চিকিৎসা চলছে বোমায় জখমদের। —নিজস্ব িচত্র
রাজনৈতিক ভাবে আরামবাগ মহকুমায় চারটি থানা এলাকা বছরভরই উত্তেজনাপ্রবণ। আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে এমনিতেই নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ আছে স্থানীয় মানুষের। রাজনৈতিক দলগুলির মদতেই বিপুল অস্ত্র আসে, এ অভিযোগও কম নয়। বুধবার রাতে খানাকুলের হায়াৎপুরে বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণে দুই তৃণমূল কর্মী জখম হওয়ায় সেই অভিযোগই আরও জোরালো হল। ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক শিবির।
আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, ওই ঘটনায় জখম তৃণমূল কর্মী রূপকুমার মণ্ডল বলেছে, ‘‘বিজেপির ছেলেরা আমাদের উপর প্রায়ই হামলা করছিল। তাদের রুখতেই আমাদের দলের তরফে বোমা বাঁধা হচ্ছিল। আমরা চার জন ছিলাম। বোমা বাঁধা শেখাতে একজনকে পাঠিয়েছিলেন আমাদের অঞ্চল নেতা সুভাষ মণ্ডল। কিছু ভুলভ্রান্তি হয়ে ফেটে আমাদেরই বিপদ হয়েছে।’’ একই কথা বলেছে আর এক আহত গোপাল পোল্লে। সে-ও ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে, বোমা বাঁধা শেখাতে যে এসেছিল তার নাম বলতে পারেনি আহতরা।
সুভাষ মণ্ডল গোটা ঘটনা বা বোমা বাঁধার প্রশিক্ষণ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। দলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, “বিষয়টা শুনেছি। ঠিক কী ঘটেছে, কারা ছিল, খোঁজ নিয়ে দেখছি।” এসডিপিও (আরামবাগ) নির্মলকুমার দাস বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আহত ওই দু’জন ছাড়াও এক জনকে (হারু হাজরা) গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ আর এক পুলিশকর্তার দাবি, ‘‘বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারে ধারাবাহিক ভাবেই অভিযান চলে। তা আরও জোরদার করা হচ্ছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে বোমা বাঁধার প্রশিক্ষণ হচ্ছিল গ্রামেরই তপন মণ্ডল নামে একজনের ফাঁকা বাড়িতে। সব মিলিয়ে পাঁচ জন ছিল। সাড়ে ৭টা নাগাদ বিকট আওয়াজ পান গ্রামবাসী। কিছু বিজেপি কর্মী-সমর্থক ওই অবস্থায় রূপকুমার এবং গোপালকে মারধরও করে বলে অভিযোগ। লাঠির ঘায়ে রূপকুমারের মাথা ফাটে। গোলমালের মধ্যে ঘর থেকে দু’জন পালায়। পরে মোট তিন জনকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আহতদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশই।
গ্রামবাসীদের পক্ষে গৌতম অধিকারী বলেন, “এ সব অসামাজিক কাজকর্ম বন্ধ করে গ্রামে যাতে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকে, সেই ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছি পুলিশের কাছে।” রমেন দাস নামে এক গ্রামবাসীর অভিযোগ, “বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার এবং গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা অপরাধীদের ধরার বিষয়ে প্রশাসন উদাসীন থাকায় এই অবস্থা।”
বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারের ক্ষেত্রে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করেছে বিরোধীরা। খানাকুলের জোনাল সিপিএম নেতা ভজহরি ভুঁইয়ার অভিযোগ, “বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রে মজুত নিয়ে আমরা একাধিকবার স্মারকলিপি দিয়েছি। পুলিশ কার্যকর কোনও তল্লাশি প্রক্রিয়াই চালায়নি।” বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষের কটাক্ষ, “মহকুমা জুড়ে তৃণমূলের দেদার বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র মজুত আছে। পুলিশের জ্ঞাতসরেই আছে। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করছে না। সামনে পুরভোট। সেই নির্বাচনকে প্রভাবিত করতেই এই চক্রান্ত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy