জলভাসি: নর্দমার নোংরা জল ঢুকেছে ঘরেও। বৃহস্পতিবার, হাওড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
গত কয়েক বছর ধরে নর্দমার আবর্জনাই তোলা হয়নি! ফলে আট ফুট গভীর নিকাশির প্রায় সাত ফুট পর্যন্ত জমে রয়েছে সে সবই। যার জেরে দিন কয়েক আগের সামান্য বৃষ্টিতে নিকাশিনালা ছাপিয়ে পচা জলে ভাসছে হাওড়া পুরসভার পাশাপাশি দু’টি ওয়ার্ডের অলিগলি। এমনই অভিযোগ জানাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা।
এমনকি বেশ কিছু বাড়ির ভিতরে জমে রয়েছে সেই পচা-কালো জল। সে সব মাড়িয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে বাসিন্দা, স্কুলপড়ুয়া থেকে অফিসযাত্রী সকলকে। আন্ত্রিক ও চর্মরোগ হওয়ার আতঙ্কে দ্রুত হস্তক্ষেপ চেয়ে সম্প্রতি বাসিন্দারা গণস্বাক্ষর করা স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন পুরসভায়। কিন্তু পুরসভা তবুও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলেই অভিযোগ।
মেয়াদ উত্তীর্ণ হাওড়া পুরসভায় নির্বাচন না হওয়ায় ১১ ডিসেম্বর থেকে প্রথমে পুর কমিশনারকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করে রাজ্য সরকার। কিন্তু পরিষেবায় প্রচুর গাফিলতির অভিযোগ ওঠায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে চলতি মার্চ থেকে ছ’সদস্যের
পরিচালকমণ্ডলীকে পুর পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরই মধ্যে গত সোম-মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত হওয়া বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড। অধিকাংশ ওয়ার্ডের জল নেমে গেলেও বালিটিকুরি এলাকার ৪৯ ও ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন পল্লি-সিটিআই মোড় এলাকা থেকে তা নামেনি। বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, তিন দিন ধরে নর্দমা উপচে ওঠা জমা জলের মধ্যেই চলছে বাসিন্দাদের
শোচনীয় জীবনযাত্রা।
ঘনবসতিপূর্ণ ওই এলাকার উপর দিয়ে গিয়েছে আট ফুট গভীর, দশ ফুট চওড়া এবং প্রায় সাত কিলোমিটার নিকাশিনালা। ৯, ২২, ৪৯ এবং ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের সব নিকাশির জল যায় সেখান দিয়েই। দাশনগর রেলব্রিজের পাশের ঝিল থেকে শুরু করে নিকাশিনালাটি মিশেছে হাওড়ার মূল নিকাশি, পচাখালের সঙ্গে। ওই খাল মিশেছে নাজিরগঞ্জের কাছে গঙ্গায়। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, রেলব্রিজের পাশের ঝিলের ওই নালা থেকে বছরের পর বছর পলি না তোলায় নাব্যতা কমে গিয়েছে। আট ফুট গভীরতা এখন মেরেকেটে ঠেকেছে সাত ফুটে। ফলে চারটি ওয়ার্ডের জলধারণ ক্ষমতা হারিয়ে সামান্য বৃষ্টিতে নিকাশিনালা উপচিয়ে ভাসছে আশপাশ।
বাসিন্দা গায়ত্রী হাজরার অভিযোগ, ‘‘দিনের পর দিন পচা জলে বাস করছি। মশার প্রকোপও বাড়ছে উত্তরোত্তর। বহুদিন পুরসভার সাফাই দফতরের লোকেদের এলাকায় দেখাই যায়নি! এখনই যদি এই অবস্থা হয়, বর্ষায় কী হবে!’’ এলাকার বাসিন্দা শ্রীমন্ত আদক বলেন, ‘‘দু’বছর আগেও এলাকার পরিস্থিতি এত খারাপ ছিল না। পুরসভা কোনও কাজ না করায় এই অবস্থা হয়েছে। পুলিশ, পুরসভা সবাইকে চিঠি দিয়ে এই দুরবস্থার কথা জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।’’
হাওড়ার পুর কমিশনার তথা প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘অভিযোগ পাওয়ার পরে এলাকায় নিকাশি সংস্কার করিয়েছি। আসলে নিকাশিটি অনেক বড়, তাই সময় লাগবে। বাসিন্দারা যাতে আবর্জনা ফেলতে না পারেন, তাই ওই নিকাশিনালার উপরে তারের জাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy