেলুন উড়িয়েই চলবে নজরদারি। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২০ ০৩:২৩
Share: Save:

আগেই উড়েছে ড্রোন। এ বার ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ হিসেবে চিহ্নিত হুগলির চার পুর এলাকায় নজরদারিতে ওড়ানো হচ্ছে চারটি হিলিয়াম বেলুনও।

আজ, শুক্রবার থেকে শ্রীরামপুর, ডানকুনি, উত্তরপাড়া এবং হুগলি-চুঁচুড়ায় ওই বেলুনের মাধ্যমে প্রযুক্তির সাহায্যে নজরদারি চালানো শুরু হচ্ছে। জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও জানিয়েছেন, হিলিয়াম হালকা গ্যাস। এই বেলুন দিন-রাত অনেকটা উঁচুতে উড়ে থাকবে। বেলুনে ক্যামেরা লাগানো থাকবে। তাতে ইন্টারনেট সংযোগ করা থাকবে। এর মাধ্যমে চার-পাঁচ কিলোমিটার এলাকার ছবি পরিষ্কার পাওয়া যাবে। কেউ বিনা কারণে বেরোলে বা কোথাও আড্ডা জমলে ছবি দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ড্রোনের মতো এতে কিছু সময় পরে ব্যাটারি বদল করার প্রয়োজন হবে না।

ডানকুনি থেকে চুঁচুড়া পর্যন্ত হুগলির ১০টি পুর এলাকাকে ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে জেলা প্রশাসন। এ ছাড়া রয়েছে আরও ১১টি পঞ্চায়েত। এর মধ্যে বাড়তি সতর্কতা জারি হয়েছে শ্রীরামপুর এবং ডানকুনিতে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে প্রশাসনের নির্দেশে বৃহস্পতিবার থেকেই শ্রীরামপুরের ১৭টি (৪ থেকে ৬ এবং ১৩ থেকে ২৬ নম্বর) এবং ডানকুনি শহরের ৬টি (১০ থেকে ১৬ নম্বর) ওয়ার্ডে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শ্রীরামপুরের ওই চৌহদ্দির মধ্যে থাকা চারটি বাজার (মাহেশ বাজার, মানিকতলা বাজার, পাঁচুবাবুর বাজার, বেল্টিং বাজার) বন্ধ করা হয়েছে। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের টিনবাজারও বন্ধ রাখা হয়্ছে। রাস্তার ধারে আনাজ বা মাছের অস্থায়ী কিছু দোকান বসলেও পুলিশ তুলে দেয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় মাংসের দোকান।

নির্দিষ্ট এলাকার অনেক জায়গাতেই এ দিন আনাজ এবং মাছের ভ্যান ঘুরেছে। তবে সর্বত্র তা পৌঁছয়নি। শ্রীরামপুরের পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখানে কাউন্সিলররা নির্দিষ্ট সংখ্যক যুবকের তালিকা তৈরি করছেন। একমাত্র তাঁরাই ভ্যানে আনাজ বা মাছ নিয়ে ঘুরবেন। তবে নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে যেতে পারবেন না।’’ পুর-কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসনের আধিকারিকরা মানছেন, প্রথম দিন‌ পরিকল্পনামাফিক সব ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আশা করছি, দু’এখ দিনের মধ্যেই সুষ্ঠু ভাবে সবটা করা যাবে।’’ শ্রীরামপুরের অন্য এলাকাতেও ধীরে ধীরে এই পদ্ধতি কার্যকর করা হতে পারে বলে তিনি জানান।

ডানকুনিতে সবচেয়ে বেশি কড়াকড়ি করা হয়েছে ১১ নম্বর ওয়ার্ডের হিমনগর এলাকায়। এখানে এ দিন সকালে ভ্যানে করে আনাজ যায়। মুদি দোকানে আসার জন্য মানুষকে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কারও ওষুধ প্রয়োজন হলে সিভিক ভলান্টিয়াররা এনে দিয়েছেন। অকারণে কেউ যাতে ঘোরাঘুরি করতে না পারেন, সে জন্য এলাকায় পুলিশ চক্কর কেটেছে। ডানকুনির উপ-পুরপ্রধান দেবাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মানুষ যাতে একেবারেই না বের হন, সেই ব্যাপারে প্রচারে জোর দেওয়া হয়েছে। কারও চিন্তার কারণ নেই। বাজার না খুললে প্রয়োজনীয় জিনিস ঘরের সামনে পৌঁছে যাবে। কেউ যে কোনও প্রয়োজনে পুরসভার হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করতে পারেন।’’ জেলা পরিষদের সদস্য সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রশাসনের নির্দেশ অনুযায়ী সব ব্যবস্থা হচ্ছে। ঘরে থাকলেই মানুষ বিপন্মুক্ত থাকবেন, এটা সবাইকে বুঝতে হবে। ভাইরাসকে হারানোর এটাই একমাত্র রাস্তা।’’

জেলাশাসক জানিয়েছেন, শ্রীরামপুর এবং ডানকুনির কিছু জায়গায় ‘হোম ডেলিভারি’ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এক-দু’দিনের মধ্যে এই ব্যবস্থা আরও মসৃণ হয়ে যাবে। মানুষ ঘরে বসেই প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাবেন। প্রশাসন ফের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে, লকডাউন ভাঙলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিভিন্ন জায়গায় সিসিক্যামেরায় নজরদারি শুরু হয়েছে চুঁচুড়ার প্রশাসনিক ভবন থেকে।

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Lockdown Gas Baloon
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE