Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
উদ্ধার সেভেন এমএম

চুঁচুড়ায় দুষ্কৃতী খুনে ধৃত তৃণমূল নেতার ছায়াসঙ্গী

পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত অপরাধের কথা কবুল করেছে। তার কাছ থেকে যে আগ্নেয়াস্ত্রটি মিলেছে, সেটা দিয়েই সে খুন করেছে, এ কথাও জানিয়েছে।

উদ্ধার হওয়া অস্ত্র ও ধৃত সম্রাট ঘোষ (ইনসেটে)। নিজস্ব চিত্র

উদ্ধার হওয়া অস্ত্র ও ধৃত সম্রাট ঘোষ (ইনসেটে)। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৯ ০১:৫৮
Share: Save:

তিন দিন আগে চুঁচুড়ার বড়বাজারে খুন হয়েছিল প্রবীর হেলা ওরফে হাতকাটা মুন্না নামে এক দুষ্কৃতী। সেই খুনে জড়িত অভিযোগে বুধবার এক জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তার কাছ থেকে একটি সেভেন এমএম পিস্তল এবং এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়েছে বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন। ধৃত সম্রাট ঘোষ ওরফে খ্যাঁক নামে ওই দুষ্কৃতী স্থানীয় তৃণমূল নেতা বিজয় কাহারের ছায়াসঙ্গী বলে পরিচিত। সম্রাটের বাড়ি চুঁচুড়ার প্রতাপপুরে।

পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত অপরাধের কথা কবুল করেছে। তার কাছ থেকে যে আগ্নেয়াস্ত্রটি মিলেছে, সেটা দিয়েই সে খুন করেছে, এ কথাও জানিয়েছে। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, ‘‘ধৃতকে জেরা করে ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে। সে কোথা থেকে অস্ত্র পেল, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

গত শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ বড়বাজারে একটি ক্লাবের সামনে গুলিতে খুন হয় হাতকাটা মুন্না। ওই রাতে মুন্নার সঙ্গে তৃণমূল নেতা তথা ওই ক্লাবের কর্মকর্তা বিজয় কাহারের বচসা হচ্ছিল। তার মধ্যেই দুই দুষ্কৃতী মোটরবাইকে চেপে এসে মুন্নাকে গুলি করে খুন করে। এরপরে আতঙ্ক ছড়াতে শূন্যে গুলি চালিয়ে তারা পালায় বলে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর।

শহরের অভিজাত এলাকায় এবং চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট দফতরের কাছেই ওই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায়। পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সাধারণ মানুষ। তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে কোনও তেমন সূত্র পায়নি। তারা জানতে পারে, এক সময়ে দুষ্কৃতী হিসেবে পরিচিতি থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে মুন্না বাড়ির বাইরে বিশেষ বেরোত না। সে ক্ষেত্রে বিজয়ের সঙ্গে ঝগড়ার মাঝেই কেন মুন্নাকে হামলার শিকার হতে হল, তা তদন্তকারীদের ভাবায়। তদন্তে খ্যাঁকের নাম সামনে আসে। মঙ্গলবার পুলিশ বিজয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে। বুধবার শহরের ময়ুরপঙ্খী ঘাটের কাছ থেকে বছর চব্বিশের খ্যাঁককে সশস্ত্র অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়।

কিন্তু কেন খুন?

পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত জানিয়েছে, বিজয়কে মুন্না হেনস্থা করছে, এই খবর পেয়েই সে মোটরবাইক নিয়ে ক্লাবের সামনে আসে। প্রথমে শূন্যে একটি গুলি ছোড়ে। তার পরে মুন্নাকে লক্ষ্য করে দু’টি গুলি চালায়। রক্তাক্ত অবস্থায় মুন্না লুটিয়ে পড়তে ফের একটি গুলি চালিয়ে সে চম্পট দেয়। রাতেই গঙ্গা পেরিয়ে নৈহাটিতে আত্মীয়ের বাড়িতে গা ঢাকা দেয়। মঙ্গলবার চুঁচুড়ায় ফেরে। ধৃত খ্যাঁক বলে, ‘‘মুন্না দাদাকে (বিজয় কাহার) হেনস্থা করছিল। বারণ করা সত্ত্বেও শোনেনি। তাতেই রাগ

হয়ে যায়।’’

ঘটনার পরে সংবাদমাধ্যমের কাছে বিজয় দাবি করেছিলেন, মুন্না তার কাছে আশ্রয় চাইতে এসেছিল। তিনি রাজি হননি। তখন মুন্না উত্তেজিত হয়ে তর্কাতর্কি শুরু করে দেয়। তার পরেই দুই দুষ্কৃতী মোটরবাইকে চেপে এসে মুন্নাকে গুলি করে। দুষ্কৃতীদের তিনি চিনতে পারেননি বলেও বিজয় দাবি করেন। এ দিন তাঁর ছায়াসঙ্গী খ্যাঁক গ্রেফতার হওয়ার পরে অবশ্য প্রভাবশালী এই তৃণমূল নেতা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘দোষী যে-ই হোক, পুলিশ আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নিক।’’

নিহতের স্ত্রী রিয়া স্বামীকে খুনে দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন। শহর জুড়ে দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্য বন্ধের দাবিতে এ দিন বিজেপির তরফে চুঁচুড়া থানার সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয়।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Police arrest Chinsurah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy