Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
paddy

দাম মিললেও ধান জমছে ঘরে

রাজ্যের অন্যতম ধান উৎপাদক জেলা হুগলি। এ বার বাজারের চেয়ে সরকারি শিবিরে ধান বিক্রি করলে বেশি লাভ মিলছে।

বেচা কেনা: চণ্ডীতলায় সহায়ক মূল্যে ধান কেনা হচ্ছে। —ছবি: দীপঙ্কর দে।

বেচা কেনা: চণ্ডীতলায় সহায়ক মূল্যে ধান কেনা হচ্ছে। —ছবি: দীপঙ্কর দে।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় ও পীযূষ নন্দী 
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:২০
Share: Save:

এ বার ১৮ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলেন চাঁপাডাঙার নস্করপুরের লক্ষ্মণ দাস। এখনও পর্যন্ত সরকারি শিবিরে মাত্র ৭০ বস্তা ধান বিক্রি করতে পেরেছেন। বাড়িতে এখনও ৯০ বস্তা ধান পড়ে রয়েছে। তারকেশ্বরের কেশবচকের বাসিন্দা প্রাতাপ পাড়ুইয়েরও একই অবস্থা। চার বিঘা জমিতে মোট ৫৫ বস্তা ধান ফলিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত স্থানীয় কৃষি সমবায়ের উদ্যোগে ধান ক্রয় কেন্দ্রে ২৫ বস্তা ধান বিক্রি করেছেন। তাঁর অভিযোগ, সরকার নির্দিষ্ট পরিবহণ খরচ পাননি। পড়ে থাকা বাকি ধান কবে বিক্রি হবে তারও নিশ্চয়তা নেই।

প্রায় একই রকম ক্ষোভ শোনা যাচ্ছে হুগলির আরও কিছু এলাকা থেকে। রাজ্যের অন্যতম ধান উৎপাদক জেলা হুগলি। এ বার বাজারের চেয়ে সরকারি শিবিরে ধান বিক্রি করলে বেশি লাভ মিলছে। ফলে, শিবিরগুলিতে রোজই ভিড় জমছে।

তা হলে চাষিদের ঘরে ধান জমে থাকছে কেন? চাষিদের অনেকেরই অভিযোগ, শিবিরগুলিতে প্রতিদিন গড়ে ৭০-১০০ জন চাষির ধান নেওয়া হচ্ছে। তা-ও পুরোটা নয়। ৪৫ কুইন্টাল করে। ধানের গুণমান পরীক্ষা, ওজন ইত্যাদি যাবতীয় প্রক্রিয়া সারতে দেরি হচ্ছে। বাকি চাষিদের কুপন দিয়ে পরবর্তী তারিখ দেওয়া হচ্ছে।

এ নিয়ে জেলা খাদ্য নিয়ামক অসীমকুমার নন্দী বলেন, “হুগলিতে ২৫টি ক্রয়কেন্দ্র (সিপিসি) ছাড়াও ডিপিসি (ডাইরেক্ট পারচেজ সেন্টার), সঙ্ঘ, কৃষি সমবায়, এফপি ও থেকেও ধান কেনা চলছে। এ ছাড়াও, চাষিদের চাহিদা অনুযায়ী যেখানে প্রয়োজন হবে সেখানে আরও ডিপিসি খোলা হবে। ধান নিচ্ছে জেলার মোট ৭৫টি চালকল।”এ বারও শিবিরে বাড়তি ধান বাদ দেওযার অভিযোগ উঠছে। তার ফলেও, অনেক চাষি উৎসাহ হারাচ্ছেন। চাঁপাডাঙার লক্ষ্মণবাবুরই অভিযোগ, ‘‘এখানে তেঘোরি এলাকায় সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে ধান বিক্রি করতে গিয়ে দেখি, সরকারি কর্তারা বলছেন, প্রতি কুইন্টালে সাড়ে আট কেজি ধান বাদ যাবে। আমার ধানের মান খুব ভাল ছিল। আমি আপত্তি জানাই। অনেক অনুরোধে ওঁরা আমার ধান কেনে। কিন্তু কুইন্টালে সাড়ে সাত কেজি করে ধান বাদ দেন। সরকারি অফিসাররা বলেছেন, পরে ফের ক্যাম্প হবে গ্রামে।’’ কেশবচকের চাষি প্রতাপবাবুও ধান বাদ দেওযার অভিযোগ তুলেছেন।

অসীমবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, বাড়তি ধান বাদ দেওয়া নিয়ে তাঁরা কোনও অভিযোগ পাননি। আরামবাগ চালকল মালিক সংগঠনের সভাপতি সুনীলকুমার ঘোষ বলেন, “আমাদের চালকলগুলি রোজ ৪০ জন চাষির ধান নিতে পারলে কাজটা ভাল হয়। সে জায়গায় রাত ৯টা পর্যন্ত ৭০ থেকে ১০০ জন চাষির নিতে হচ্ছে। এটা আরও কমানো যায় কিনা জেলা খাদ্য দফতরের সঙ্গে আমরা কথা বলছি। অনেক চাষির ধান খারাপ থাকছে। তাই এক কু্ইটাল ধান থেকে যতটা চাল পাওয়ার কথা, তা মিলছে না। তাই বাদ দিতে হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

paddy MSP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy